হজ্জ ও উমরায় মেয়েদের নিকাব ও হাত মোজা ব্যবহার প্রসংগে

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আমিনুল হক ২১ মে, ২০১৫, ১০:৩৮:২১ সকাল



হজ্জ ও উমরাহ করার সময় নারীরা নিকাব ও হাত মোজা ব্যবহার করবে কিনা এ নিয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি আছে। অনেকেই আমাকে অনুরোধ করেছেন, বিষয়টি একটু খোলাসা করে যেন লিখি।

فقد روى البخاري عن ابن عمر رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: لا تتنقب المرأة المحرمة، ولا تلبس القفازين

বুখারী শরীফে ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত হাদিস, "ইহরাম অবস্থায় নারীরা নিকাব বাধবে না এবং হাত মোজাও পড়বে না"।

এই হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, ইহরামরত অবস্থায় নারীদের নিষিদ্ধ কাজের মধ্যে নিকাব ও হাত মোজা পরিধান অন্যতম। কোনো কোনো মহিলা রাসুল স. এর এই আদেশ মানার জন্য একটু কৌশল অবলম্বন করেন, মাথার ওপর ক্যাপ জাতীয় পরিধান করেন (যে ক্যাপ সূর্য্যের আলো থেকে মুখমন্ডল সেভ করে) এরপর ঐ ক্যাপের সামনের বর্ধিত অংশের ওপর দিয়ে একটি আলাদা কাপড়/ওড়না মুখমন্ডলের সামনে ছেড়ে দেন।



এতে করে তাদের মতে, পর্দাও হলো এবং রাসূলের আদেশও মানা হলো। আমার কাছে বিষয়টি বনি ইসরাইলের রবিবার মাছ খাওয়ার মত মনে হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে শনিবার মাছ ধরে খেতে নিষেধ করেছিলেন। বনি ইসরাইলরা আল্লাহর এই আদেশ মানতে গিয়ে একটু কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। তা হলো, শনিবার যেহেতু আল্লাহ মাছ ধরতে নিষেধ করেছেন সেহেতু শনিবার নদীতে বাধ দিয়ে/ কিংবা অন্য কোনো উপায়ে মাছ আটক রেখে রবিবার তা ধরে খাওয়া। আল্লাহর কাছে বিষয়টি ভালো লাগেনি। এরপর তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ বানরে পরিণত করা হয়।

হ্জ্জ ও ওমরায় নিকাব ও হাত মোজা পরিধান সম্পর্কে সৌদি আরবের শেখ আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায র. এর ফতোয়া হলো, নারীরা ইহরামের নিয়ত করলে মুখমন্ডলে নিকাব পরিধান ও হাত মোজা পড়তে পারবে না। কারন আল্লাহর রাসুল নিষেধ করেছেন। তবে, মা আয়েশা রা. এর আমল থেকে প্রমানিত তিনি রাসূল স. এর সাথে বিদায় হজ্জ পালনের সময় তার কাছে আজনাবী পুরুষ আসলে মাথার ওপর দিয়ে ওড়না জাতীয় কিছু মুখের ওপর টেনে দিতেন। আবার আজনাবী পুরুষ দূরে গেলে তিনি আবার ওড়না সরিয়ে ফেলতেন। এই আমল মহিলারা করতে পারেন। তবে কোনো কিছুতেই বানানো নিকাব যা মহিলারা অন্য সময় পরিধান করেন তা ইহরাম অবস্থায় মুখমন্ডলে বাধা যাবে না। হাত মোজাও পরা যাবে না। তবে চাদরের মধ্যে হাত ঢুকে গেলে কোনো অসুবিধা নেই।

Click this link

শরীয়তের এই হুকুম নিয়ে অনেকেই মূর্খতার পরিচয় দেন। বেশী পর্দা করতে গিয়ে নিজের হজ্জ উমরা নষ্ট করেন। আমার কথা হচ্ছে, আল্লাহ ও তার রাসূল স. আমাদের যেভাবে বলেছেন সেভাবেই করতে হবে। আমাদের ওপর পোষাক ফরজ না করলে আমাদের পোষাক পরতে হতো না। কোনো বিষেশ সময়ে শরীয়তের কোনো আদেশ যদি লঘু করা হয় তাকে সাথে সাথে মেনে নেয়ার নাম হলো আনুগত্য। এখানে লাজ শরমের কিছু নেই।

রাসূল স. এর হাদিস এবং মা আয়েশা রা. এর আমল থেকে প্রমাণিত যে, মহিলারা ঘর থেকে অবশ্যই হাত মোজা ছাড়া এবং নিকাব পরিধান ছাড়া হজ্জ ও উমরার জন্য বের হন। নিকাব পড়ে মা আয়েশা রা. হজ্জ করতে বের হননি। তিনি হজ্জরত অবস্থায় বেগানা পুরুষের মুখোমুখি হলেই কেবল মাথার ওপর দিয়ে আলাদা ওড়না টেনে দিতেন পরে আবার সরিয়ে ফেলতেন। অতএব যে সমস্ত বোনেরা ইহরামের নিয়ত করেন মুখে নিকাব লাগিয়ে তাদের ইহরাম বাধাই হয় না।

(আল্লাহ অধিক জ্ঞাত)।

বিষয়: বিবিধ

২৩৭১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

321528
২১ মে ২০১৫ সকাল ১০:৫১
মনসুর লিখেছেন : মাশাআল্লাহ, সুন্দর লিখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, জাজাকাল্লাহু খাইরান। শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।

মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
321658
২১ মে ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
পর্দা ছাড়ার বাড়াবাড়ির মত পর্দা করার বাড়াবাড়িও সঠিক নয়

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File