আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের হালচাল

লিখেছেন লিখেছেন আমিনুল হক ০২ অক্টোবর, ২০১৭, ০৯:৪৯:৩২ রাত



মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম উন্নত এবং সমৃদ্ধিশালী দেশ হল সংযুক্ত আরব আমিরাত। আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশী বৈধ শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ। আমিরাত সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আছেন অনেক বাংলাদেশী। আবার অনেকে কাজ করছেন প্রাইভেট কোম্পানিতে। আবার অনেকেই নিজের প্রতিভায় গড়ে তুলেছেন নিজস্ব মালিকানাধীন কোম্পানি বা ব্যবসা-প্রতিষ্টান। আমার জানামতে প্রায় সব পেশাতেই বাংলাদেশীরা ছড়িয়ে আছেন। এছাড়া পেশাগত কাজের পাশাপাশি অনেকেই ছড়াকার, লেখক, সাংবাদিক, নৃত্যশিল্পী ও শিল্পী হয়ে প্রতিভার সাক্ষর রেখে যাচ্ছেন।

আমিরাতে বাংলাদেশীরা যতটা আরামে আছেন তার চেয়ে বেশী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর হয়ে গেল সকল ধরণের ভিসা বন্ধ। তাই চাইলেও কেউ নিজের ইচ্ছামত কোম্পানি বদল করতে পারছেন না। আবার অনেক কোম্পানির ব্যবসায় ধ্বস নামায় মালিকপক্ষ কোম্পানি বন্ধ করে শ্রমিকদের পাঠিয়ে দিচ্ছে দেশে। আবার অনেক কোম্পানিতে এখনো চলছে শ্রমিক ছাটাই। আর এসব সমস্যায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশী শ্রমিকদের সংখ্যাই বেশী। ভিসা বন্ধ থাকায় ভিসা বদল করতে না পেরে অনেকেই বাধ্য হয়ে দেশে চলে যাচ্ছেন বা অবৈধ হয়ে আমিরাতে অবস্থান করছেন। আবার যোগ্যতা থাকা সত্বেও অনেকেই চাকুরী করছেন খুবই কম বেতনে

ন্যদিকে মাসের মাস শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু বেতন পাননি বা পাচ্ছেন না। আর এদিকে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করেই মালিক পক্ষ কোম্পানি বন্ধ করে দিয়েছে বা দিচ্ছে। অনেক শ্রমিকরা তাদের কষ্টের টাকা পাওয়ার জন্য আমিরাত আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছেন। আর আমিরাত আদালত যখন মালিক-শ্রমিকের টাকা সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয় তখন ন্যায় বিচারের জন্য সব কিছু যাচাই করে ধীরে ধীরে সত্যের পক্ষে রায় দিয়ে সমাধান করে দেয়। আদালতের রায় আসার আগ পযর্ন্ত মালিক-শ্রমিক পক্ষকে নির্দিষ্ট তারিখ মত আদালতে যেতে হয়। এদিক দিয়েও অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশী। তবে আমিরাত সরকার শ্রমিকের অধিকার আদায়ে শ্রমিকের পক্ষে কথা বলেন। শ্রমিকেরা পায় ন্যায্য বিচার।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মালিকানাধীন ব্যবসা-প্রতিষ্টানের সংখ্যা প্রায় অনেক। এসব ব্যবসা-প্রতিষ্টান গুলোতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা বন্ধ থাকায় অন্যান্য দেশের শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন। আর এ জন্য বাংলাদেশী মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্টান গুলো বাধ্য হয়ে অন্য দেশের শ্রমিকদের ভিসা দিচ্ছেন। আর বাংলাদেশ ও অনেক বড় একটা রেমিডেন্স থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে।

আমিরাত থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর বৈধ প্রন্থা বা মাধ্যম হচ্ছে ইউএই এক্সচেঞ্জ বা ব্যাংক। বৈধ পন্থায় টাকা পাঠালে বাংলাদেশ সরকার পায় অনেকটা রেমিটেন্স। আগের তুলনায় বাংলাদেশে রেমিডেন্স খুবই কম পরিমানে যাচ্ছে। কারন, অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ, অনেকের কর্মস্থল নেই। তাই তারা বাধ্য হয়ে অবৈধ পথ বা হুন্ডি বেচে নিচ্ছেন।

এছাড়া আমিরাতের প্রত্যেকটি প্রদেশে বাংলাদেশী প্রবাসীদের না জানা অনেক কষ্টের কথা অজানাই রয়ে গেল। এভাবেই চলছে প্রবাসীদের জীবন।

বিষয়: বিবিধ

৮৭৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384124
০৩ অক্টোবর ২০১৭ দুপুর ১২:০১
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহামাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু। সুন্দর লিখেছেনঃ বাস্তবতা এটাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File