নিতান্তই একান্ত

লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ০৫:২৮:১৩ বিকাল



রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ ফলাফল হল ভোট। ভোটের হিসেব নিকেশ এর উপর একটা রাজনৈতিক দলের অবস্থান বুঝা যায়। ভোটের সময়টা যেন রাজনীতিতে বসন্তকাল। চারিদিকে ফুল ফোটার সময়। এই বসন্তকে আলিঙ্গন করতে চাইলে প্রয়োজন গাছের পরিচর্যা। রাজনীতি নামক বৃক্ষটাকে তায় পাঁচটা বছর পরিচর্যা করলে বসন্তে ভাল ফুলের আশা করা যায়। তবে কিভাবে পরিচর্যা করা যাবে এই রাজনীতিটাকে? এটাতো আর বৃক্ষ নয়যে সেচ ও সার দিয়ে বলবান করা হবে। তাহলে উপায়?

প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের আদর্শ ও উদ্দেশ্য আছে। সেই আদর্শ আর উদ্দেশ্যকে তুলে ধরতে হয় জনতার কাছে, শুধু তুলে ধরা নয় সেই মোতাবেক কাজও শুরু করে দিতে হয় আগাম। যাতে করে জনগণ বুঝতে পারে কথায় ও কাজে মিল আছে। নিজেদের কর্মকান্ড তুলে ধরার নানান উপায় আছে, আজকাল ডিজিটাল যুগ, জনসভা বক্তৃতার পাশাপাশি টকশো, বিজ্ঞাপন, বিবৃতি ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের তুলে ধরা যায়।

জনসভা, বক্তৃতা, বিবৃতি, টকশো এগুলো চলছে তবে আমরা এগুলো আর বিশ্বাস করতে পারিনা, এগুলোকে আমরা গলাবাজি বা মিথ্যা বলেই ধরে নিই। এগুলো আমরা এক কান দিয়ে শুনে আর কান দিয়ে ছেড়ে দিই, কেউ বিশ্বাস করিনা তবে দলে দলে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে এসব নিয়ে ঝগড়াঝাটি ঠিকই করি। তাই এগুলো ঠুনকোই মনে হয় আমার কাছে।

আমাদের রাজনৈতিক দলের কোন হোমওয়ার্ক থাকেনা। থাকা উচিত। একটা দল ক্ষমতায় গেলে কি কি করবে এসব নিয়ে গলাবাজি হয় কিন্তু কিভাবে করবে সেটা তারা নিজেরাও জানেনা। ধরুণ একটা দল ক্ষমতায় যেতে ইচ্ছুক, ক্ষমতায় গেলে তাকে অনেকগুলো মন্ত্রণালায় এর কাজ করতে হবে, অর্থনীতি, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ইত্যাদি। দল ক্ষমতায় গেলে এগুলো কোন নীতিতে সামলাবেন, কে সামলাবে, কারা এসবে যুক্ত হবে এগুলোর কোন হোমওয়ার্ক থাকেনা। প্রত্যেক দলের মধ্যে এসব ব্যপারে প্রাতিষ্ঠানিক কমিটি, চর্চা ইত্যাদি থাকা প্রয়োজন। না হলে ভোটে জিতলে একজনকে ধরে এসে একটা দায়িত্ব দিয়ে দেয়া হবে, যিনি এই বিষয়ে আগে থেকেই কোন চর্চা না করে থাকলে ঠেকতে ঠেকতে শিখতে আসার মতো ঘটনা ঘটবে। একটা রাষ্ট্র নিয়ে এভাবে অপরিপক্ব কাজ মানায়না। হয়তো যুক্তি আসতে পারে তারাতো শিক্ষিত লোক, তাহলে অপরিপক্ব হবে কেন? তবে শিক্ষিত কোন বিষয়ে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে, একজন ইঞ্জিনিয়ারকে যদি রোগী অপারেশন করতে বলা হয় সে যতই শিক্ষিত হোকনা কেন এই কাজটা তাকে দিয়ে হবেনা, তায় রাজনীতির এই শিক্ষাটা প্রত্যেক দলের আগে থেকেই চর্চা করে এসে ক্ষমতায় গিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলো বলতে পারে, আমরাতো এমনই করে আসছি, এটা আর নতুন কি? তেমনটা হলে সেক্ষেত্রে এটাও একটা গলাবাজি হবে। তারা তাদের কর্মকান্ড, আদর্শ উদ্দেশ্য ইত্যাদির দর্শনগুলোর কয়টা সেমিনার, কলাম বা বই জনগণের হাতে তুলে দিতে পেরেছে সেটা দিয়ে একটা বিচার্য বিষয় হতে পারে। বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি, পরিবেশগত সমস্যা, দারিদ্র, সমাজ, সংস্কৃতি এসব নিয়ে কে কতোটা লিখেছে, সময় ব্যায় করেছে, জনগণের হাতে তুলে দিতে পেরেছে সেটা দেখলেই বুঝতে পারব তাদের হোমকওয়ার্ক হচ্ছে এবং কিভাবে তারা দেশটা চালাবে তার একটা আভাস বা ইংগিত। আমাদের রাজনীতিটা হোক জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক, আর কতকাল মার্কা দেখে ভোট দিয়ে আমারা রাজনৈতিক দেউলিয়া হব দিনকে দিন।

বিষয়: বিবিধ

৫৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File