আমার জুতো পালিশের পয়সায় আপনার মুখে অন্ন জুটে

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৬:০৬:৫৬ সন্ধ্যা

আলম মুহাম্মদ

-------------------###

শরাবী কবিদের মন থাকে বাঁকা, হীনমন্যতায় ভুগেন সর্বক্ষণ, আর তাদের বলয় ছাড়া কাউকে মানুষ মানতে রাজি নন তারা এবং তাদের উচ্চাকাংখাও থাকে বেশি।তাদের কবিতায় নারী, ঠোঁট,স্তন,শাড়ি,ছায়া,ব্লাউজ এই শব্দগুলোর ব্যবহার পাবেন মাত্রাতিরিক্ত।তারা আকাশের ঠোঁট খুঁজে পায়,পাহাড়ের স্তন,মেঘমালাকে ছায়া ব্লাউজ লিখে কবিতায় রস দেয়।রস ছাড়া যেন তাদের কবিতা একেবারে অচল। আর এই কথাগুলোর যথার্থ বাস্তবতা খুঁজে দেখতে চাইলে তাদের কবিতাগুলো পাঠ করুন,ঘুরে আসুন তাদের টাইমলাইন। যার বর্তমান সময়ের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছেন (মহান!) কবি আবু হাসান শাহরিয়ার।

তিনি কবি হিসাবে একটা পরিচিতি পেয়েছেন এবং তার নিজস্ব বলয়ে বেশ আদর কদরও আছে।কিন্তু তার মনে আরো বেশি পরিচিতি পাওয়ার একটা খায়েস জেগে উঠেছিলো। সেই খায়েস চরিতার্থ করার জন্য বেঁচে নিলেন আমাকে, আমি প্রবাসীকে, আমরা প্রবাসীদেরকে। তিনি বলেছেন, রেমিটেন্সের বড়াই না করতে, জুতা পালিশের জন্য প্রবাসে আছি সেথায় আরো মনযোগ দিতে, দেশের জন্য মায়া কান্না না করতে। পরের পোস্টগুলোতে ইনিয়ে বিনয়ে আরো অনেক কিছুই বলেছেন। আর তার বলয়ের কিছু মানুষ সেথায় বাহবা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ তাকে শান্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

কবি মানুষ ত, তাছাড়া উপরুক্ত বয়ানের সবকিছু যার মাঝে আছে তিনি এভাবে লিখতেই পারেন। কিন্তু, যিনি আকাশের ঠোঁট, বাতাসে মেয়েলি গন্ধ,পাহাড়ের স্তন ইত্যাদি খুঁজে বুদ হয়ে থাকেন তার জ্ঞাতার্থে কিছু কথা বলা মনে হয় অসমীচিন হবে না।

জ্বি কবি সাহেব, আমি আমরা জুতা পালিশ করে পয়সা কামাই।মাথার ঘাম পায়ে ফেলে,বাবা মা,ভাই বোন, স্ত্রী সন্তানের আদর-সোহাগ,মহব্বত জালন্জলি দিয়ে, দু'বেলার যায়গায় এক বেলা খেয়ে, এক বেলা না খেয়ে পয়সা জমাই আর সেই পয়সা মাসান্তরে দেশে পাঠিয়ে দিই। জানেন, যেদিন আমরা জমানো পয়সাটা দেশে পাঠাই,সেইদিনই আমরা ঠিকমত মনের প্রশান্তি নিয়ে ঘুমাতে পারি। আচ্ছা কবি সাহেব, যারা জুতা পালিশ করে তারা কি মানুষ না? নাকি আপনার কবিতায় তাদের জন্য কোনো পংক্তি উগলে না।জানেন কবি সাহেব, আমরা যে টাকা পাঠাই তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৃহৎ পরিমান ভুমিকা রাখে। আমাদের টাকায় খাদ্য আমদানী হয়,রাস্তাঘাট নির্মান হয়, সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ হয়।দেশের মানুষের জীবন মান সমৃদ্ধ হচ্ছে; শিল্প,সাহিত্য, সংস্কৃতিতে আমাদের জুতা পালিশের পয়সায় রং ছড়ায়। সেই হিসাবে আমরা রেমিটেন্স যোদ্ধারা অহংকার করতেই পারি। এই অহংকার দিতে পারার অহংকার, নিতে পারার নয়।আর যারা দেশকে দিতে জানে তারা দেশপ্রেম দেখাবে না ত আপনি দেখাবেন কি? বলেন ত, কবিতার বই লিখে পয়সা নেয়া ছাড়া আপনি দেশকে কী দিয়েছেন?

বিষয়: বিবিধ

৭৭৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383940
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ০৯:১৬
তিতুমীর লিখেছেন : এই ধরণের কবি'রা কবিতা লেখার এনার্জী পায় মেথর পট্টিতে বাংলা চোলাই মদ খেয়ে।
এদের কাছে আর কি আশা করতে পারেন??
383948
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ০৯:৩৮
হতভাগা লিখেছেন : কাক আর কবিদের সংখ্যা ঢাকা শহরে দিনকে দিন বাড়ছেই । উভয়ে কিন্তু উচ্ছিষ্ট খেয়ে বেঁচে থাকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File