ডিজনিল্যান্ড টু আলী আকবর ভায়ের পোস্টমর্টেম !

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৮:১৩:৩৯ সকাল



ডিজনিল্যান্ডে যাওয়ার শখ আমার পুরোনো, তবে সবচেয়ে বেশী আকর্ষন ছিলো ফ্লোরিডার ডিজনি ওয়ার্ন্ডের প্রতি, পরেরবার সেখানে যাব ইনশাআল্লাহ। আলী আকবর ভাইকে বিষয়টা জানালে তিনি বললেন আমাকে পৌছে দিবেন। কোনো নতুন স্থানে আসার পর সবচেয়ে বেশী কষ্টকর বিষয় হয় যাতায়াত সংক্রান্ত। এটা খুব সাংঘাতিক এক ধকলের ব্যাপার। আমেরিকার মত স্থানে মানুষ নিজের কাজেই নিজে ব্যস্ত থাকে বেশী, সেখানে এরকম পরোপকারী সজ্জন ব্যক্তিকে পাওয়া স্রেফ ভাগ্যের ব্যাপার।

কথা ছিলো সকাল ১০টায় যাব। আমি সে মোতাবেক সকালে ঘুমালাম। ওদিকে আমার চাইতে আলী আকবর ভায়ের তাড়া যেন বেশী। উনি ফোন দিলেন, কিন্তু কোনো কারনে ফোন সাইলেন্ট ছিলো। মোবাইলে টেক্সট করলেন, উত্তর না পেয়ে ভাইবারে মেসেজ করলেন এবং ফেসবুকেও মেসেজ দিলেন। ওরে বাপরে বাপ !! আমি ৯টায় ঘুম থেকে উঠে দেখী চারিদিকে মেসেজের হাটবাজার। উনি হোটেল রুমে হাজির। ঝটপট রেডী হয়ে দিলাম দৌড় উনার সাথে। পথে একস্থানে পানি কিনতে গিয়ে ডিজনিল্যান্ডের প্রবেশ টিকেট কিনলাম। এখান থেকে কেনার কারনে ১১০ ডলারের টিকেট নিল ১০৬ ডলার। উনি আমাকে ডিজনিল্যান্ডে নামিয়ে চলে গেলেন। উনার এসবের প্রতি আগ্রহ নেই বলে উনি গেলেন না।

ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানী যা কিছু করে তা বিশাল আকারে করে। এখানে পাহাড়ী এলাকায় এরা বহু বড় কারবার করেছে। বিশাল এমিউজমেন্ট পার্কের সাথে তাদের নিজস্ব হোটেলসমূহ রয়েছে। মানুষের পরিপূর্ণ বিনোদনে যা কিছু প্রয়োজন তা তারা শৈল্পিকভাবে পেশাদারিত্বের সাথে করে থাকে। আমি ডিজনিল্যান্ডে প্রবেশ করে হারিয়ে গেলাম। আসলেই হারিয়ে যাবার মত স্থান। প্রথমে এখানে বিশাল সিকিউরিটি চেকআপের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। সেটা সম্পন্ন করে গেটে গিয়ে শুনলাম এটা ডিজনিল্যান্ড নয়, এটি ক্যালিফোর্নিয়া এ্যাডভেঞ্জার না কি যেন মনে পড়ছে না। এটাও ডিজনি কোম্পানীর কিন্তু পয়সা কামানোর আরেকটি স্তর।

গেলাম অপর পাশে থাকা বিশাল গেটের ডিসনিল্যান্ডে। ভেতরে প্রবেশের পর সুন্দর ব্যাটারী চালিত গাড়িতে করে আসল গেটের কাছে গেলাম। চারিদিকে নানান সব সুভ্যেনিরের দোকানপাট। দেদারছে পণ্য বিক্রী হচ্ছে। ডিজনি কোম্পানী মিকিমাউস নামক কার্টুন চরিত্র তৈরী করে সারাবিশ্বে বিরাট আলোড়ন সৃষ্টি করে। এখনও সেটা দারুন জনপ্রিয়। এই মিকিমাউসের নানান সরঞ্জাম বিক্রী হয় কোটি কোটি ডলারে। প্রতি বছরই ডিজনি কোম্পানী এক বা একাধীক এনিমেটেড মুভি তৈরী করে এবং এর সাথে আনুসাঙ্গীক ব্যবসাও করে। বিনোদনের ভেতর দিয়ে কিভাবে পয়সা কামাতে হয় তা তাদের মত ভালো কেউ জানেনা। পুরো আমেরিকার সবচেয়ে বড় মিডিয়া এই কোম্পানীর হাতে। এটি ইহুদী কোম্পানী।

যাইহোক এই টিকেটে ভেতরের সব রাইড ফ্রি। আমি চলছিলাম আর অবাক হচ্ছিলাম। এত সুন্দর আর নিখুতভাবে রূপকথার নানান বিষয় বাস্তবে ফুটিয়ে তুলেছে যা অবাক করার মত। একটি ছোট ট্রেনে উঠলাম। সেটা কৃত্তিম এক দ্বীপে ঘুরিয়ে আনল। সেখানে লেক রয়েছে, লেকের নানান পাশে নানান রকমের বাড়ি,গ্রাম,শহর তৈরী করা হয়েছে। আছে ভয়ঙকর টানেল। পাহাড়ও রয়েছে। খুব মজা পেলাম এটায় চড়ে। চারিদিকে ঘুরছিলাম আর মুগ্ধ হচ্ছিলাম। আজ রবীবার তাই হাজার হাজার লোক প্রবেশ করেছে। অবশ্য প্রত্যেকদিনই এখানে মানুষ থাকে প্রচুর। সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসে।

ভেতরে কিসব তৈরী করা হয়েছে তা বলে বুঝানো যাবেনা। যেদিকে তাকাচ্ছিলাম কেবল অবাক হচ্ছিলাম। একটি লেকের উপর এমন রহস্যপূর্ণ দ্বীপ বানানো হয়েছে যা দেখলে মনে হবে হাজার বছর পূর্বে চলে গেছি। সেই লেকে সত্যিকার বিশাল জাহাজ আছে যার পেছনে বহু বছর পূর্বেকার একধরনের পাথা লাগানো আছে যা পানিতে বিশেষ বাধার সৃষ্টি করে এগিয়ে চলে। আরেকটি বিশাল পালতোলা ক্যারিবিয়ান পাইরেটস জাহাজ আছে, সেখানে চড়ে উক্ত দ্বীপে নামা যায় কিছুক্ষনের জন্যে। এখানে নৌকা বাইচের ব্যবস্থাও আছে। সুন্দর সেসব নৌকায় অনেক জন মিলে বসে বৈঠা বেয়ে চলতে হয়,অবশ্য তাদের লোকেরা সেখানে উপস্থিত থাকে।

এবার রোলার কোস্টারের কাছে আসলাম। এ জিনিস আমার দুচোখের বিষ। বহু আগে সাভারের নন্দনপার্কের রোলার কোস্টারে উঠে তওবা করেছিলাম আর কখনও উঠব না। এখানে মনে হল এটা তেমন খারাপ হবেনা। উঠলাম। ওরে আল্লাহ !!! বাইরে থেকে কিচ্ছু বোঝা যায়না ভেতরে কি আছে। এরা কৃত্তিম পাহাড় তৈরী করেছে। এর ভেতর নানান প্যাচে আছে রোলার কোস্টারের রেল। প্রচন্ড গতিতে এটা উপরে উঠে ভয়ঙ্করভাবে নীচে নেমে প্যাচ খেলো। আবার ডানে-বামে। এবার চলে আসল অন্ধকার এক টানেলের ভেতর। কবরের অন্ধকার সেখানে। সেখানে অন্ধকারে উপরে উঠে অন্ধকারের ভেতর নীচে নেমে যখন পাক খেলো, তখন সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম,তবে এখানকার ভয় নয়। আমি মনে হল কবর কতটা ভয়ঙ্কর ! হঠাৎই মনে হল আল্লাহর শাস্তি কতটা ভয়াবহ হতে পারে ! মানুষ এক সেকেন্ডও সেই শাস্তি গ্রহন করতে পারবে না ! সত্যিই ভয়াবহ আল্লাহর শাস্তি ! আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুক !

সেই অন্ধকারে বুঝতে পারছিলাম না ট্রেনটা ঠিক কিভাবে নামবে,,,কতটা প্রবল হবে ঝাকুনি ! আর এরা পুরো বিষয়টাকে ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্করতম করেছে। এভাবে কখনও আলোর ভেতর, কখনও অন্ধকারে ঝালমুড়ির মত ঝাকি খেয়ে আমার মাথা হালকাভাবে ঘুরতে থাকল। ঝাকুনির ১৬ কলা পূর্ণ করে নামিয়ে দিল। আমি মোটামুটি স্বাভাবিকভাবে নেমে হাটতে থাকলাম। খানিক পর শুরু হল আসল নসা বা নজিয়া। মনে হচ্ছিলো বমি হবে কিন্তু ততটাও প্রবল ছিলোনা। আমার মোটেও ভালো লাগছিলো না। এক স্থানে খানিক বসলাম। ব্যাগে এভোমিন ট্যাবলেট ছিলো। একটা খেলাম। কিন্তু কাজ হলনা। তখন আশপাশে ডাস্টবিন দেখছিলাম, ব্যাগের ভেতর হাতড়ে একটা পলিথিন রেডি রাখলাম। বারবার ভাবছিলাম হাজার হাজার মানুষের ভেতর এরকম হাল-ফ্যাশনের শক্তিশালী যুবক যদি অনবরত বমি করতে থাকে,,, তা হয়ত লাইভ টেলিকাস্ট হয়ে যাবে। ইজ্জত ফালুদা হয়ে যাবে। আল্লাহকে ইজ্জত বাচাতে বললাম। উনি আমাকে বেইজ্জতী করেননি,, দু একবার স্রেফ শিক্ষা দেওয়ার জন্যে অবশ্য বেইজ্জতী করেছেন,,,সেসব কাহিণী এখনও শ্মরনীয়।

খানিক পূর্বে পুরো দুনিয়া এত ভালো লাগছিলো অথচ সিকনেসের কারনে পুরো দুনিয়া মরা ছাগলের মত অর্থহীন হয়ে গেল। হাটতে হটাতে এক লেকের পাশে বসলাম। মাথা নীচু করে থিতু হওয়ার চেষ্টা করলাম। সামনে দেখলাম বিশাল জাহাজ নোঙ্গর করে আছে। মানুষ উঠছে,,,আর আমার মনে হল শালার জাহাজ ডুবে যাক,,,খানিক পর তা বিরক্তি সৃষ্টি করে চলতে লাগল,,,এবার আসল ক্যারিবিয়ান পাইরেটস জাহাজ। ক্রুরা জলদস্যুদের মতসেজেছে। পুরোটাই দারুন চিত্র কিন্তু এটা দেখেও ভালো লাগল না। মনে হল এই শালার জাহাজও ডুবে যাক !

পাশে এসে এক ভদ্র মহিলা বসল। মনে হল এই মহিলার আজ খবর আছে। পলিথিনটা রেডী রাখলাম,যাতে তার খবর না হয়। কিন্তু বমি হলনা। অন্তত ৩০ মিনিট বসে থাকলাম। আস্তে আস্তে সুস্থ্য হয়ে উঠলাম। এবার হেটে অনেক কিছু দেখলাম। লেকের পাশে বেশ কিছুক্ষন হাটলাম। একস্থানে এসে দেখী পাহাড়ের মত কিছু তৈরী করেছে। আর নৌকায় চড়ে মানুষ উপরে উঠছে , সেই নৌকাও অনেকটা রোলার কোস্টার মার্কা। সেটা উচু নীচু হয়ে খাড়া পাহাড়ের মাথায় উঠল, এবার সেখান থেকে নীচে লাফ দিয়ে পড়ল। কয়েকবার করে এরকম উপর থেকে ফেলে দিয়ে তবেই খ্যান্ত হয়। এ তো স্রেফ মানুষ মারা কল। চলে আসলাম আরেক পাশে। দেখী মানুষের ভীড় বেশী। ভাবলাম এই রাইডে ওঠা যায় কিনা দেখী। হায় আল্লাহ খানিক পর দেখী এটা ওই নৌকায় চড়ার লাইন।

এবার হাটতে হাটতে পেলাম সুড়ঙ্গের মত একটা স্থান। ঢুকলাম। একেবারে রেগন কেভের মত সুন্দর। সেরকমই তৈরী করেছে। আসল নাকি নকল বোঝার উপায় নেই। ভালো লাগল। ভাবলাম এটা বেশ দারুন দর্শনীয় স্থান। খানিক পর সুড়ঙ্গ শেষ হল আর দেখলাম বিশাল টানেলের ভেতর বাশ,কাঠ দিয়ে রাস্তা তৈরী করেছে। সেদিকে শত শত মানুষ যাচ্ছে। আমিও গেলাম কোনো দর্শনীয় জিনিসের খোজে। একেবারে প্রায় সামনে চলে আসার পর দড়ি দিয়ে আমার পেছনটা লক করে দিল এদের লোকেরা। সামনে দেখী বড় স্ক্রিনে দেখাচ্ছে এক ভয়ঙ্কর রাইড। সম্ভবত এটি ৩ডি এনিমেটেড অথবা বাস্তবিকই কোনো গাড়ি। আমি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞেস করলাম-এটা কি কোনো রাইড ?? ওই কোস্টারে উঠতে হবে ?? তিনি বললেন- হ্যা। আমি বললাম আমি যাবনা,,, বের হতে চাই। উনি বললেন পেছনে ফেরার রাস্তা নেই,, সামনে দিয়ে ঘুরে যেতে হবে। আমি ঠাই দাড়িয়ে থাকলাম কিন্তু লাইন নড়ে না। ভেতরে বোধহয় একপাল লোককে ঝালমুড়ির মত ঝাকাচ্ছে।

আমি দড়ি টপকে পেছনে আসলাম। মানুষের ভেতর দিয়ে খানিকদূর এসে বাউন্ডারী টপকে ফেরার লাইনে প্রবেশ করে দৌড়ে পালালাম। ওরে আল্লাহ !! ওরা কসাই,,,,, কোনো মায়া দয়া নেই !!!

এবার আমি সতর্ক। বাইরে এসে তওবা করলাম আর রিস্ক নেব না। এবার দেখী টারজানের গাছ। বিশাল এক গাছ তৈরী করেছে। একেবারে রূপকথার টারজানের গাছের মত তৈরী করেছে। সুউচ্চ গাছে উঠলাম গা ছমছমে পরিবেশে তৈরী সিড়ি বেয়ে। বারবার ভাবছি,,আবার কোনোবিপদে পড়ছি না তো ! বারবার পেছনে ফেরার রাস্তা দেখছি। উপরে উঠে দেখলাম দড়ি,কাঠের সেতু। পার হয়ে গাছের উপর উঠলাম। সেখানে রোবটিক বাঘ তৈরী করা হয়েছে। পুরো বুনো পরিশে তৈরী করেছে। টারজানের প্রতিকৃতিও আছে। খানিক পর নেমে আসলাম ঝামেলা ছাড়াই। বেশ ভালো লাগল।

এবার দেখী সুন্দর রাস্তা চিকন এক লেক বরাবর। সেখানে হেটে ভালো লাগল। পুরো আমাজন জঙ্গলের মত পরিবেশ। দেখলাম এর ভেতর দিয়ে ইঞ্জিন নৌকা চলছে। ভাবছি চড়ব কিন্তু সাহস পেলাম না। এবার প্রবেশ পথে চললাম। সেখানে গিয়ে গার্ডকে বললাম,,,আচ্ছা এই নৌকা কি উল্টোপাল্টা চলে ? হাতের ইশারায় দেখালাম যাতে সে ভালো বুঝতে পারে। বলল-না, এটা সমান্তরালে চলে। এবার সাহস পেয়ে চয়ে বসলাম। আমি একা হওয়াতে চান্স পেলাম দ্রুত কারন একজনের মত বসার স্থান ছিলো।

এই নৌকায় ছিলো রসিক চালক। এটাই এদের পেশা। নানান সব কৌতুককর কথা বলে বলে আমাদেরকে চারিপাশটা দেখাচ্ছিলো। আফ্রিকার জঙ্গল ও আমাজনের জঙ্গলের আদলে তৈরী এটি। সেখানকার সব প্রধান প্রানী রোবটিকভাবে এই নদীর আশপাশে একেবারেই জীবন্ত করে রাখা হয়েছে। হাতি,বানর,গোরিলা,জলহস্তী এরা এমনভাবে নড়াচড়া করছিলো যে সহসা রোবট মনে হবেনা। ছবি তুলেছি অনেক, সেসব দেখে বেশীরভাগ মানুষই বুঝতে পারবে না আসল নাকি নকল। অন্তত ৮মিনিট চলে থামলাম। পুরো ডিজনিল্যান্ডে এটাই ছিলো আমার কাছে চরম উপভোগ্য। এরপর আরও কিছুক্ষন হাটাহাটি করে চলে আসলাম।

আলী আকবর ভাই আমাকে নেওয়ার জন্যে বহু ফোন,মেসেজ দিল কিন্তু আমি উনাকে না জানিয়েই হোটেলে ফিরেছি। এত বেশী সার্ভিস নিতে ইজ্জতে লাগে রে ভাই। কিন্তু এই লোকটা আলাদা ছাচের। দেশের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আচার আচরনে যশোর মাগুরা,কুষ্টিয়ার সাথে মিল আছে। উনার মোটামুটি ১৪ গুষ্টির মধ্যে ১০/১২ গুষ্টিই ক্যালিফোর্নিয়াতে। আমি এই লোকটির ভেতর এমন কিছু গুনাবলী লক্ষ্য করেছি যা সাংঘাতিক ধরনের। তার দুটো গুন মারাত্মক ! তিনি দায়িত্বশীল এবং মানুষের সাথে সম্পর্ক সংরক্ষনকারী। মূলত: এই দুই কারনেই পৃথিবীতে মানুষ অমর হয়ে ওঠে। এটি মহামানবদের বৈশিষ্ট্য। তার বাড়ির দেওয়ালের সাথেই তার দুটি মেয়ে ও তাদের পরিবার একসাথে থাকে। প্রায় সকল আত্মীয় পরিজন পাশাপাশি থাকেন। আমি উনার প্রত্যেকটি আচরনের পোস্টমর্টেম করার অল্প খানিক সুযোগ পেয়েছি। আর তার আচরনই প্রমান করেছে, এই লোক রহমতপ্রাপ্তদের একজন।

তার সাথে তার আত্মীয় পরিজনের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। উনার আম্মা উনার সাথে থাকেন, বয়স মাত্র ৮৭। তার ফিটনেস দেখে মনে হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমে নামালে প্রতি বলে ৪/৬ পেটাতো। এতটা বয়স হওয়ার পরও উনি অসুস্থ্য নন এবং সাংঘাতিক সচেতন ও জ্ঞানী মানুষ। যেখানেই থাকেন, তার আশপাশ সম্পর্কে সুধারনা রাখেন। সকলের সাথে সৌজন্য বিনিময় করেন। আমি উনার বাসায় বসে আছি, খানিক পর দেখী উনি গাছের একটা পেয়ারা কেটে আমার হাতে দিলেন। বিষয়টা চমৎকৃত করল। যখনই তার সাথে দেখা হয়েছে অনুচ্চ স্বরে গায়ে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে কেমন আছি,কেমন লাগছে, কিছু লাগবে কিনা এসব। উনি এই বয়সেও অন্যকে সার্ভিস দিতে পছন্দ করেন। সকলের সাথেই তার সুসম্পর্ক এটা বুঝেছি। আল্লাহ উনাকে সেন্সুরী করার তাওফিক দান করুন ! আরও বেশী সুস্থ্য রাখুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের চিরস্থায়ী মেহমান হিসেবে কবুল করুন !

আলী আকবর ভাই আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড, সেটাও খুব বেশীদিনের নয়। কিন্তু তার আন্তরিকতা, ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি তার সম্পর্কে যা লিখছি উনি তার চেয়ে অনেক উপরে। নিরহংকারী,সাদামাটা,বিনয়ী,ধার্মিক এক লোক তিনি। বাঙ্গালী মুসলিমদেরকে একত্রিত করা ও তাদের মাঝে ইসলামের বানী প্রচার করে পরিবারগুলোকে আল্লাহর পথে রাখা এবং একটি ইসলামী সমাজ গঠনের প্রত্যয় নিয়ে "মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা" নামক যে অর্গানাইজেশন তৈরী হয়েছে,উনি তার একজন পদস্থ দায়িত্বশীল ব্যক্তি। ইসলামের ব্যাপারে তার বেশ গভীর জ্ঞান ও পান্ডিত্ব রয়েছে। মুসলিমদেরকে তাদের দ্বীনে প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্যে উনার খেদমত অনন্য। আল্লাহ উনার ও উনার পরিবারের উপর রহম করুন ! তাদেরকে তাদের ধারনাতীত উৎস্য থেকে রিজিক ও অন্যান্য সাহায্য করুন ! আল্লাহ তাদের জন্যে যথেষ্ট হয়ে যাক !

বিষয়: বিবিধ

৮৮৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384071
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সকাল ১১:২৮
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : আমিন!
০২ অক্টোবর ২০১৭ রাত ০৯:০৪
316880
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ধন্যবাদ, আমিন
384075
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ০১:১২
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা"
০২ অক্টোবর ২০১৭ রাত ০৯:০৪
316881
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হুমম
384080
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সকাল ০৫:৫৫
০২ অক্টোবর ২০১৭ রাত ০৯:০৫
316882
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হ্যা আপনার সাথে গিয়েছিলুম Happy
384088
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সকাল ১১:৫৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ডিজনিল্যান্ড এর রেস্টুরেন্ট গুলির কি অবস্থা??? আছে না খালি হয়ে গেছে!!
০২ অক্টোবর ২০১৭ রাত ০৯:০৬
316883
দ্য স্লেভ লিখেছেন : মাথা ঘুরতে থাকার কারনে খাওয়ার রুচি াছলোনা,,,বেচে গেছে ওরা Happy
384094
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ০১:৫৪
আবু জারীর লিখেছেন : আপনার মাথা ঘুড়ানির জ্বালায় সব দেখা হলনা।

তার পরেও যা দেখালেন এক কথায় অসাধারণ।
০২ অক্টোবর ২০১৭ রাত ০৯:০৬
316884
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হ্যা মোটামুটি পয়সা উসুল করেছি Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File