|
শাহ আবদুল হান্নান
shah_abdul_hannan@yahoo.com |
|
‘ভবিষ্যতের সভ্যতা ইসলাম’ : ড. ইউসুফ কারযাভী
09 November 2017, Thursday
ড. কারযাভী বলেন, মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কেবল আল্লাহর উপাসনা করা, পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা এবং পৃথিবীকে যথাযথভাবে গড়ে তোলা
আমরা সবাই ড. ইউসুফ আল কারযাভীকে জানি উম্মাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্কলার হিসেবে। তার ‘ইসলাম- দ্য ফিউচার সিভিলাইজেশন’ বইয়ের সারাংশ তুলে ধরছি।
প্রথম তিনটি অধ্যায়ে তিনি পাশ্চাত্য সভ্যতার ওপর আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একটি মানবসত্তার মতোই সভ্যতারও একটি দেহ এবং একটি আত্মা রয়েছে। দেহটা হলো সড়ক-জনপথ, ফ্যাক্টরি এবং দালানকোঠা। পশ্চিমা সভ্যতা এ ব্যাপারে অনেক দূর এগিয়েছে।
অপর দিকে একটি সভ্যতার আত্মা হলো তার মূল্যবোধ, নৈতিকতা এবং ধ্যান-ধারণা। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমা সভ্যতা ব্যর্থ হয়েছে, যার কারণ হচ্ছে আল্লাহ তাদের সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে অস্পষ্ট ধারণা, বস্তুবাদী জীবনপদ্ধতি, ধর্মহীনতা (শিক্ষা ও ধর্মকে পরস্পর থেকে আলাদা করা), আল্লাহর দেয়া মানব প্রকৃতির (মানুষের অন্তর্নিহিত গুণাবলির) সাথে লড়াই এবং অন্যান্য মানবগোষ্ঠীর চেয়ে নিজেদের উন্নত মনে করা।
তিনি বলেন, পশ্চিমা সভ্যতা মেশিন, যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি লাভ করেছে। কিন্তু মূল্যবোধ ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে খুব কমই কাজ করেছে।
এর ফলে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে পাশ্চাত্য দিশাহারা হয়ে পড়েছে। সেখানে ছড়িয়ে পড়ছে কঠিন যৌন রোগ, এইডস, পরিবারের ভাঙন, বহুগামিতা, বিকল্প মাতৃত্ব (ভাড়ায় মাতৃত্ব), সন্তান নিতে না চাওয়া, স্ত্রী স্বামীর পরিবর্তে এমনকি কুকুরের সাথে বসবাস, সমলিঙ্গ পরিবার, একক পরিবার, একাকিত্ব, নৈরাজ্য, আত্মহত্যা, বেশি বেশি খুন ও অপরাধ প্রভৃতি। পাশ্চাত্য সভ্যতার আত্মায় পচন ধরেছে।
চতুর্থ অধ্যায়ে কারযাভী বলেছেন, মার্ক্সবাদ, বর্তমানকালের খ্রিষ্টবাদ, জুদাইজম (ইহুদিবাদ) কোনো সমাধান নয়। কেননা এগুলো ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা নয়।
ইসলামই একমাত্র সমাধান। কারণ এটি সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ; এর মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান ও বিশ্বাসের সমন্বয়, সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ব, সব মানুষের একত্বের ধারণা। ইসলাম আত্মশুদ্ধি ও অগ্রগতির ওপর গুরুত্বারোপ করে, সংহতি ও সহযোগিতার কথা বলে, সবার প্রতি সব ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার করে, পরামর্শের মাধ্যমে সব বিষয় সমাধা করতে বলে।
এরপর ড. কারযাভী বলেন, মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কেবল আল্লাহর উপাসনা করা, পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা এবং পৃথিবীকে যথাযথভাবে গড়ে তোলা।
তিনি আরো কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন; যেমন ইসলামের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকা, ইসলামের সাথে ক্রুসেডের চেতনা ভুলে না যাওয়া, ইসলামোফোবিয়া, ইসলামের বিরুদ্ধে চরমপন্থী ইহুদিবাদীদের (Zionists) পরিকল্পনা, বর্তমানকালের মুসলিমদের দুর্বলতা এবং ইসলামি পুনর্জাগরণে আস্থা রাখা।
লেখক : সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন