|
মীযানুল করীম
test@gmail.com |
|
মুগাবের পতন কি গণতন্ত্রের উত্থান?
25 November 2017, Saturday
জিম্বাবুয়ে আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশ। আর কিছুর জন্য না হোক, অন্তত একজন একনায়কের তিন যুগব্যাপী কুশাসনের কারণে দেশটি বিশ্বে বহুলপরিচিত। রবার্ট মুগাবে নামের এই একনায়ক দেশটির মুক্তিসংগ্রামে ছিলেন বিখ্যাত নায়ক, আর স্বাধীনতার পর ক্ষমতাসীন হয়ে পরিণত হলেন কুখ্যাত খলনায়কে। পরাধীন দেশে বিদেশী শাসন-শোষণের হাত থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করার আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিয়ে জননন্দিত হয়েছিলেন, স্বাধীন দেশে নিন্দিত স্বৈরাচারী হিসেবে তার কবল থেকে মুক্ত হয়ে এবার দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছে। তবে শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছে। মুগাবের পতন মানেই কি গণতন্ত্রের বিজয়? নাকি নতুন চেহারায় পুরনো চরিত্র নিয়ে স্বৈরশাসনের পুনরাবির্ভাব ঘটবে? মুগাবের তিন যুগের কুশাসনের পর তারই শিষ্য নানগাগোয়ার নেতৃত্বে ‘নতুন যুগ’ সূচিত হয়েছে। এ যুগ যাতে গণতন্ত্র, সুশাসন, ন্যায়নীতির যুগ হয় সে জন্য সবার সতর্কতা ও সক্রিয়তা দরকার। তা না হলে উত্তরসূরি নানগাগোয়ার যুগ পূর্বসূরি মুগাবের সময়ের মতো মহাদুর্যোগ ডেকে আনতে পারে। নানগাগোয়া ছিলেন মুগাবে সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট। অভ্যন্তরীণ বিরোধে মুগাবে তাকে কয়েক দিন আগে সরকার ও স্বদল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু সরকারের ক্ষমতার উৎস সেনাবাহিনীর আশীর্বাদ নানগাগোয়ার ওপর থাকায় উল্টো মুগাবেই বহিষ্কৃত হলেন সরকার এবং নিজের দল থেকে। এখন হয়তো তাকে সপরিবারে বহিষ্কার করা হবে দেশ থেকে।
জিম্বাবুয়ের নাম আগে ছিল দক্ষিণ রোডেশিয়া। আর বর্তমান জাম্বিয়ার নাম ছিল উত্তর রোডেশিয়া। আফ্রিকার দক্ষিণাংশে স্থলবন্দী দেশ, জিম্বাবুয়েতে ষাটের দশকে বর্ণবাদী কুশাসন চালিয়েছিলেন সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ গোষ্ঠীর ইয়ান স্মিথ। তখন রাজধানীর নাম ছিল স্যালিসবেরি। এখন রাজধানী হারারে, যা দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত। ক্রিকেট ম্যাচের সুবাদে হারারের সাথে বুলাওয়ে শহরও সুপরিচিত, যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। উত্তর রোডেশিয়া বা জাম্বিয়ার কৃষ্ণাঙ্গ নেতা কেনেথ ডেভিড কাউন্ডা বিশ্বে বহুলপরিচিত। তিনি দক্ষিণ রোডেশিয়া বা জিম্বাবুয়ের কৃষ্ণাঙ্গ নেতা রবার্ট মুগাবের (৯৪) মতো কুখ্যাতি কুড়াননি। জিম্বাবুয়ের ভূখণ্ডের পরিমাণ তিন লাখ ৯১ হাজার বর্গকিলোমিটার (বাংলাদেশের প্রায় আড়াই গুণ বড়) আর জনসংখ্যা এক কোটি ৬২ লাখ। তাদের ৮০ শতাংশই খ্রিষ্টান। মাত্র ১ শতাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। জিম্বাবুয়ের উত্তরে জাম্বিয়া ও মোজাম্বিক, দক্ষিণে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা, পূর্বে মোজাম্বিক আর পশ্চিমে বতসোয়ানা।
জিম্বাবুয়ের বড় সাফল্য হলো- দেশটিতে সাক্ষরতা ৮০ শতাংশ। পাক-ভারত-বাংলাদেশ উপমহাদেশে শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশরা ১৯০ বছর শাসন করেও স্থায়ী বাসিন্দা হয়নি, বরং এখানকার সম্পদ শোষণ করে স্বদেশে পাচার করেছে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার মতো জিম্বাবুয়ের শ্বেতাঙ্গরা বর্ণবাদী শাসন সত্ত্বেও দেশটিকে আপন করে সেখানে থেকে গেছে। জিম্বাবুয়ের শিল্পবাণিজ্য থেকে ক্রিকেট টিমের দিকে তাকালে এটা বোঝা যায় সহজেই। জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং পরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বিশপ আবেল মুজারেবা এবং জোশুয়া নকোমোর অবদান থাকলেও মুগাবের সর্বপ্লাবী শাসনের তাণ্ডবে এ দুই নেতা প্রায় বিস্মৃত।
কালো আফ্রিকার জিম্বাবুয়ে দীর্ঘ দিন সাদা উপনিবেশবাদী ব্রিটিশদের পদানত ছিল আমাদের এই উপমহাদেশের মতো। আমরা যখন স্কুলে নিচের ক্লাসে পড়ি, সেই ষাটের দশকে রেডিও ছিল ঘরে ঘরে; টিভি ছিল অনেকটা অপরিচিত। তখন রেডিওতে আন্তর্জাতিক খবরের একটা প্রধান আইটেম ছিল জিম্বাবুয়ে বা দক্ষিণ রোডেশিয়ায় বর্ণবিদ্বেষী ঔপনিবেশিক শ্বেতাঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে কালো মানুষের অব্যাহত সংগ্রাম। এটি রাজপথের নিরস্ত্র আন্দোলনের পাশাপাশি গেরিলাদের সশস্ত্র প্রতিরোধের পর্যায়েও উন্নীত হয়েছিল। এই মুক্তিসংগ্রামের নেতা ছিলেন রবার্ট গাব্রিয়েল মুগাবে।
স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য এক দশককাল কারাপ্রকোষ্ঠে বন্দিজীবন কাটাতে হয়েছিল তাকে। দখলদার শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদান এবং ত্যাগ-তিতিক্ষা ও নির্যাতন ভোগের প্রেক্ষাপটে মুগাবে অনেকটা ‘জাতির পিতা’র মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছিলেন। তবে ১৯৮০ সালে জিম্বাবুয়ে স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই ক্ষমতা হাতে নিয়ে তিনি যেন বিদায়ী বিদেশী শাসকের স্বদেশী প্রেতাত্মারূপে আবির্ভূত হতে শুরু করেছিলেন। পরাধীন আমলে যেমন, স্বাধীন হওয়ার পরও ক্ষমতার মালিক আর জনগণ হতে পারেনি। এর বাগডোর রয়ে গেল ব্যক্তিবিশেষের হাতে, যিনি একটি গোষ্ঠীর সর্বব্যাপী কর্তৃত্ব কায়েমের জন্য জনগণের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে দ্বিধা করেননি। মুগাবের মতো ক্ষমতালিপ্সার নজির বিশ্বে বিরল। স্বাধীনতার পর তার নেতৃত্বে তার দল ‘জানু’ সরকার গঠন করে। এই দলই স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছে।
যা হোক, মুগাবে স্বাধীনতার পর প্রথম সাত বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন; কিন্তু এতে তার ক্ষমতার লোভ পূরণ হচ্ছিল না। তাই নিজের ক্ষমতা স্থায়ী করার মতলবে তিনি জন-আকাক্সক্ষাকে ধূলিসাৎ করে, পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা বাতিল করে প্রেসিডেনশিয়াল সিস্টেম চালু করেন। নিজেই প্রেসিডেন্ট হয়ে অনির্দিষ্টকাল গদি আঁকড়ে থাকার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংবিধান ইচ্ছামতো বদলিয়ে ফেলেন। গণতন্ত্রের প্রবক্তা এভাবে হয়ে গেলেন স্বৈরতন্ত্রের প্রতিভূ। ১৯৮৭ থেকে এবার অবমাননার সাথে প্রস্থান পর্যন্ত মুগাবে একনাগাড়ে ৩০ বছর ছিলেন সর্বময় ক্ষমতাবান রাষ্ট্রপতি। কোনো সামরিক শাসকের পরিচয়ে নয়, সবচেয়ে বড় দলের নেতা হিসেবে এবং অভ্যুত্থান নয়, কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি দেশের একচ্ছত্র মোড়ল ও কর্তা সেজেছিলেন। এ জন্য তিনি ইচ্ছামতো ব্যবহার করেছেন তার নেতৃত্বাধীন দল জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন বা ‘জানু’কে। গণতন্ত্রের লক্ষ্যে দেশের স্বাধীনতা আসে যে দলের নেতৃত্বে, সেটিই ব্যবহৃত হলো স্বাধীন দেশে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার কারসাজিতে।
মুগাবে তার রাজনৈতিক খায়েশ পূরণ করতে গিয়ে জিম্বাবুয়ের অর্থনীতির সর্বনাশ করেছেন। গত শুক্রবার রয়টার্স জানায়, একসময় দেশটি ছিল অর্থনীতির দিক দিয়ে আফ্রিকা মহাদেশে সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাষ্ট্র। কিন্তু গত কয়েক দশকে মুগাবের কর্মকাণ্ডে অর্থনীতি ক্রমেই দুর্বল হয়ে গেছে। মুগাবে তার ‘বিপ্লবী জোশে’ শ্বেতাঙ্গ মালিকদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বলপ্রয়োগ করে রাষ্ট্রের কুক্ষিগত করেছেন। মুদ্রার নোট ছাপিয়ে উচ্চমাত্রায় মুদ্রাস্ফীতির জন্ম দিয়েছেন। তার সরকার যথেচ্ছ অর্থ ব্যয় করেছে। জিম্বাবুয়ে ১৯৯৯ সাল থেকেই ঋণখেলাপি হওয়ায় আন্তর্জাতিক কোনো উৎস থেকে মুগাবে আর ঋণ আনতে পারেননি। দেশটির বৈদেশিক দেনা দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭৫ শত কোটি র্যান্ডে।
জিম্বাবুয়ের পালাবদলে জনগণের আশা কতটা পূরণ হবে? মুগাবের বিদায়ের আগেই এ নিয়ে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল। যিনি তার স্থলাভিষিক্ত হলেন, তিনি একই দলের একই মানসিকতার আরেক নেতা। তিনি গণতন্ত্র আর সুশাসনে জিম্বাবুয়েকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা দূরের কথা, গণতন্ত্রের পথে যে বেশখানিকটা এগিয়ে দেবেন সে আশাও করা কঠিন। বরং মনে করা যায়- তিনি দীর্ঘায়ু পেলে মুগাবের মতোই দীর্ঘ দিন একচ্ছত্র শাসনদণ্ড ঘোরাবেন জনগণের ওপর। স্বেচ্ছাচারিতা আর গণবিরোধী শাসনের দিক দিয়ে তিনি হয়তো হবেন ‘পুরনো বোতলে নতুন মদ’। এ আশঙ্কা সত্য না হলে তা হবে জিম্বাবুয়ের সৌভাগ্য।
জিম্বাবুয়ের লেখক-গবেষক ড. ইনোক সি. মাদজিমিরি অনেকটা সে কথাই বললেন। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের সানডে টাইমস পত্রিকায় তিনি লিখেছেন, ‘জনগণের ধারণা হলো- মুগাবেবিরোধী অভু্যুত্থানের মাধ্যমে উদার ও গণতন্ত্রী রাজনীতির নতুন যুগের সূচনা হবে। তবে ক্ষমতার এই পালাবদল আসলে ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ দলের অভ্যন্তরীণ উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্ব ছাড়া আর কিছু নয়।’
জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনী কি দেশ-জাতির স্বার্থে এত দিনের ‘প্রভু’ মুগাবের পতন নিশ্চিত করেছে, নাকি নিজেদের গোষ্ঠী স্বার্থে ‘নতুন প্রভু’ নানগাগোয়ার জন্য পথ প্রশস্ত করতে চেয়েছে? এটা অচিরেই স্পষ্ট হবে নানগাগোয়ার ভূমিকা এবং সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া থেকে। পর্যবেক্ষকদের যা অভিমত, তাতে জিম্বাবুয়ের আকাশ থেকে স্বৈরশাসনের কালো মেঘ সরে গিয়ে গণতন্ত্রের সুবাতাস শিগগিরই বইবে বলে বেশি আশাবাদী হওয়া যায় না। জানা গেছে, রবার্ট মুগাবে নিজের স্বার্থে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। ফলে সেনাপতিরা দেখলেন, তার জায়গায় ‘সেকেন্ড ম্যান’ নানগাগোয়াকে না বসালে তাদের এত দিনের প্রভাব হারাতে হবে। তাই জনগণের ক্ষোভ, ক্ষমতাসীন দলের কোন্দল, আন্তর্জাতিক মহলের অসন্তোষ মিলে অনুকূল পরিস্থিতির ‘সদ্ব্যবহার’ করে মুগাবের বিদায় ঘটানো হলো।
স্বৈরাচারীদের পতন যখন অনিবার্য হয়ে ওঠে, তখন তার পাশে কেউ থাকে না- না নিজের স্তাবকচক্র, না এযাবৎ অনুগত এবং যথেচ্ছ ব্যবহৃত বিভিন্ন বাহিনী। এমনকি নিজের গড়া বিরাট দলের অসংখ্য নেতাকর্মীও কাজে লাগে না; বরং তাদের একটা বড় অংশই তার প্রকাশ্য বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়।
জিম্বাবুয়ের এবারের ঘটনাকে বলা হচ্ছে সেনা কমান্ডের Pre-emptive Step. আশঙ্কা করা হচ্ছে, তারা সরকার ও ক্ষমতাসীন দলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরো জোরদার করবে। সেনাবাহিনীকে এই পর্যায়ে এনেছেন মুগাবে নিজেই। একসাথে মুক্তি সংগ্রামের সুযোগে তাদের মাঝে ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি হলেও সেনাবাহিনী ক্রমেই পেশাদারিত্ব ও গণতান্ত্রিক চেতনা হারায়। মুগাবে নিজের ও দলের শাসন স্থায়ী করার জন্য প্রথম থেকেই সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে অপব্যবহার করেছেন। তাদের লেলিয়ে দিয়ে বিরোধী দলকে দমন করা হয়েছে। আশির দশকে মুগাবে সরকারের বিরোধী হওয়ার ‘অপরাধে’ কয়েক হাজার রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যা করার দায় সেনাবাহিনীও এড়াতে পারে না। ২০০৮ সালেও ২ শতাধিক রাজনৈতিক নেতাকর্মী নির্যাতন-গুম-হত্যার শিকার হয়েছেন।
সেনাবাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠতাকে নিজের ক্ষমতা সংহত করার কাজে লাগিয়েছিলেন মুগাবে। এখন হয়তো একই পথে যাচ্ছেন মুগাবের শীর্ষস্থানীয় শিষ্য নানগাগোয়া। তিনি নিষ্ঠার সাথে মুগাবের অপশাসনের যথাসাধ্য সহায়তা করে মুগাবের আস্থা অর্জন করে ভাইস প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত হয়েছেন। সম্প্রতি মুগাবে স্ত্রীকে উত্তরাধিকারী করার উদ্দেশ্যে নানগাগোয়াকে সরিয়ে দেন। এতে দলীয় কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং নানগাগোয়া ‘জাতির ত্রাতা’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। কিন্তু মুগাবের মতো একই মানসিকতার অধিকারী হয়ে তিনি কি জাতির প্রত্যাশা পূরণ করবেন অথবা তা চাইবেন? নানগাগোয়া ক্ষমতা হাতে নিয়েই বলেছেন ‘গণতন্ত্রকে সুসংহত করা’র কথা। এর বদলে নিজের ক্ষমতা সুসংহত করতে চাইলে তা হবে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। তিনি ‘নতুন ধারার গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। এটা শুনে উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত হতে হয় অতীত অভিজ্ঞতায়। কারণ দেশে দেশে ডান-বাম স্বৈরাচারী শাসকেরা ক্ষমতায় গিয়ে নানা টাইপের ‘গণতন্ত্র’ উদ্ভাবন ও প্রচলন করেছেন। জনগণতন্ত্র, শোষিতের গণতন্ত্র, মৌলিক গণতন্ত্র, নয়াগণতন্ত্র, দেশীয় গণতন্ত্র প্রভৃতির কথা বলে প্রকৃত গণতন্ত্র থেকে জাতিকে বঞ্চিত করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।
আগামী বছর জুলাই মাসে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন। এ জন্য জনগণের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশামাফিক, সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকা জরুরি। নানগাগোয়া এ দায়িত্ব পালনের বদলে মুগাবের মতো একদলীয় শাসনের মাধ্যমে একনায়ক হওয়ার স্বপ্নে নির্বাচনী প্রহসনের প্রস্তুতি নিলে দেশটির ভবিষ্যৎ অনির্দিষ্টকাল অন্ধকারে নিমজ্জিত থেকে যাবে।
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন