|
মীযানুল করীম
test@gmail.com |
|
এখন মুসলিম বিশ্ব কী করবে?
09 December 2017, Saturday
গাজা উপত্যকার রাফা শহরের রাজপথ। ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীরা পোড়াচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ছবি। পাশে একটি ব্যানারে আরবিতে যা লেখা, এর অর্থ : ‘আল কুদস (জেরুসালেম) ফিলিস্তিনের রাজধানী।’ এমনকি হজরত ঈসা আ:-এর জন্মস্থান যে বেথলেহেম, ইসরাইলের দখলকৃত সেই এলাকায়ও বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা ট্রাম্পের প্রতিকৃতি পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানালেন। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বের খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু পোপ পর্যন্ত মার্কিন দূতাবাস জেরুসালেমে নেয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে গভীর উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু একগুঁয়ে ও বর্ণবাদী হিসেবে সমালোচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প সবার নিন্দা-প্রতিবাদকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তেলআবিব থেকে পবিত্র জেরুসালেম নগরীতে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তা ঘোষণা করেছেন। এর বাস্তবায়ন থেকে হোয়াইট হাউজ পিছপা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এভাবে ইহুদি তোষণকারী ও মুসলিমবিদ্বেষী হিসেবে আবার নিজেকে প্রমাণ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো বিতর্কিত হলেন। তবে তিনি কিংবা তার দল বিশ্বজুড়ে তাদের নিন্দা ও সমালোচনার কোনো তোয়াক্কা করেন না। যখন আরব জগতে অনৈক্য-সঙ্ঘাত-যুদ্ধ-হানাহানি মিলে অভাবনীয় পরিস্থিতি, ঠিক তখনই ট্রাম্প ইসরাইলকে খুশি করলেন জেরুসালেমে দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে। এটা আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, ইহুদিতোষণ ও মুসলিমশোষণের দীর্ঘ ধারাবাহিকতার পরিণামে এভাবে আমেরিকার নীলনকশার আরেকটি অধ্যায় হচ্ছে উন্মোচিত।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইসরাইলস্থ মার্কিন দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলো। প্রায় ৭০ বছর আগে ফিলিস্তিনের বুকে সম্পূর্ণ অবৈধ ও অস্বাভাবিক ইহুদিবাদী রাষ্ট্ররূপে ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করেছিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন মিলে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ও খ্রিষ্টান অধ্যুষিত পাশ্চাত্য জগৎ অব্যাহতভাবে ও ক্রমবর্ধিত হারে ইসরাইলের লালন-পালন-পরিপোষণের ভূমিকায় তৎপর রয়েছে। তাদের সর্বাত্মক মদদের ফলে ইসরাইল আরবভূমি গ্রাস ও জবরদখল, ফিলিস্তিনিদের জাতিগত নির্মূল অভিযান, ইহুদিদের অবৈধ বসতির বিস্তার প্রভৃতির মাধ্যমে অনবরত চালিয়ে এসেছে আধিপত্যবাদী তৎপরতা। ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের ক্রমশ সম্প্রসারণ ও শক্তি বৃদ্ধি (পারমাণবিক মারণাস্ত্র অর্জনসহ) দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনামাফিক ঘটেছে। তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইসরাইলের ত্রাতা ও অভিভাবকের ভূমিকা পালনের সর্বাত্মক কর্মকাণ্ডও সুদূরপ্রসারী ব্লুপ্রিন্টের আওতায় পরিচালিত।
তবুও জেরুসালেমে দূতাবাস স্থানান্তর নিয়ে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য মার্কিন প্রশাসন প্রয়াস চালিয়ে গেছে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। যেমনÑ ট্রাম্পের এই ঘোষণার ঠিক আগে হোয়াইট হাউজ জানায়, ‘না, তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি।’ অথচ সবার কাছে স্পষ্ট, এই সিদ্ধান্ত মার্কিন সরকার অনেক আগেই নিয়ে কেবল ‘উপযুক্ত সময়’-এর অপেক্ষায় ছিল ঘোষণা দেয়ার জন্য। আসলে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ, তুরস্ক, জর্দানÑ এমনকি পাশ্চাত্যের অন্যতম বৃহৎশক্তি ফ্রান্সের তীব্র বিরোধিতা ও হুঁশিয়ারির মুখে হোয়াইট হাউজ ওই কথা বলে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু এরপরই ঘোষণা এলো, ‘মার্কিন দূতাবাস জেরুসালেমে স্থানান্তরিত হবে।’ মার্কিন প্রশাসনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রয়াসে মিডিয়াও অনেক ক্ষেত্রে বোকা বনে যায়। বাংলাদেশেও তাই কোনো কোনো পত্রিকায় বিরাট হেডিং দেখা যায় বুধবারÑ ‘ট্রাম্পের পশ্চাৎপসারণ’। বাস্তবে তিনি মোটেও পিছু না হটে সে দিনই ঘোষণা দিলেন তেলআবিবের দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়ার। সর্বশেষ তথ্য হলো, আমেরিকা জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিচ্ছে দূতাবাস সেখানে নেয়ার আগেই। এ ক্ষেত্রে মূল বিষয় হলো, আল কুদসের পাদপীঠ জেরুসালেমকে ইহুদি রাষ্ট্রটির রাজধানীরূপে স্বীকার করে নেয়া। আমেরিকা এটা করলে তখন দূতাবাস সেখানে স্থানান্তর করা অনিবার্য এবং সময়ের ব্যাপার মাত্র। ইসরাইল অনেক আগেই তার মহাপরিকল্পনা মোতাবেক রাজধানী জেরুসালেমে নিয়ে গেছে। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অনেকেই আজো এর স্বীকৃতি দেয়নি। এর একটা কারণ, জাতিসঙ্ঘের আপত্তি; আরেক কারণ- বিশ্ববাসীর বিরোধিতা। তবে ধর্মীয়, নৈতিক ও আদর্শিক কারণে তথা মজলুম ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি দরদের ফলে রাজধানী প্রশ্নে ইসরাইলের বিরোধিতাকারী রাষ্ট্রের সংখ্যা খুব বেশি নয়। বিশ্বসংস্থা জেরুসালেমের বিশেষ মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে বলে পোপ ফ্রান্সিস সবাইকে জাতিসঙ্ঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুসালেমে দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগের দিন পোপ এই বক্তব্য দেন।
আরববিশ্ব তথা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এবং সে ব্যাপারে মার্কিন মনোভাবের উল্লেখ করা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। হোয়াইট হাউজ যখন রাজধানীর মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও ইসরাইলকে দৃঢ়তার সাথে মদদ দিচ্ছে, তখন এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থরক্ষায় ইসরাইলের অপরিহার্যের কথাই বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে।
মিডিয়ার খবর, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে- বর্তমান বিশ্বে তার তিন ধরনের দুশমন আছে : উচ্চ, মধ্য ও নিম্নমাত্রার বৈরী শক্তি। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও সিরিয়া হলো আমেরিকার উচ্চমাত্রার প্রতিপক্ষ। ওয়াশিংটনের দৃষ্টিতে- শুধু বিপুল জ্বালানি সম্পদ নয়, ভূরাজনৈতিক তৎপরতার কারণে ইরান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরান ও ইসরাইলের পরস্পর তীব্র বিরোধী অবস্থানে ইরানই ইসরাইলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এর পাশাপাশি ইরান ও রাশিয়ার সাথে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক এবং কৌশলগত অবস্থান, ইসরাইলসংলগ্ন সিরিয়াকে আমেরিকার প্রথম সারির শত্রুরাষ্ট্র বানিয়েছে। ইসরাইল ঘোষণা দিয়েছে, শিগগিরই সিরিয়ায় ইরানি সৈন্যদের ওপর ইসরাইল হামলা চালাবে। যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় কাতারের শত্রুদের মধ্যে ইসরাইলসংলগ্ন লেবাননের নাম আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সবার আগে। লেবানন আয়তন ও জনসংখ্যায় ছোট হলেও ভূমধ্যসাগরতীরবর্তী অবস্থান এবং বিশেষত ইরানসমর্থিত হিজবুল্লাহ মিলিশিয়ার ক্রমবর্ধমান শক্তিমত্তা ও প্রভাবের দরুন দেশটির গুরুত্ব আমেরিকা ও ইসরাইলের কাছে অনেক বড়। ইয়েমেন ইসরাইল থেকে কিছুটা দূরবর্তী ও দরিদ্র দেশ হলেও ইরানসমর্থিত হাউছি বিদ্রোহীদের দাপট ইসরাইলের দুশ্চিন্তার কারণ। তদুপরি, সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ সালেহ এদের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনা পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ করে তুলেছে।
যে পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র জেরুসালেমে দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার মাধ্যমে ইসরাইলের দখলদারি ও আগ্রাসনসহ যাবতীয় অন্যায়-অপরাধকে বিরাট উসকানি দিচ্ছে, তার বর্তমান চিত্র সংক্ষেপে তুলে ধরা প্রয়োজন। মধ্যপ্রাচ্যে আরব বা মুসলমান দেশগুলোর অনৈক্য, হানাহানি, পারস্পরিক বিদ্বেষ ও বিষোদগার বেড়েছে। ইসরাইলের প্রধান দুশমন হিসেবে অভিহিত ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তি বাতিল এবং আবার অবরোধের পশ্চিমা উদ্যোগের সম্ভাবনা বাড়ছে। সিরিয়ায় ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে ব্যাপক রক্তপাত রয়েছে অব্যাহত। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিভেদ দূর হয়ে ঐক্যের সূচনালগ্নেই ইসরাইল তার দমন-পীড়ন বাড়িয়ে দিয়েছে। ইরাকের কুর্দিস্তানে গণভোটের কার্যকারিতা স্থগিত থাকলেও ইসরাইল সেখানে যুদ্ধবিমান নিয়ে উপস্থিত। ইয়েমেনে বিদ্রোহ আর বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপের পরিণতিতে হত্যাযজ্ঞের সাথে কলেরা মহামারী ও দুর্ভিক্ষ চলছে। কাতার ইসু্যুতে আরব ঐক্যে বিরাট ফাটলের পর এখন উপসাগরীয় দেশগুলো দ্বিতীয় দফা বিভাজনের সম্মুখীন। সৌদি আরবে শাসনক্ষমতার পরিবর্তনের প্রাককালে বড় কিছু ঘটনা অস্থিতিশীলতার শঙ্কাও তৈরি করেছে। সিনাই বদ্বীপে উগ্রবাদের ভয়াল বিস্তারে ধ্বংস ও প্রাণহানি ব্যাপক। লেবাননে আবার ইসরাইলসহ বাইরের শক্তির অবৈধ হস্তক্ষেপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ দিকে, একাধিক প্রভাবশালী আরব দেশের সাথে ইসরাইলের যৌথ গোয়েন্দা তৎপরতার খবর প্রকাশ পেয়েছে। সব মিলিয়ে আরববিশ্বের টালমাটাল দশা আর মুসলিম উম্মাহর সমূহ সঙ্কটের সুযোগে ইসরাইল এবং তার পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্র নীলনকশা রূপায়ণে এগিয়ে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আরবসহ মুসলিম বিশ্ব কী করবে? তারা কি নিছক নীরব দর্শকের ভূমিকায় থেকে অসহায়ত্ব প্রকাশ করবে? নাকি আফসোস-আহাজারির মধ্যে প্রতিক্রিয়া সীমিত রেখে কাদা ছোড়াছুড়ি অব্যাহত রাখবে? আজ আরব লিগ এবং ওআইসির সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ সমুপস্থিত। তা মোকাবেলায় সাহস, প্রত্যয় ও নিষ্ঠা তাদের আছে কি না, অচিরেই বিশ্ববাসী তার প্রমাণ পাবে।
আমাদেরকে জানতে হবে ইহুদিবাদসহ সব আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও দেশীয় চক্রান্তের ধরন, লক্ষ্য, পটভূমি ও হোতাদের সম্পর্কে। মনে রাখা চাই, ইহুদি ধর্ম (Judaism) ও ইহুদিবাদ (Zionism) এক নয়। তেমনি এক নয় খ্রিষ্টানদের ধর্ম ও খ্রিষ্টবাদ কিংবা ব্রাহ্মণ ও ব্রাহ্মণ্যবাদ। একটি নিছক ধর্মের ব্যাপার, অন্যটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অনুসৃত, চক্রান্তমূলক ও সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ।
এবার বিশ্বের প্রধান বৃহৎশক্তিটি জেরুসালেমে দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কুখ্যাত ‘বালফোর ঘোষণা’র শতবর্ষ পূর্তির সময়েই এভাবে আল কুদসের ওপর ইহুদি দখলদারির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হলো। এটা ফিলিস্তিনের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের মারাত্মক অবমাননা ও ইহুদিতোষণের বিপরীতে আরবদের প্রতি চরম চপেটাঘাত তো বটেই। সর্বোপরি আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও ধর্মীয় অধিকারের নগ্ন লঙ্ঘন। ইসরাইল ১৯৪৮ সালে জন্মমুহূর্ত থেকেই অনবরত জাতিসঙ্ঘের গৃহীত প্রস্তাব তথা বিশ্বসংস্থার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে আসছে এর সদস্য হয়েও। এখন দেখা যাচ্ছে, জাতিসঙ্ঘের আহ্বান উপেক্ষা করে পবিত্র জেরুসালেম নগরীর বিশেষ মর্যাদা নস্যাত করতে উঠেপড়ে লেগেছে খোদ যুক্তরাষ্ট্র। স্মর্তব্য, ঠিক ১০০ বছর আগে ১৯১৭ সালে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড বেলফোর ফিলিস্তিনের আরবভূমিতে ইহুদিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা প্রথম দিয়েছিলেন।
একটি বই ও কিছু কথা
বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকের কথা। আমি তখন স্কুলের ছাত্র। বড় ভাইয়ের কেনা একটি বইয়ের প্রচ্ছদে চোখ পড়ল। বইটির নাম ‘ইহুদি চক্রান্ত’। বাংলায় অনূদিত মাঝারি সাইজের এই বইয়ের প্রচ্ছদের এ মাথা ও মাথাজুড়ে একটি সাপের ছবি। সাপটি এঁকেবেঁকে বেষ্টন করে আছে মূল আরব উপদ্বীপ বা জাজিরাতুল আরবের বিরাট অংশ এবং এর সংলগ্ন ফিলিস্তিন, লেবানন, জর্দান, সিরিয়া প্রভৃতি দেশের প্রায় পুরোটাই। ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত বিশাল আরব ভূখণ্ড এই সাপের কুক্ষিগত। যতটা মনে পড়ে, পবিত্র মক্কা-মদিনা কোনো মতে এর গ্রাসের বাইরে থাকার চিত্রও ছিল এতে। এই সাপ হলো হিংস্র কুটিল ও চক্রান্তে পারঙ্গম ইহুদিবাদ, যার মূল টার্গেট ইসলাম ও মুসলমান। সে বইয়ে তুলে ধরা হয়েছিল আন্তর্জাতিক ইহুদিচক্রের কিছু গোপন দলিল ও সিদ্ধান্ত। আধুনিক যুগে ইহুদি ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিশেষত ১৮৯৭ সালে আন্তর্জাতিক ইহুদি কংগ্রেসে থিওডোর হারজেলের প্রাসঙ্গিক বক্তব্যের মাধ্যমে। বইটির বক্তব্য আজ আর মনে নেই হুবহু। এটি এখন বাজারে পাওয়া যায় কি না জানি না। এতে উল্লিখিত সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য বাস্তবায়নের মহাষড়যন্ত্রই ইহুদিবাদীরা ধাপে ধাপে রূপায়িত করছে। এরই একটি বড় ধাপ হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের প্রথম কিবলা, পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস বা আল-আকসার ঐতিহাসিক পীঠস্থান জেরুসালেমে ইসরাইলের রাজধানী প্রতিষ্ঠা। সে মোতাবেক ইসরাইলের মুরব্বি ও মদদগার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নিচ্ছে।
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন