গতকাল ছিল মহান স্বাধীনতা দিবস। কী করে যে দিন-মাস-বছর যায় ভাবাই যায় না। এ যেন বহতা নদীর মতো। কখনো কখনো মনে হয় এই তো সেদিন মুক্তিযুদ্ধে গেলাম। কত চড়াই-উতরাই কত দুঃখ-কষ্ট ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনাবিল আনন্দে সব ধুয়ে-মুছে গেল। প্রতিটি জাতির জন্য স্বাধীনতা বড় বেশি আরাধ্য। পৃথিবীজোড়া কত জাতি, কিন্তু সবাই স্বাধীন নয়। স্বাধীনতা আত্মার এক অনাবিল মুক্তি। সব জাতি সব সময় স্বাধীন থাকে না। কোনো কোনো জাতি কখনো কখনো স্বাধীন হয় আবার আগ্রাসীদের অধীনে চলে যায়—এটাই চক্রাকারে চলে এসেছে শত শত বছর। অনেকে স্বাধীনতা ধরে রাখতে পারে না। আমরাও অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গের মানুষ কখনো-সখনো স্বাধীন হয়েছি, কোনো সময় নামে মাত্র আবার কোনো সময় প্রকৃতই স্বাধীন। কিন্তু পরাশক্তির হিংস্র থাবায় আমরা তা বেশি দিন ধরে রাখতে পারিনি, আবার পদানত হয়েছি। চেঙ্গিস খাঁ, হালাকু খাঁ, নাদির শাহ আমাদের পরাভূত করেছে। সুলতানি আমলে আমরা পরাভব মেনেছি। এসেছে পাঠান-মোগল-ইংরেজ-পাকিস্তান। অন্তরাত্মা থেকে পরাধীনতা না মানলেও আমরা পরাধীন থেকেছি বারবার। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গৌরবময় স্বাধীনতাই আমাদের একমাত্র অহংকার করার মতো অর্জন। কত আশা ছিল, এত রক্তে অর্জিত দেশ দানবের নয়, হবে মানবের। কিন্তু আজ নিজেকে কিছুটা অসহায় মনে হয়। আমাদের কত কিছু আছে! রাস্তা-ঘাট, দালানকোঠা সুন্দর সুন্দর ঘর-বাড়ি, সাগরে-আকাশে জাহাজ কোনো কিছুর অভাব নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষ দিশাহারা। ২২ পরিবারের বঞ্চনার হাত থেকে মুক্ত হতে গিয়ে আজ শত শত ২২ পরিবারের হাতে আমরা বন্দী। তখন তবু ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলা যেত, রুখে দাঁড়ানো যেত। নাম গোত্রহীন এখনকার শত শত ২২ পরিবার নিয়ে কথা বলাও যায় না। এখন বিত্তই তাদের করায়ত্ত নয়, রাজনীতি, প্রশাসন সবই তাদের দখলে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে দীর্ঘ নির্বাসন কাটিয়ে নব্বইয়ের ১৬ ডিসেম্বর যখন দেশে ফিরি তখন ২৬ মার্চ সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সারা দেশের মানুষ ভেঙে পড়ত। কিন্তু কেন যেন এখন তেমন হয় না। এবার বড় বেশি কম লোকজন হয়েছে। মানুষের মধ্যে সেই উন্মাদনা, সেই আকুতি নেই। বাংলাদেশের পতাকা হাতে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে কাঁধে বাবা-মায়েরা এখন আর আগের মতো আসে না। কোথায় গেল স্বাধীনতার শহীদদের প্রতি সেই দুর্নিবার আকর্ষণ। মাঝে মাঝে যখন ভাবি মনটা কেন যেন ভারী হয়ে আসে।
আজকাল যারা বড় বড় টেবিল-চেয়ার জাঁকিয়ে বসেছেন বাংলাদেশ না হলে তারা সেসব চেয়ারে বসা তো দূরের কথা, দুচোখে দেখতেও পেতেন না। আজ যারা সচিব তারা অনেকেই সচিবের ঘরের বাইরে টুলে বসতেন। এসপি, ডিসি সবার একই রকম হতো। মানুষ কি এ জন্য রক্ত দিয়েছে, যুদ্ধ করেছে, দেশ এমন চলার জন্য কি তারা শহীদ হয়েছে? শহীদের কাছে আমাদের জবাব কী? চারদিকে কোনো আলো নেই। কেমন যেন ঘুটঘুটে অন্ধকার।
সেদিন টাঙ্গাইলের এসপি মাহবুবকে নিয়ে দুকথা বলেছিলাম। তার বাবাও আমার বয়সী কিনা জানি না। ভদ্রলোক তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছেন। আমাকে দেখে নেওয়ার আস্ফাালন করেছেন। তার কি ওসব শোভা পায়? একটা এসপির কত ক্ষমতা, তারা কত ক্ষমতাধর কখনো বুঝতে পারি না। একবার টাঙ্গাইলের পথে বঙ্গবন্ধুর গাড়ি থেকে ঢাকার এসপি মাহাবুবকে নামিয়ে দিয়েছিলাম। তিনিও দেখে নিতে চেয়েছিলেন। পিতা থাকতে সন্তানের ভয় কী? তাই কোনো ভয় করিনি। এখন পিতা-মাতাহীন এতিম, ভয় তো কিছু করেই। ঢাকার এসপি মাহাবুব অত্যন্ত সুন্দর মানুষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা। যখন বুঝেছিলেন, আমাকে দেখে নেওয়ার ইচ্ছা তার ঠিক হয়নি, দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু এআইজি প্রমোশন নিয়ে টাঙ্গাইল থেকে বিদায় নেওয়া জনাব মাহবুবের ক্ষমতার উৎস কোথায়? নিশ্চয়ই খুঁজে দেখতে হবে। আমি তার সম্পর্কে যে অভিযোগ শুনেছি তা ছিল পুলিশে নিয়োগের কয়েকদিন আগে প্রমোশন পেয়ে বদলি হয়েছিলেন। নিয়োগ বাণিজ্যের জন্য বলে-কয়ে বদলি ঠেকিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের দুই দিন পর বিদায় হয়েছেন। খাতাপত্র দেখলেই বোঝা যাবে অমনটা হয়েছে কিনা। এতে চেঁচামেচির কী আছে? অভিযোগ ছিল লৌহজং নদী ভরাট করে এসপি পার্ক করেছেন। ফেসবুকে কয়েকজন তাকে পছন্দও দিয়েছে তিনি এসপি পার্ক করে টাঙ্গাইলের মানুষের কাছে অমর হয়ে থাকবেন। দালালের পছন্দ আর মানুষের পছন্দ এক নয়। হুজুর মওলানা ভাসানী, জননেতা শামসুল হক, জননেতা আবদুল মান্নান, লতিফ সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আল মুজাহিদী, ফজলুল করিম মিঠু, ফজলুর রহমান খান ফারুক কত বড় বড় সংগ্রামী নেতা, যারা আইয়ুব-মোনয়েমকে তাড়িয়ে বাংলাদেশ বানিয়েছেন তাদের স্মরণ করে না, এক ছাপোষা এসপিকে স্মরণ করবে, এটা কোনো বেয়াক্কেলও বিশ্বাস করবে না। জেলখানার পাশ থেকে পুলিশ লাইন হয়ে জেলা সদরের সীমানা পর্যন্ত বিশাল লৌহজং নদী ভরাট করে এসপি পার্ক বানিয়েছেন। দুদক খুঁজে দেখলেই পারে, এসপি পার্ক বানানোর জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ ছিল কিনা? কোনো সরকারি কর্মকর্তার নামে পার্ক বানাতে বরাদ্দ দেওয়া যায় কিনা। সরকার নদী উদ্ধার এবং খননের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। টাঙ্গাইলের এসপি কার ছেলে যে সমস্ত আইন-কানুন বিধি-বিধান ভেঙে তার নামে পার্ক বানাতে লৌহজং নদী ভরাট করতে হলো। টাঙ্গাইলেই নজির আছে, পার্কের কাছে বেড়াডোমায় টাঙ্গাইলের ডিসি ওই লৌহজং নদী প্রশস্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। টাঙ্গাইল জেলায় ৭২ কিলোমিটার লম্বা লৌহজং নদী, তার আধা কিলোমিটার তিনি চমৎকার সুন্দর করেছিলেন। মাত্র এক-দেড় কিলোমিটারের মধ্যে একস্থানে সরকারি অর্থ ব্যয়ে প্রশস্ত করা, অন্যখানে এসপির জন্য ভরাট করা এটা কেমন কথা! দুদক কি একটু খোঁজ-খবর নিতে পারে না? স্বাধীনতার পরপর জননেতা আবদুল মান্নান মন্ত্রী হয়ে টাঙ্গাইল গেলে তাকে যে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল তার চাইতে বড় করে এসপি মাহবুবকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা দিয়েছে, সাংবাদিকরা দিয়েছে, গণসংবর্ধনাও নাকি দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যমণি ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবীণ নেতা ফজলুর রহমান খান ফারুক। ফজলুর রহমান খান ফারুক আমাদেরও নেতা। কিন্তু কী করে তিনি এসব করেন ভাবতে কষ্ট হয়। কদিন আগে হজ করেছেন, তারপরও এসব করেন। তা করুন, সেটা তার ইচ্ছা। যার এর মধ্যে ১০ বার মন্ত্রী হওয়ার কথা, ভাগ্য তাকে মন্ত্রী হতে দেয়নি সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু লতিফ সিদ্দিকী, আল মুজাহিদীর বন্ধু ফজলুর রহমান খান ফারুকের মতো মানুষের একজন এসপিকে স্যার বলে তার বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা টাঙ্গাইলের মানুষ ভালো চোখে দেখেনি। অভিযোগ রয়েছে তুলসী পাতার মতো পূত-পবিত্র এসপি মাহবুবের সময় টাঙ্গাইলে পুলিশে লোক নিতে দর উঠেছিল ১৫-২০ লাখ। চারাবাড়ি, পোড়াবাড়িতে ইসমাইল হোসেন সিরাজীর এসডিএসের বিশাল সম্পত্তি কয়েকজন মিলে হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা, একটু খুঁজে দেখলে দোষ কী। আর কোন সাহসে আমার মতো মানুষ সম্পর্কে তিনি অমন বলেন তাও দেখা দরকার। আমার মতো মানুষকে যদি নাস্তানাবুদ করার ইচ্ছা করতে পারেন তাহলে সাধারণ মানুষকে কি করতে পারেন একটুও কি চিন্তা করে দেখা উচিত না?
সেদিন চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এক বুক দরদ নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে হবে। তাদের নাতি-পুতি কেন, দরকার পড়লে আরও যেতে হবে। যারা দেশ বানিয়েছে তাদের সম্মান করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ না বানালে আমাদের কারও কোনো ঠাটবাট থাকত না। তাই তাদের শ্রদ্ধা করতে শিখুন। শহীদি আত্মার মর্যাদা দিন।’ যেসব সরকারি কর্মকর্তা এত গরিমা দেখান তারা কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর থেকেও ক্ষমতাবান বা শক্তিশালী? নিশ্চয়ই এসবের বিচার করার সময় এসেছে। নদী ভরাট করায় যার শাস্তি হওয়া উচিত, সে কিনা পুরস্কারের দম্ভ করে। নিশ্চয়ই সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন ঔদ্ধত্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে সজাগ। নিশ্চয়ই তারা ব্যবস্থা নেবে। এ নিয়ে আমার তেমন মাথা ঘামানোর প্রয়োজন কী।
সেদিন পত্রিকায় দেখলাম আসামের এক বিধায়ক বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের সময়ই ভারতের অঙ্গরাজ্য বা দখল করে না নিয়ে ইন্দিরা গান্ধী মারাত্মক ভুল করেছেন।’ কুয়োর ব্যাঙ সমুদ্রের খবর নিয়ে লাফালাফি করে লাভ কী? আসামের বিধায়কের বয়স কত, জ্ঞান-গরিমা কি কিছুই জানি না। কিন্তু এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, পাকিস্তান আর্মির চেয়ে ভারতীয় আর্মি কখনো খুব বেশি সাহসী, সবল বা দক্ষ ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের আগে ভারতীয় বাহিনীর ঝুড়িতে খুব একটা বড়সড়ো সাফল্য ছিল না। আর ভারতীয় বাহিনী কখনো বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেনি। যারা রেখেছিল তারা ভারতীয় নয়, তারা মিত্রবাহিনী। যৌথ কমান্ডের অধীন বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে, রক্ত দিয়ে পাকিস্তানিদের নাস্তানাবুদ করে ফেলেছিল। তাই মিত্র বা যৌথ বাহিনীকে তেমন যুদ্ধ করতে বা রক্ত দিতে হয়নি। স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশ দখল করে নিতে চাইলে সেটা অসম্ভব ছিল। তখন আমাদের দখল করে নেওয়ার মতো শক্তি-সামর্থ্য কোনোটাই ভারতের ছিল না। আর পশ্চিমবঙ্গ যতকাল থাকবে ততকাল ভারতের সাধ্য নেই বাংলাদেশকে দখল করে ভারতের সঙ্গে একাকার করে।
ভদ্রলোকের বাড়ি আসাম। তাই তলিয়ে দেখেননি ভারতের জন্য বাংলাদেশ কত বড় মহান প্রতিবেশী। ভালোভাবে সম্মানের সঙ্গে থাকলে এমন ভালো প্রতিবেশী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু দখল নিতে চাইলে, এক রাষ্ট্র বানাতে গেলে বিপদের শেষ থাকবে না। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু, বল্লভ ভাই প্যাটেল খুব একটা বিদ্যা-বুদ্ধিহীন ছিলেন না। পণ্ডিত নেহরুর মতো দার্শনিক ভূ-ভারতে খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা অনেক আগেই পূর্ববঙ্গ নিয়ে নিতে পারতেন। কেন নেননি একটু ভেবে দেখা দরকার। আসামের বিধায়ক বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে নিয়ে নিতে চান। যদি তাই হতো, তখন তিনি আসামের বিধায়ক হতেন না। আমরা ২০ কোটি, দুই-তিন কোটি অহমিয়া আমাদের কাছে পাত্তাও পেত না। মেঘালয় তাদের অবস্থাও আমাদের কাছে খুব একটা সবল হতো না। সেদিন আমাদের চাঁদপুরের রিফুজি বিপ্লব কুমার দেব ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। বাংলাদেশ দখল নিলে কখনো মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী হতেন না, সেটা হতেন কোনো মুসলমানের ছেলে বা মেয়ে। এখন পশ্চিমবঙ্গে ৪২ সিট। পশ্চিমবঙ্গের সেই ৪২ সিটের দাপটে দিল্লি কাঁপে। সেখানে ইন্দিরা গান্ধী যদি বাংলাদেশ দখল করে নিতেন আর আমরা যদি তা মেনে নিতাম তাহলে বাংলার সিট হতো ১১৫-২০। ৮০-৮৫ সিটের উত্তরপ্রদেশ ভারত শাসন বা পরিচালনা করেছে একনাগাড়ে ৪০-৪২ বছর। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে থাকলে বা দখল করে নিলে দিল্লির কী হতো? ত্রিপুরা-আসাম-মেঘালয়-বিহার-পশ্চিমবঙ্গ-উড়িষ্যা এই অঞ্চলের আলাদা ভূ-রাজনীতি হতো, সেটা হজম করা সহজ হতো না। জনাবকে কি বলি, স্বাধীনতার পর পর বিহারের রাঁচি পাগলা গারদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরু গিয়েছিলেন। পাগলা গারদের এক বাসিন্দা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘তুমি কে?’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমার নাম জওহর লাল নেহরু, আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী।’ পাগল একগাল হেসে বলেছিল, ‘নতুন নতুন এলে সবাই ওরকম বলে। নিজেকে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ভাবে। এখানে কদিন থাকলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’ তবে কি মাননীয় বিধায়ককে তেমন বলব? বলতে পারলেই হয়তো ভালো হতো।
লেখক : রাজনীতিক।
উৎসঃ বিডি-প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন