গতকাল আমার এক ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা শোলা প্রতিমার আবদুল আউয়াল সিদ্দিকীর ছোটভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল সালাম সিদ্দিকী ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মানুষটা বড় নিবেদিত দেশপ্রেমিক ছিলেন। এমন দরদি মানুষ এখন খুব কম পাওয়া যায়। তার জানাজায় শরিক হয়ে বুকটা বড় বেশি ভারী হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ তাকে বেহেশতবাসী করুন এবং পরিবার-পরিজনকে শোক সইবার শক্তি দিন। সেদিন সখীপুরে এক অসাধারণ ছাত্র আন্দোলনের সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলনে গিয়ে বহুদিন পর ভীষণ অভিভূত হয়েছি। এখন ছাত্রলীগ, ছাত্রদল বা আরও আরও ছাত্র সংগঠনে তেমন কোনো ছাত্র নেই। সব অছাত্রের কারবার। কৃষকের নামগন্ধ নেই— কৃষক সংগঠন। আর যে দেশ মূলত কৃষক শ্রমিক ছাত্র যুবকের রক্ত-ঘামে সৃষ্টি, সে দেশে শ্রমিকের দুরবস্থা দেখে ভিরমি খেতে হয়। ঠিক সেই সময় সখীপুর ছাত্র আন্দোলনের সম্মেলন আমাকে খুবই উৎসাহিত করেছে। ছাত্রদের সামনে আমাদের প্রধান বক্তব্য ছিল বিবাহিত, অছাত্র ও নেশাখোরের কোনো স্থান নেই ছাত্র আন্দোলনে। ছাত্র আন্দোলন করবে প্রকৃত তরতাজা ছাত্ররা। দেশ ও জাতি নেশার আবর্তে যেভাবে বন্দী, তাতে সরকার এবং সমাজপতিরা যাই বলুন বা করুন এখান থেকে উঠে আসতে না পারলে কোনো নেতা-নেত্রী বা দল— জাতির কোনো কল্যাণ করতে পারবে না। বর্তমান ঘূর্ণিপাকে নিমজ্জিত দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করতে এক মহা জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। দেশটা যে সব মানুষের— এ চিন্তা-চেতনা-চৈতন্য সবার মধ্যে ফুলের সুবাসের মতো ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এখনো অনেকে শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত।
এই তো সেদিন জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে এলেন। প্রায় সবার বক্তব্য এক ও অভিন্ন। তারা সবাই রোহিঙ্গাদের দুর্দশায় মর্মাহত। সবাই রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করতে চান। ওআইসির প্রতিনিধিদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারের প্রতি চাপ বৃদ্ধি করতে হবে। কথাটা যথার্থ হলেও যাদের বলেছেন বা বলার চেষ্টা করছেন সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা কেন যেন সমগ্র জাতির কথা না হয়ে শুধু তার একার কথা বলে মনে হয়েছে। কোনো কোনো বিপর্যয়ে সমগ্র জাতিকে একত্রে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। সেটা যখন কেউ করে বা করতে পারে সে তখন আর একক ব্যক্তি থাকে না। সে তখন জাতি, দেশ ও মানবতার কণ্ঠ হয়ে যায়। যেমনটা ১৯৭০-’৭১-এ বঙ্গবন্ধু হয়েছিলেন। তিনি কাউকে বাদ দিয়ে অগ্রসর হননি। সবাইকে নিয়ে অগ্রসর হয়েছিলেন। হিমালয়ের চূড়ায় উঠে নিচের খড়কুটো ভুলে যাননি। তারপরও তাকে আমরা যথাযথ সম্মান দিতে পারিনি, তাকে হত্যা করে এপার থেকে ওপারে পাঠিয়েছি। সেই মহান নেতার কন্যা, তার আরও মহান হওয়ার কথা। কিন্তু কেন যেন পদে পদে তার মাহাত্ম্যকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র করে তুলেছেন। নিজেদের ব্যর্থতা কেউ যদি দেখতে না পেয়ে শুধু শুধু অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপায়, তার যে কি খারাপ পরিণতি হতে পারে অনেকেই তা সময় থাকতে বুঝতে পারে না। ক্ষমতা খুবই ক্ষণস্থায়ী। এটা যখন যার কাছে থাকে ততক্ষণই শুধু তার। কারও হাতে যখন ক্ষমতা আসে তখন দিগ্বিদিক কাঁপিয়ে মেঘের গর্জনে সিংহের বিক্রমে সবাইকে জানিয়ে আসে। কিন্তু সে যখন চলে যায় তখন এমন সন্তর্পণে যায় ক্ষমতাবান নিজেও তা বুঝতে বা জানতে পারে না কখন তার সব ক্ষমতা চলে গেছে। কোনো ক্ষমতাবান ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ক্ষমতায় থেকে যা করে সে তাই ঠিক মনে করে। কিন্তু ক্ষমতাহীন হয়ে সে বহু ভুলত্রুটি দেখতে পায়। কিন্তু তখন তার আর কিছুই করার থাকে না। কখনোসখনো মনে হয় জননেত্রী শেখ হাসিনার পরেই আওয়ামী লীগের শক্তিস্তম্ভ অনভিজ্ঞ অরাজনৈতিক এক সাবেক সচিব। মহিলারা যেমন সব রান্নায় হলুদ ব্যবহার করে তেমনি তিনি আমার বোন জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক হলুদ। আমি তেমন স্বপ্ন দেখি না। হঠাত্টঠাৎ যদি দেখি অনেক ক্ষেত্রে তা বাস্তব হয়ে যায়। ইদানীং মাঝেসাজে স্বপ্নে এসে পিতা বলেন, ‘ধানমন্ডির ৩২-এ আমার দেহ থেকে তখনো রক্ত ঝরছিল সেই সময় মোশতাকের মন্ত্রিসভার শপথের সব ব্যবস্থা করেছিল আমলারাই। তোরা তাকে সরাতে পারলি না।’ এ ব্যর্থতা সত্যিই অমার্জনীয়। ভাবি আর উতলা হই। কত বিপদে রুখে দাঁড়াতে কখনো বুক কাঁপেনি, এখনো কাঁপে না। কিন্তু কেন যেন প্রতিকারের কোনো পথ খুঁজে পাই না। কিন্তু যত কঠিনই হোক পথ তো একটা বের করতেই হবে। আমরা এর চাইতেও অন্ধকার রাত পার করে সকালের আলো ফুটিয়েছি। তাই আবার ফুটাব ইনশাল্লাহ। জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে সত্যি সত্যিই এক মস্তবড় কাজের কাজ করেছেন। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা ইস্যুকে কাজে লাগালে রোহিঙ্গাদের যেমন উপকার হতো তেমনি জাতিগতভাবে আমরাও মানবতার মূর্তপ্রতীকে পরিণত হতাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত কোথায় ছিল আর এখন ভারত কোথায়। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধে তাদের রক্ত, এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় মহান ভারতকে উন্নতি এবং সম্মানের দিক থেকে ১০০ বছর এগিয়ে নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দান শত বছর কেন বিশ্ব দরবারে মানবতা সভ্যতা সৌহার্দ্য আর উন্নয়নের হাজার বছরের প্রতীক হয়ে আমরা থাকতে পারতাম। সেদিন একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, আড়াই-তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্টে পৃথিবীর নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের বদনাম করছে। সুনাম পেতে হলে বদনামের বোঝাও বইতে হয়। সুনাম-বদনাম পাশাপাশি চলে। একটা থাকলে আরেকটা অবশ্যম্ভাবী থাকবে। রাত ছাড়া যেমন দিনের অস্তিত্ব বোঝা যায় না, তেমনি মন্দ ছাড়া ভালোর কথা ভাবা যায় না। আমরা শুধু ভালো করতে পারি না, ভালোর সঙ্গে ছিঁটেফোঁটা মন্দকেও আলিঙ্গন করি। দেখার বিষয় ভালো না মন্দ কোনটার প্রভাব বেশি। কোনটা আমরা বেশি করছি। রোহিঙ্গা ইস্যু বা সমস্যা কচু পাতার পানির মতো মুহূর্তে সমাধান করে ফেলা যাবে না। রোহিঙ্গাদের যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান না হয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান হতো তাহলে পৃথিবীর দৃষ্টি আরও বেশি হতো। মুসলমান হওয়া অপরাধ নয়, মুসলমান হওয়া সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ আশীর্বাদ। অথচ মুসলমানদের বর্তমানে চরম দুর্দিন। এ দুর্দিন মোকাবিলা কারও একার প্রচেষ্টায় হবে না। এতে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, মানবসভ্যতার একত্রিত প্রয়াসের প্রয়োজন। সেই প্রয়াসে বাংলাদেশ বাঙালি সমাজ বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারতেন। কিন্তু শুধু নেতৃত্ব আর সরকারি উদ্যোগের অভাবে সেটা হচ্ছে না। অপ্রিয় সরকার মনে করে তারা সব থেকে জনপ্রিয়। অথচ বাস্তব তা নয়। কোনো সরকারই কখনো মানুষের ইচ্ছার শতভাগ প্রতিফলন ঘটাতে পারে না। এই সহজ কথাটা কেন যেন কেউ বোঝে না। এ যে কত বড় এক মারাত্মক অসুস্থতার লক্ষণ; কথাটা কাকে বোঝাব, কেউ তো বুঝতে চায় না।
বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক আমার খুবই প্রিয় নঈম নিজামের সেদিনের এক অসাধারণ লেখা পড়লাম। ভালোবাসে তাই হয়তো আমাকে নিয়েও দু-চার কথা লিখেছে। কিন্তু তার কোনো কথাই অসত্য নয়। জীবনে কত কষ্ট কত দুঃখ সহ্য করেছি। এই দুনিয়ায় কেউ একা নেতা হয় না, কেউ একা বড় হয় না। নেতা হতে বড় হতে তার চারপাশে হিমাদ্রির মতো অসংখ্য ছোটর দরকার হয়, শক্তিশালী ভিত রচনা করতে হয়। তবেই সে সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সবার কণ্ঠ হয়ে সবার সম্মিলিত শক্তি হয়ে অশুভকে ধ্বংস করে শুভযাত্রার সূচনা করতে পারে। আওয়ামী লীগের জননেত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির বেগম খালেদা জিয়াও তাই। বড় নেতার পেছনে কত ছোট নেতা, ছোট কর্মীর হাড়ভাঙা পরিশ্রম থাকে— এটা অমন কে বোঝে না। যারা বোঝে তারা হয়তো ক্ষমতায় বেশি সময় টেকে না। কিন্তু ক্ষমতাহীন তারাও অসাধারণ ক্ষমতাবান। মানুষের অন্তরে স্থান করে নেওয়া, সমাজপটে জায়গা পাওয়া খুব একটা ছেলেখেলা নয়। মহাত্মা গান্ধী কোনো দিন মন্ত্রী, মহামন্ত্রী হননি। কিন্তু যতকাল ভারত থাকবে ততকাল মহাত্মা গান্ধী থাকবেন। শুধু ভারত কেন, মানবসভ্যতা যত দিন থাকবে তত দিন এ বিশ্বদরবার থেকে মহাত্মা গান্ধীকে মুছে ফেলা যাবে না। যত দিন মানুষের কান্না থাকবে, বঞ্চনার বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রাম থাকবে, তত দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থাকবেন। এসব পদ-পদবির নয়, এসব আল্লাহ-প্রদত্ত ক্ষমতা। এসব কোনো দয়া নয়। এসব সাধ্য-সাধনা করে অর্জন করতে হয়। কেউ দান করতে পারে না। কদিন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছে। নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা থানার ১০০ গজের মধ্যে গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার শেষকৃত্যে যোগ দিতে গিয়ে আরও কজন মারা গেছেন। বলেছিলাম, এসব স্বাভাবিক অবস্থার প্রতিফলন নয়। জাতীয় নির্বাচনের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে। আওয়ামী লীগ পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির উদ্যোগ নিয়ে এক অভাবনীয় সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল। কিন্তু সেই শান্তিচুক্তির এই প্রতিফলন কোনোমতেই কাম্য নয়। সরকারি নেতারা সবসময় সবকিছু শতভাগ ঠিকঠাক দেখেন। আসলেই কি তাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খুব ভালোবাসি, স্নেহ করি। ভদ্রলোক অনেক কিছুই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ মানুষদের দিয়ে সফল হওয়া যায় না— এটাই বিধির বিধান। প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে অলসতা-ব্যর্থতা। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনে কে কী করবে, কাকে সালাম ঠুকবে, কার থেকে মুখ ফেরাবে তা বুঝতেই অনেকে হিমশিম খাচ্ছে। অথচ প্রশাসন বা সরকারের কাজ যে কাউকে সালাম দেওয়া-না দেওয়া নয়। সরকার কোনো দলের নয়, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়, সরকার দেশের এবং দেশের আইনের। সংবিধানের নির্দেশমতো, আইনমতো তারা চলবে এই বোধটাই কেন যেন সবাই হারিয়ে ফেলেছেন।
বর্তমানে সব থেকে তাজা খবর নির্বাচনের মাত্র আট দিন আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন স্থগিত। এ এক অভাবনীয় সিদ্ধান্ত। বিচারব্যবস্থায় হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ আদালত। তারা অনেক কিছু করতে পারে। আল্লাহর কাছে দোয়া করলে সে দোয়ায় যদি রসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ না করা হয় তাহলে সে দোয়া জমিন ও আসমানের মাঝে ঝুলে থাকে। হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট তেমন একটি প্রতিষ্ঠান। হাই কোর্ট ইচ্ছা করলে শূন্যে বসাতে পারে— এটা তাদের অবাধ অধিকার বা ক্ষমতা। এখানে কারও কিছুর বলার নেই, আমারও নেই। হাই কোর্ট সবার উপরে। তবে এটা ঠিক, সব আদালতের বড় আদালত যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই স্রষ্টা। তার পরের আদালতই জনগণ। উচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট বা হাই কোর্ট যা কিছুই করুন জনতার আদালত সম্পর্কে সবসময় তাদের সচেতন থাকতে হবে। তা না হলে আদালতের আদালতে তাদের আটকে যেতে হবে বা জবাবদিহি করতে হবে। দুই বছর আগে সুপ্রিম কোর্টে আমার এক নির্বাচনী মামলার রায় হয়। ব্যাংক টাকা পাবে কি পাবে না, মনোনয়নপত্র জমা বৈধ কি অবৈধ সে নিয়ে আমি হাই কোর্টে গিয়েছিলাম। যথারীতি হাই কোর্ট নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে আমার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছিল। তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিল। যা করার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের ছিল না। কিন্তু করেছিল। তার বিরুদ্ধে আমি আপিল করলে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের সুনির্দিষ্ট একটি বেঞ্চকে নির্দিষ্ট সময়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলেছিল। সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্ট সম্পর্কে এখনো আমার অপরিসীম আস্থা। কিন্তু প্রধান বিচারপতি দিন তারিখ ঠিক করে দেওয়ার পরও মামলাটি আদালতে ওঠেনি। মামলা ছিল ব্যাংকের পুনঃতফসিলকরণ নিয়ে। তা তারা স্বীকারও করেছেন। সেভাবে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র দাখিলের পরদিন সময় পার হয়ে গেলে তারা ঋণটির শ্রেণিবদল হবে না বলে একটি অযৌক্তিক চিঠি দেন। তার ওপর বেইজ করে হাই কোর্ট আদেশ জারি করেছিল, নির্বাচনী কার্যক্রমের একটা স্তর পার হয়ে যাওয়ার পর আইন-আদালতের কিছু করার নেই। গাজীপুরের নির্বাচনে সব কটি স্তর পার হয়ে শুধু ভোট গ্রহণের একটি স্তর বাকি থাকার সময় নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা জনতার আদালতে তেমন গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। গাজীপুরের গত করপোরেশন নির্বাচনে রাস্তাঘাটে জনগণের কথা শুনে বলেছিলাম, সরকারি দল লাখ ভোটের ব্যবধানে হারবে। তারা সেবার ১ লাখ ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরেছে। এবার ১ লাখ নয়, ২ লাখ ১২ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে সরকারি দল হারত। কারণ আজমত উল্লাকে বাদ দিয়ে জাহাঙ্গীরকে প্রার্থী করা গাজীপুরের মানুষ মেনে নেয়নি। জাহাঙ্গীরের অর্থ থাকতে পারে, কিন্তু নেতা নন। নির্বাচনের আট দিন আগে নির্বাচন স্থগিত রাখার ঘোষণা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করল এবং জাতীয় নির্বাচনে এর এক মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
লেখক : রাজনীতিক।
উৎসঃ বিডি প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন