|
মিজানুর রহমান খান
mrkhanbd@gmail.com |
|
তিন দেশের আদালতের রায়ে অবাক প্রতিক্রিয়া
24 April 2017, Monday
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টবাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে গত সপ্তাহটির একটি ভিন্ন তাৎপর্য ছিল। বিশেষ করে দিল্লি, ইসলামাবাদ ও ঢাকায় আদালত ক্ষমতাসীন কয়েকজন রাজনীতিবিদের বিষয়ে রায় দিয়েছেন। ভারতে বাবরি মসজিদের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে একজন মন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতা এল কে আদভানি, মুরালি মনোহর যোশি ও রাজস্থানের গভর্নর কল্যাণ সিংয়ের বিচার হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্যক্তিগতভাবে আক্রান্ত না হলেও তাঁর একজন মন্ত্রী থাকায় তিনি বিব্রত। অন্যদিকে দুর্নীতির মামলায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের গদিচ্যুতি আশঙ্কা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর পরিবারের দুর্নীতি তদন্তযোগ্য ঘোষিত হয়েছে। এর ফলে অন্তত নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক পরাজয় হয়ে গেছে। বিরোধী দলের নেতা ইমরান খান সুপ্রিম কোর্টে পানামা পেপারসে উল্লেখ করা দুর্নীতির বরাতে প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সে দাবি শতভাগ পূরণ না হলেও প্রধানমন্ত্রীকে তিনি নাজেহাল করতে পেরেছেন। কিন্তু আমরা দেখাতে চাইছি, আদালতের প্রতিকূল রায়ের পরে পাকিস্তান-ভারতের ক্ষমতাসীনেরা বিচার বিভাগের সঙ্গে বাদানুবাদে লিপ্ত হয়নি। যেটা আমরা বাংলাদেশে লক্ষ করি।
এ লেখায় আমরা শুধু ভারত ও পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে ক্ষমতাসীন রাজনীতিকেরা কী ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখালেন, সেটাকেই মনোযোগের কেন্দ্রে রাখতে চাইব। এ প্রসঙ্গে দুজন মন্ত্রীকে আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করার পরে ঢাকায় কী ধরনের মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে, তা আমরা মনে রাখব। যদি গত সপ্তাহের কথাই বলি তাহলে দেখি, ঢাকার নিম্ন আদালত রাডার ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় পতিত স্বৈরশাসক এরশাদকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এরশাদ ক্ষমতাসীন এই অর্থে যে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের মর্যাদায় পুরস্কৃত হওয়ার মর্যাদা ভোগ করে চলছেন।
খুবই লক্ষণীয় যে পাকিস্তান-ভারতের নির্বাচিত সরকারের সদস্য বা ক্ষমতাসীনেরা বিচার বিভাগ দ্বারা জনগণের কাছে গুরুতররূপে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এরশাদ ও তাঁর সহযোগীরা ভাগ্যবান বটে। তাঁদের কোনো গ্রহণযোগ্য তদন্তের মুখোমুখিই হতে হয়নি। কারণ, গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের ঢাকার আদালতে হাজিরই করা যায়নি।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসে মদদ এবং পানামা পেপারসে বর্ণিত ‘পুকুরচুরির’ তদন্তে ভারত ও পাকিস্তানে সুপ্রিম কোর্ট স্বাধীন তদন্ত সংস্থার ওপর নির্ভরতা দেখিয়েছেন। পানামা পেপারস প্রকাশের পরে ঢাকাতেও তদন্তের কথা উঠেছিল, কিন্তু এরপর কিছু আমরা জানি না। পাকিস্তানে ভারতের সিবিআইয়ের মতো কোনো গ্রহণযোগ্য সংস্থা গড়ে না উঠলেও এর প্রয়োজনীয়তা গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে। আমরা এ প্রসঙ্গে নিজেদের দিকে তাকালেও লক্ষ করি, স্বাধীন তদন্ত সংস্থার প্রয়োজনীয়তা তীব্র হচ্ছে। রাডার ক্রয় মামলায় জেনারেল এরশাদসহ দুজন পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা কীভাবে খালাস পেলেন, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। কামাল আহমেদ প্রথম আলোতে তাঁর ২১ এপ্রিলের নিবন্ধে যথার্থই প্রসিকিউশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ভারত ও পাকিস্তানে বাবরি মসজিদ ধ্বংস ও পানামা পেপারস মামলার মধ্যে কিছু বিষয়ে মিল আছে। প্রথমত, ক্ষমতাসীন দলের ভাবমূর্তি জড়িত থাকা; দ্বিতীয়ত, সংঘটিত অপরাধের সুষ্ঠু তদন্তের বিষয়ে সন্দেহ ও তৃতীয়ত, সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া। পুলিশকে আর কেউ নির্ভরযোগ্য ভাবছে না।
আর ত্রিদেশীয় দৃশ্যপটের অমিল হলো: মন্ত্রীদের অভিযুক্ত হওয়ার পরে বাংলাদেশে প্রকাশ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানে বরং উল্টোটা ঘটেছে। আর যা-ই হোক, ক্ষমতাসীনেরা তঁাদের চিত্তচাঞ্চল্য বা বিরক্তি চেপে রাখতে পেরেছেন। আপাদমস্তক গেরুয়া বসনে ভূষিত ভারতীয় পানিসম্পদমন্ত্রী উমা ভারতী অযোধ্যায় যেতে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু রায় শুনেই তিনি তাঁর নির্ধারিত সরকারি সফর বাতিল করেন। পাকিস্তানে নওয়াজের নেতৃত্বাধীন মুসলিম লিগ দাঁতে দাঁত চেপে গণেশ উল্টে না যাওয়াকেই বিজয় ভেবে মিষ্টি খেয়েছে। আমরা স্মরণ করতে পারি, বাংলাদেশে যখন দুজন মন্ত্রী আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হলেন, তখন সরকারি দলকে সংযত আচরণ করতে দেখা যায়নি। তাদের মধ্য একধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়। এরপর আরও নানা কারণে ‘দূরত্ব’ দেখি। নিম্ন আদালত ভারত ও পাকিস্তানে সরকার থেকে সম্পূর্ণ পৃথক আছে। উচ্চ আদালতে নিয়োগ নিয়ে এই দুই দেশেও দ্বিমত আছে। কিন্তু তঁারা অধস্তন বিচারক নিয়ন্ত্রণে সুপ্রিম কোর্টের প্রাধান্য মেনে নিয়েছেন। আর বাংলাদেশ পদ্ধতিগতভাবে তঁাদের নিয়ন্ত্রণে অবতীর্ণ রয়েছে।
১৯৪৭ সালের পরে আমাদের উপমহাদেশে ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট প্রথম কংগ্রেসের অবিসংবাদিত জনপ্রিয় নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে এমপি হিসেবে অযোগ্য ও তাঁর নির্বাচন অবৈধ বলে ক্ষমতাসীনদের বিব্রত করেছিলেন। ৪২ বছরের ব্যবধানে সেই ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা যায়, এমন একটি ঘটনার কাছাকাছি গিয়েছেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশ কখনো এমন কিছু এত কাছ থকে দেখেনি। নির্বাচিত সরকার বিব্রত বা আক্রান্ত হলে সাধারণত একটা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এটা একটা উপমহাদেশীয় সাধারণ প্রবণতা বললে অত্যুক্তি হবে না। কিন্তু এবারে পাকিস্তানেও দৃশ্যত ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।
ভারত ও পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে কোনো দেশেরই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, তাদের রাজনৈতিক মিত্র এবং মিডিয়া সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে বাঁকা চোখে দেখছে না। নওয়াজ শরিফ ও তাঁর মিত্ররা বরং অভিনয় নৈপুণ্য প্রদর্শনে শামিল হয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের শান্ত রাখতে তাঁরা হইহুল্লোড়ে মেতেছেন। ক্ষমতাসীন মহল এই রায়ের বিষয়ে এতটাই সতর্ক থেকেছে যে তারা কোনো প্রকারের নেতিবাচক মন্তব্য না করতে প্রকাশ্যে নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ার করেছে।
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট দেশের এক নম্বর পরিবারটির দুর্নীতি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের রায়ে সাহসিকতার সঙ্গে ইতালীয়-আমেরিকান ঔপন্যাসিক মারিও পুজোর উপন্যাস দ্য গডফাদার–এর প্রসঙ্গ টেনেছেন। ওই উপন্যাসে গডফাদার তার ব্যবসায়ী প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বিচারে গুম বা হত্যা করেছিল। রায়ের সূচনাতেই দ্য গডফাদার থেকে নেওয়া হয়েছে: ‘প্রতিটি বিশাল সৌভাগ্যের পেছনে একটি অপরাধের কাহিনি রয়েছে।’
ভারত ও পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টদক্ষিণ এশীয় জবাবদিহির মান একটা নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বাবরি মসজিদের রায়েমোদি টলছেন না। নওয়াজ শরিফ পড়ে গেলেন কি গেলেন না, তা–ও ভিন্ন প্রশ্ন। এখানে বড় করে দেখার বিষয়, বিচার বিভাগের কাছ থেকে যখন বড় আঘাত আসে, তখন ক্ষমতাসীন দল প্রকাশ্যে কী আচরণ করে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই পরীক্ষায় পাকিস্তানের মতো দেশও উতরে যাচ্ছে বলেই তো মনে হয়।
পাকিস্তানে রায় এসেছে ক্ষমতাসীনদের ঘোর দুর্দিনের মধ্যে, তা কিন্তু নয়। নওয়াজ আমল অপেক্ষাকৃত ‘অর্থনৈতিক সাফল্য’ ও জনজীবনে নিরাপত্তাগত উন্নতি দেখিয়েছে। অবশ্য রয়টার্স এটা বলেছে যে ‘এই রায় এসেছে পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক সরকারের মধ্যে একটা “অস্বস্তিকর” সম্পর্কের বাতাবরণের মধ্যে।’
পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের দুজন বিচারপতি স্পষ্টতই নওয়াজ শরিফকে পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ‘জাতি এবং সংসদের কাছে অসততার’ পরিচয় দিয়েছেন। অবাধ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে ‘অসৎ’ বলা হয়েছে। তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। এটা সম্ভবত ১৯৪৭ সালের পরে উপমহাদেশে এই প্রথম। এখন এটা রাজনীতিক হিসেবে ক্ষমতাসীন মুসলিম লিগারদেরই মুখ্য দায়িত্ব গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির মান বৃদ্ধি করা। আর সেটা করতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীই পদক্ষেপ নিতে পারেন। গণতন্ত্রকে গতি দিতে চাইলে যার কাজ তারই করতে হবে। এক বছর আগে এখনই নতুন নির্বাচন না দিলেও নওয়াজ তদন্তের স্বার্থে নিজেকে অন্তত ওই পদ থেকে সরিয়ে নিতে পারেন।
পাকিস্তানের পাঁচ বিচারকই (একজন নওয়াজ আমলে নিয়োগ পেয়েছেন) তাঁদের ৫৪৯ পৃষ্ঠার রায়ে অভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন যে এর তদন্ত হতে হবে। গত এপ্রিলে পানামা পেপারসে নওয়াজ পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে শরিফের চার সন্তানের মধ্যে তিনজনই লন্ডনে সম্পদ কিনতে অফশোর কোম্পানিকে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু সরকার এর সুষ্ঠু তদন্ত করতে ব্যর্থ থেকেছে। এরপরে কী হবে তা জানি না। তবে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট এবং ক্ষমতাসীন দল পর্যন্ত যত দূর এসেছে, তার মূল্য অসামান্য। ইমরান খান নওয়াজের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির মামলায় দরখাস্তকারী হয়েছেন। আবার সেই মামলার শুনানি অযথা মুলতবি হয়ে থমকে থাকেনি। কীভাবে এটা পারছে পাকিস্তান?
সংসদে তির্যক মন্তব্য বা আদালত অবমাননাকর কোনো প্রকাশ্য উক্তি উচ্চারিত হওয়া ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ পরিবারের কথিত দুর্নীতি নিয়ে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে শুনানি হয়েছে। নওয়াজের মেয়ে মরিয়মকে মনে করা হয় ক্ষমতার উত্তরাধিকার। অথচ সেই রকম একটা চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানিতে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি, বরং রায় উদ্যাপনের ঘটনা ঘটেছে, সেটাই তো আমাদের কাছে একটা মহা বিস্ময়। প্রশ্ন জাগে তাহলে আমরা কোথায় আছি।
সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের দুজনই দুর্নীতির অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত নিশ্চিত করতে নওয়াজকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে সরকারের ছয়টি সংস্থার সমন্বয়ে একটা যৌথ তদন্ত হবে এবং অতঃপর একটি স্পেশাল বেঞ্চ পরের পদক্ষেপ নেবেন। এই ছয়টির মধ্যে তিনটিই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে রয়েছে।
আমাদের ধারণা, ওই দুটি রায়ের প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের রাজনীতিকেরা এমন সংযত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন, যা আগে দেখা যায়নি। ভারতীয় গণতন্ত্রের মান ব্রিটেনের পর্যায়ে গেলে নৈতিক কারণে উমা ভারতীর ইস্তফা দেওয়ার কথা। আদভানি ও যোশি যখন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে আলোচনায়, তখন তাঁরা ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের দায়ে অভিযুক্ত হলেন। কিন্তু তাঁরা আদালতের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য করছেন না। কল্যাণ সিং গভর্নর পদে থাকার কারণে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, তাঁর অবসরের পরে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলবে। উত্তর প্রদেশে ধর্মীয় গুরু যোগী আদিত্য নাথের বিজয় ডঙ্কার নিনাদ হাওয়ায় মিলিয়ে না যেতেই হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষবাষ্প, যা ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়েছেন, সেটা একটা বিরাট ঘটনা।
সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ এবং শিক্ষার বিষয় হলো, বিচারক নিয়োগসংক্রান্ত সংবিধানের ৯৯তম বিল বাতিলের পরে যে সরকারের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের হিমশীতল সম্পর্ক যাচ্ছে, মোদি সরকার বিচারক নিয়োগ বন্ধ রেখেছেন, তদুপরি বাবরি মসজিদের মতো ধর্মীয় জোশ রয়েছে, এমন বিষয়ে বিজেপি ও তার কট্টর মিত্ররা স্পিকটি নট হয়ে আছে। গণতন্ত্র তাদের শিখিয়েছে যে কখন নীরবতা পালন করা শ্রেয়। বিজেপি ও মুসলিম লিগ দুটোই ধর্মাশ্রয়ী দল। কিন্তু আদালতের রায়ের প্রতি জনসমক্ষে তাদের সংযম ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন নিশ্চয় গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় বিষয়।
ভারত এমনকি পাকিস্তানের নির্বাহী বিভাগ বা সংসদ যারা বিচার বিভাগ দ্বারা গুরুতর রক্তক্ষরণের শিকার, তারা রাষ্ট্রের কোন অঙ্গের ক্ষমতা কার থেকে কম কি বেশি, সে কথা তুলে কোনো প্রচ্ছন্ন হুমকি দিতে উদ্যোগী হয়নি।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক৷
উৎসঃ প্রথমআলো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন