|
তারেক শামসুর রেহমান
tsrahmanbd@yahoo.com |
|
শিয়া সুন্নি দ্বন্দ্বকে ট্রাম্প আরো উস্কে দিলেন
24 May 2017, Wednesday
আরব আমেরিকা সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যোগ দেওয়ায় বাংলাদেশের সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিশ্ব বাংলাদেশে অবস্থানকে স্বীকার করে নিলো এবং এটা একটা ভাল দিক বলে আমি মনে করি। এমন মন্তব্য করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান বলেন, রিয়াদ ঘোষণায় যেটা স্বাক্ষরিত হয়েছে, ইরান বিরোধিতা এবং ৩৪ হাজার সেনা নিয়ে একটা কমান্ড গঠন, এই বিষয়টা নিয়ে বাংলাদেশের সাথে আগে আলোচনা হয়নি।
চ্যানেল ২৪ ‘মুক্তবাক’ অনুষ্ঠানে ড. রেহমান বলেন, এর আগে যখন বাংলাদেশকে সৌদি নেতৃত্বাধীন কমান্ডে নেওয়া হলো তখনও বাংলাদেশের সাথে আলোচনা না করেই রিয়াদ থেকেই বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। যার ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, অনেক সিদ্ধান্ত অনেক সময় বাংলাদেশেল ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় বা হচ্ছে। যা এবারেও হয়েছে। আর যে কমান্ডটা গঠিত হয়েছে বা হতে যাচ্ছে ৩৪ হাজার সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে, এর ভূমিকা কি হবে?
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, মক্কা ও মদিনাতে যদি কোনো হামলা হয় তাখনই শুধু মাত্র বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে। এর বাহিরে কোথাও কোনো বিষয়ে অংশগ্রহণ করবে না। এমতাবস্থায় বাস্তবতা কি করবে জানি না। কারণ আমরা জানি যে, এখনও সৌদি ও ইয়েমেনের মধ্যে এক ধরণের যুদ্ধ চলছে। এখন এই যে ৩৪ হাজার সেনাবাহিনীর কমান্ড, এই কমান্ড কি ইয়েমেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে কি না? এটাই হলো আমার প্রশ্ন।
এছাড়াও এই কমান্ড কি কখনো কোনদিন ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হবে কি না? কারণ আমরা জানি যে ঐতিহাসিকভাবে ইরানের সাথে সৌদির একটা দ্বন্দ্ব আছে। যেটা এখন ট্রাম্প নিজে এসে শিয়া সুন্নি দ্বন্দ্বকে আরও উস্কে দিলেন এবং এই কমান্ড ভবিষ্যতে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে কি না সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে এবং তখন বাংলাদেশের অবস্থানটা কোথায় যাবে তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
রেহমান বলেন, বাংলাদেশ বরাবরই জোট নিরপেক্ষ নীতি পালন করে আসছে। এটা সংবিধানের ২৫ নং ধারায়ও বলা আছে যে, বাংলাদেশ কখনই যুদ্ধে জড়াবে না। যদিও একবার ইরাকের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু সেখানে জাতিসংঘের সমর্থন ছিল।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি জাতিসংঘের সমর্থন না আসে তাহলে বিভিন্ন ধরনের খারাপ পরিস্থিতিতে এই ৩৪ হাজার সেনা বাহিনীর অবস্থানটা কোথায় হবে। এরা কোথায় যাবে। এরা কাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে। তখন বাংলাদেশের অবস্থানটা কি হবে।
রেহমান বলেন, বাংলাদেশের কোনো ভাবে কোনো যুদ্ধে বা সংঘাতে জড়ানো ঠিক হবে না। আমরা কেনো যুদ্ধটাকে আমাদের ঘাড়ে নিয়ে আসছি। আমরা যদি সরাসরি সৌদির পক্ষে অবস্থান করি তাহলে কিন্তু ইরানের সাথে আমাদের সম্পর্ক খারাপ হবে। ফলে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের ভাবার দরকার আছে বলে আমি মনে করি।
আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন