বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে আইনের শাসন সামান্যই আছে। আইন মান্যতার তদারকি যাদের আইনসম্মত কর্তব্য, তারা নিজেরাই আইন অমান্যতার পুরোভাগে। কিন্তু লক্ষ করার বিষয়, আইন যারা বেশি অমান্য করে, দেশের প্রচলিত আইনের প্রতিও যাদের বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই, তারাই আইন নিয়ে কথাবার্তা বলে ও শোরগোল তোলে বেশি। ব্রিটিশ ভারতে গান্ধী আইন অমান্য আন্দোলন করেছিলেন নিজেদের মতো করে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে। বিপ্লবীরাও অনেকভাবে প্রতিক্রিয়াশীল আইন অমান্য করেন। লক্ষ্য যেখানে সমাজ পরিবর্তনের, সেখানে বিদ্যমান আইন ব্যবস্থা বহাল না রেখে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যও থাকে তাদের। এখন বাংলাদেশে যেভাবে আইন অমান্য হচ্ছে এটা এক ধরনের কোনো আইন অমান্য নয়। এ আইন অমান্য হল এমন জিনিস যাতে সাধারণ মানুষকে যেসব আইন মান্য করার জন্য ক্ষমতাসীন মহল হরদম উপদেশ-নির্দেশ দেয়, আইন অমান্য করলে শাস্তির ব্যবস্থা করে, সেই আইনই তারা নিজেরা অমান্য করে। অর্থাৎ আইনের ক্ষেত্রে রক্ষকের দ্বারা ভক্ষকের ভূমিকা পালন।
বাংলাদেশে এখন চারদিকে এক নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর মূল কারণ এখানে অপরাধীর কোনো শাস্তি নেই। বিপুল অধিকাংশ অপরাধ ক্ষমতাসীনদের দ্বারাই সংঘটিত হওয়ায় এখানে অপরাধীরা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকেই অপরাধ করে। দেখা যাবে, যে অপরাধীকে পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছে অথবা যাকে খুঁজে বেড়ানোর কথা বলা হচ্ছে সে হয়তো কোনো শীর্ষস্থানীয় ক্ষমতাসীন ব্যক্তির বাড়িতেই লুকিয়ে আছে! অনেক সময় অপরাধী কোথায় আছে এটা জানা সত্ত্বেও পুলিশ কিছু করতে পারে না। এ ছাড়া প্রায়ই দেখা যায়, অপরাধীকে পুলিশ খুঁজছে বলা হলেও তারা পুলিশের নাকের ডগায় খোলাখুলি ঘোরাফেরা করছে!! এই পরিস্থিতিতে এ দেশে এখন আইনের লড়াই, আইনের নানা সূক্ষ্ম দিক নিয়ে বিতর্ক, আইন মান্যতা বিষয়ে সরকারের নানা গালভরা কথাবার্তা, একঘেয়ে বক্তব্য যেমন ‘অপরাধীর কোনো দল নেই, অপরাধী যে দলেরই হোক তার মাফ নেই’ ইত্যাদি একটা ভুয়া ব্যাপার এবং হাস্যকরও বটে।
এ দেশে একটা বিচারব্যবস্থা ও বিচার বিভাগ আছে। এই বিচার বিভাগের যে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা নেই এবং তারা স্বাধীনভাবে কাজ করার চেষ্টা করলেও ক্ষমতাসীন মহল যে তার প্রতিবন্ধক হয়ে ওঠে, এটা শীর্ষ আদালত থেকেও বলা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের স্বাধীনতা হরণের বিষয়গুলো ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায়েই পরিস্ফুট হয়েছে। বুর্জোয়া শাসনে নির্বাহী ক্ষমতা, আইন প্রণয়ন ও বিচারব্যবস্থা পৃথকীকরণের যে ব্যবস্থা আছে তার বিশেষ কোনো কার্যকারিতা বাংলাদেশে নেই। আইন প্রণয়নের এখতিয়ার যাদের, সেই পার্লামেন্ট নির্বাহী শক্তির সম্পূর্ণ অধীন। আইন বিভাগের স্বাধীনতার কথা সংবিধানে থাকলেও নির্বাহী শক্তির হাত তার দিকেও প্রসারিত। ঠিক এই মুহূর্তে এ নিয়ে শীর্ষ আদালত এবং সরকারের মধ্যে আইনি লড়াই চলছে।
অনুন্নত ও পশ্চাৎপদ দেশগুলোতে আইনের শাসন যে কথার কথা ছাড়া বিশেষ কিছু নয়, এর প্রমাণ প্রতিদিনই নানা ঘটনার মধ্যে পাওয়া যায়। সমাজ ও শাসনব্যবস্থা কোনোভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য শাসকশ্রেণীর স্বার্থে আইন যতটুকু কার্যকর রাখা দরকার ততটুকু রেখে নিজেরাই আইন অমান্য করে বা আইনের উর্ধ্বে থেকে শাসকশ্রেণীর সরকার দেশ শাসন করে। কিন্তু শাসকশ্রেণী যদি এ কাজ নাও করত তাহলে দেশের আইনব্যবস্থা যেভাবে আছে তাকে কি গণতন্ত্রের উপযোগী বলা যায়? দেশ এখন মূলত কোন আইনে চলে? এ আইনব্যবস্থা কাদের তৈরি? দেখা যাবে, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত স্বাধীন হলেও ভারত ও পাকিস্তান এবং পরে বাংলাদেশ এখনও পর্যন্ত ব্রিটিশের তৈরি আইন কাঠামোর মধ্যেই বন্দি আছে। তার থেকে বের হয়ে আসেনি, স্বাধীন হয়নি। ঔপনিবেশিক শক্তি ব্রিটিশ গেছে; কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসনের উপযোগী যে আইনব্যবস্থা তারা গঠন করেছিল তার কোনো পরিবর্তন ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশে হয়নি। লর্ড মেকলে প্রণীত Penal Code এখনও এসব দেশের আইনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। একটি দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনের গুরত্ব নিয়ে কাউকে বোঝানোর কিছু নেই। দেশ স্বাধীন হল অথচ পরাধীনতার সময় প্রণীত আইন পরিবর্তন করা হল না! শুধু Penal Codeই নয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ব্যক্তির স্বাধীনতা থেকে নিয়ে হাজার রকম বিষয়ে ব্রিটিশ ভারতীয় সরকার যেসব আইন করেছিল সেগুলোই তো এখনও জারি আছে। আদালত তো সেগুলোর ভিত্তিতেই মামলা নিষ্পত্তি করে থাকেন। এর বাইরে যাওয়ার কোনো এখতিয়ার তো তাদের নেই। আদালত যতই স্বাধীন হোক, তারা উনিশ ও বিশ শতকে ব্রিটিশের তৈরি আইনের কাঠামোর মধ্যে বন্দি। অর্থাৎ দেশ বিদেশি ঔপনিবেশিক শক্তির শাসন থেকে স্বাধীন হলেও আইনের দিক দিয়ে তারা এখনও পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ।
ইংল্যান্ডের আইন ব্যবস্থা তাদের Common Law-এর ওপর ভিত্তি করে ধীরে ধীরে নিজেকে বুর্জোয়া অগ্রগতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিবর্তিত হয়েছে। ফ্রান্সে সে রকম কিছু ছিল না। এজন্য ফরাসি বিপ্লবের পর নেপোলিয়ন ফরাসি সামন্তবাদী ও রাজতন্ত্রী আইনব্যবস্থা সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করে প্রণয়ন করেছিলেন এক নতুন আইনব্যবস্থা। Code Napoleon নামে এই আইনব্যবস্থাই ছিল নেপোলিয়নের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি। ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে রাজতন্ত্র ও সামন্তবাদ উচ্ছেদ হয়েছিল। কিন্তু নেপোলিয়নই বিপ্লবের পর ফ্রান্সে বুর্জোয়া শাসনের উপযোগী আইন প্রণয়ন করেছিলেন। এজন্য তিনি নিজেকে সম্রাট ঘোষণা করা সত্ত্বেও গর্বের সঙ্গে বলতেন, I am the revolution, আমিই বিপ্লব। ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সে যে সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিবর্তন এসেছিল, Code Napoleon-এর মধ্যেই তাকে আইনগতভাবে ধারণ করা হয়েছিল। রাশিয়া, চীন ইত্যাদি দেশে বিপ্লবের পর পূর্ব আইনব্যবস্থা একেবারে উচ্ছেদ করে নতুন আইনব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে এ রকম কোনো পরিবর্তন হয়নি। কাজেই গণতন্ত্রের হাজারো কথাবার্তা, আইনসভায় হাজার রকম আইন পাস করলেও এসব দেশ ঔপনিবেশিক আমলের তৈরি আইনের ওপর দাঁড়িয়েই এখনও শাসিত হচ্ছে। এখানে শাসন ও আইনব্যবস্থার মধ্যে যে সংকট এখন দেখা যায়, তার মূল এর মধ্যেই নিহিত আছে।
সংবিধান হল যে কোনো দেশের মৌলিক আইন। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশেও একটি সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল। সে সংবিধান ব্রিটিশ ভারতীয় সরকার কর্তৃক প্রণীত উপরোক্ত সব আইনে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। তা সম্পূর্ণ অটুট ছিল। তাছাড়া তাতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের যেসব ধারা ছিল, সেগুলো তিন বছরের মধ্যেই বিলুপ্ত করে জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকারহীন করা হয়েছিল। জাতীয়তাবাদের অর্থ দাঁড়িয়েছিল সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর অধিকার পুরোপুরি হরণ করে তাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি। সমাজতন্ত্রের নামে দেশীয় শিল্প-বাণিজ্য জাতীয়করণ করে দেশে ব্যাপকভাবে লুটপাটের ব্যবস্থা। ধর্মনিরপেক্ষতার ঘোষণা সত্ত্বেও ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তাদের প্রতি দেশগড়ার আহ্বান। এর অর্থ ছিল ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে আবার সক্রিয় হওয়ার শর্ত তৈরি। এই শর্তের ব্যবহার করে জিয়াউর রহমান পরে খোলাখুলিভাবে ধর্মীয় রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। ১৯৭২-এর সংবিধানে গণতান্ত্রিক অধিকারের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, তা সম্পূর্ণভাবে হরণ করে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এক ফ্যাসিস্ট শাসন। শাসক দল ছাড়া সব রাজনৈতিক দল, সরকারি পত্রিকা ছাড়া সব সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জনগণের ওপর নির্যাতনের শেষ ছিল না। অর্থাৎ ১৯৭২ সালের সংবিধানে প্রাথমিকভাবে জনগণকে যেসব অধিকার দেয়া হয়েছিল, সেগুলো ডান হাতে দিয়ে বাঁ হাতে কেড়ে নেয়া হয়েছিল।
এবার আসা যেতে পারে সংবিধান সম্পর্কিত অন্য এক প্রসঙ্গে। প্রথমেই বলা দরকার, ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ সংবিধান বাংলাদেশের কোনো নির্বাচিত সংবিধান সভার দ্বারা প্রণীত হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের জন্য কোনো সংবিধান সভা নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন করা হয়নি। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের যে সংবিধান সভা গঠিত হয়েছিল, তার পূর্ব পাকিস্তানি সদস্য এবং একই সময় নির্বাচিত পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের একত্রিত করে একটি সরকারি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে তাদের দিয়েই গঠিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান সভা! এটা ছিল প্রকৃতই এক অদ্ভুত ও অবিশ্বাস্য ব্যাপার। একটি দেশের জনগণ এক সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পর সেই দেশের সংবিধান বা মৌলিক আইন তাদের নিজেদের নির্বাচিত সংবিধান সভা প্রণয়ন না করে প্রণয়ন করেছিল ইয়াহিয়া খানের দ্বারা গঠিত পাকিস্তান সংবিধান সভা!! ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একচেটিয়াভাবে জয়লাভ করলেও সেই নির্বাচনে জনগণ তাদের স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান তৈরির কোনো ম্যান্ডেট দেননি। তারা ম্যান্ডেট দিয়েছিলেন পাকিস্তানের কাঠামোর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য সর্বাধিক স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে। কাজেই বলাই বাহুল্য, তাদের কোনো এখতিয়ারই ছিল না স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান সভা হিসেবে কাজ করার।
একটি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তার সংবিধান প্রণয়নের জন্য জনগণ কর্তৃক একটি নির্বাচিত সংবিধান সভার অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। অথচ বাংলাদেশে সে কাজটি না করে পাকিস্তান সংবিধান সভাকে দিয়ে কেন এ কাজ করা হল তার কোনো ব্যাখ্যা আওয়ামী লীগ বা তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান দেননি। বিস্ময়ের ব্যাপার, এ নিয়ে অন্য কেউই প্রশ্ন তোলেননি। সংবিধান রচনার জন্য যে কমিটি হয়েছিল তার সদস্যরা পাকিস্তানি সংবিধান সভায় পেশ করার জন্যই স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের খসড়া তৈরি করেছিলেন!!! প্রাথমিকভাবে প্রশাসনের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ১৯৭০ সালে নির্বাচিত লোকদের দিয়ে পার্লামেন্ট গঠন করার মধ্যে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিয়ে একটা সংবিধান সভার নির্বাচন ছিল এক অপরিহার্য কর্তব্য। সেভাবে নির্বাচিত সংবিধান সভা একই সঙ্গে সংবিধান প্রণয়নের কাজ ও পার্লামেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারত, যতদিন না নতুন সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্ট গঠিত হতো। আওয়ামী লীগ ও তার নেতা শেখ মুজিবের যে বিপুল জনপ্রিয়তা সে সময় ছিল, তাতে এভাবে একটি সংবিধান সভা গঠন অল্প সময়ের মধ্যেই করা যেত। শুধু তাই নয়, এর জন্য যদি কিছু সময়ের দরকার হতো, তাহলে সে সময়ও নেয়া দরকার ছিল। কিন্তু সে কথা বা সে প্রসঙ্গ একেবারেই না তুলে, অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে পাকিস্তান সংবিধান সভাকে বাংলাদেশের সংবিধান সভা বলে চালিয়ে দিয়ে যেভাবে বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করা হল, তার কোনো আইনগত বা নৈতিক ভিত্তি ও গ্রাহ্যতা একেবারেই ছিল না। এদিক দিয়ে বলা চলে, ১৯৭২ সালে রচিত বাংলাদেশের সংবিধানের ছিল এক গোড়ায় গলদ। এই গলদকে সামান্য বা উপেক্ষার বিষয় মনে করার কোনো কারণ নেই।
ভাবলে অবাক হতে হয়, নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে জনগণের চিন্তাধারায় যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল, যে চেতনা জাগ্রত হয়েছিল, যাকে আওয়ামী লীগ ও তাদের ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলে অহরহ ঢেঁড়ি পেটায়, তার কোনো প্রতিফলনই সংবিধান সভায় ঘটল না! তাদের কোনো প্রতিনিধিত্বই বাংলাদেশের কথিত সংবিধান সভায় থাকল না!! একটা জাতির জন্মলগ্নেই এর থেকে বড় ট্রাজেডি আর কী হতে পারে? এ কথা ভাবলে আরও অবাক হতে হয় যে, কেন এভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান সভা গঠন না করে পাকিস্তানের সংবিধান সভাকে সরকারি অর্ডিন্যান্সের জোরে বাংলাদেশের সংবিধান সভা হিসেবে ঘোষণা করা হল, এ নিয়ে দেশে কোনো প্রশ্ন বা বিরোধিতা দেখা গেল না! যদি বলা হয়, বাংলাদেশের জন্মলগ্নে এভাবে জনগণকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে সংবিধান সভা গঠন ও তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে যেসব কাজ করা হয়েছিল তার মধ্যেই আজকের বাংলাদেশের শোচনীয় অবস্থার কারণ নিহিত ছিল, তাহলে কি সত্যের অপলাপ হবে?
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
উৎসঃ যুগান্তর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন