|
মাহবুব উল্লাহ
mahbub.ullah@yahoo.com |
|
পুঁজিবাদের মৌলিক কাঠামোগত সংকট কী ইঙ্গিত দেয়
10 January 2017, Tuesday
আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হতে পারে বিশ্ব পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অতীতের তুলনায় অনেক বেশি শক্তি অর্জন করেছে। সমাজতান্ত্রিক শিবিরের পতন এবং বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বামপন্থী প্রগতিশীল আন্দোলনে যে ভাটা সৃষ্টি হয়েছে এবং সর্বত্র বাজার অর্থনীতির জয়জয়কার চলছে তাতে মনে হতে পারে সাম্য বা সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কিছু নেই। কিন্তু একথাও সত্য, পুঁজিবাদী সমাজে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এই অস্থিরতা অদূর ভবিষ্যতে কাটবে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই।
২০০৮ সাল থেকে মার্কিন অর্থনীতিতে যে রিসেশনের সূত্রপাত্র হয়েছিল তার জের এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সাম্প্রতিককালে মার্কিন অর্থনীতিতে কিছু প্রবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেলেও কর্মসংস্থান মোটেও বাড়ছে না। অথচ স্বাভাবিক অবস্থায়ই প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করে। কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধির এ অবস্থাকে অর্থনীতিবিদরা JoblessGrowth আখ্যা দিয়েছেন। Jobless Growth-এর পরিস্থিতি কেন সৃষ্টি হল তা ব্যাখ্যার দাবি রাখে। বিনিয়োগ ছাড়া প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়, এ কথা কম-বেশি সবার কাছেই সহজবোধ্য। সহজভাবে বলতে গেলে প্রবৃদ্ধির অর্থ দাঁড়ায় আগের বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে তুলনামূলকভাবে অধিকতর পণ্য ও সেবার উৎপাদন। তাহলে কর্মসংস্থান কেন বাড়ছে না? প্রশ্ন ওঠে, শ্রমশক্তির ব্যবহার ছাড়াই কি এই উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে? যেহেতু Jobless Growth হচ্ছে সেহেতু ধরে নিতে হবে উৎপাদন বৃদ্ধিতে শ্রমের ব্যবহার বাড়ছে না। শ্রমের ব্যবহার না বাড়ার কারণ বিনিয়োগের চরিত্রের মধ্যে খুঁজে দেখতে হবে। বিনিয়োগ যদি মূলত পুঁজিনির্ভর বা অটোমেশননির্ভর হয়, তাহলে কর্মসংস্থান বাড়তে পারে না। মানুষের কাজ মেশিন, কম্পিউটার কিংবা রোবট দিয়ে করা হলে এমন পরিস্থিতিই সৃষ্টি হবে।
কার্ল মার্কস ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে শ্রমের ব্যবহার হ্রাস পাবে। পুঁজিবাদী অর্থনীতিবিদরা এই পরিস্থিতিকে সমস্যা হিসেবে দেখেননি। কারণ প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানে কম সম্পদ ব্যবহার করে অধিক পরিমাণে উৎপাদন করতে সক্ষম হওয়া। এ থেকে পুঁজিবাদী অর্থনীতিবিদরা বলতে চান, সম্পদ সাশ্রয়ের ফলে বিনিয়োগের জন্য অধিকতর সম্পদ পাওয়া যাবে। তাই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে বেকারত্বের সমস্যা বাড়বে- এমন কথা বলা যায় না। বাস্তবতা হল প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে তাল রেখে কর্মসংস্থান বাড়েনি। এভাবে কর্মসংস্থান না বাড়ার ফলে শ্রমজীবী মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা আসছে না। বাজারের যে রমরমা ভাব, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার চাকচিক্যের প্রতিফলন সেটাও নিষ্প্রভ হয়ে যাচ্ছে এবং আপেক্ষিকভাবে বাজারের সংকোচন ঘটছে। অর্থাৎ লক্ষ কোটি রকমারি জিনিসপত্র তৈরি হলেও তার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে চাহিদা বাড়ছে না। চাহিদার এই সমস্যাই লর্ড কীন্সের অর্থনৈতিক চিন্তার মূল ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
আপেক্ষিকভাবে শ্রমের ব্যবহার না বাড়ার ফলে তুলনামূলকভাবে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে মুনাফার হার নিন্মগামী হয়েছে। নিন্মগামী মুনাফার হার বিনিয়োগেও সংকট সৃষ্টি করেছে। মুনাফার হারে কমতি দেখে উদ্যোক্তারা ব্যয় হ্রাসের পদক্ষেপ নিচ্ছে। উৎপাদন ব্যয় হ্রাসের চাপ প্রাথমিকভাবে শ্রমিক শ্রেণীর ওপর বাড়তে শুরু করে। উদ্যোক্তারা শ্রমিক ছাঁটাই করে উৎপাদন ব্যয় হ্রাসের চেষ্টা চালায়। এই চেষ্টার নাম দেয়া হয়েছে Down sizing। মনে হতে পারে একটি কাজ যত সংখ্যক শ্রমিকদের করার কথা তার চেয়েও বেশি শ্রমিক নিয়োজিত আছে, অর্থাৎ শ্রমশক্তির ব্যবহারে অদক্ষতা বিদ্যমান। কিন্তু Down sizing-এর ফলে শ্রমিক শ্রেণীর কষ্ট ও মেহনত বৃদ্ধি পায়। দু’চারজন উদ্যোক্তা Down sizing-এর পলিসি গ্রহণ করলে খুব সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু এ ধরনের নীতি যখন সমগ্র অর্থনীতি জুড়ে অনুসৃত হতে শুরু করে তখন এর সামষ্টিক প্রভাব হয় মারাত্মক। এর ফলেই রিসেশনের শুরু হয়। সমাধানের পথটি আত্মঘাতী রূপ ধারণ করে।
সমকালীন পুঁজিবাদ বিশ্বায়নের ফলে বিরাট সুবিধা পেয়েছিল। বিশ্বায়নসৃষ্ট শ্রম বিভাজন পুঁজিবাদকে পড়তি মুনাফার সংকট থেকে রক্ষা করেছিল। গ্লোবাল কর্পোরেশনগুলো নিজ মাতৃভূমির বাইরে বিশ্বের যেখানেই শ্রম ও কাঁচামাল সহজলভ্য এবং ব্যয়সাশ্রয়ী সেসব জায়গায় তাদের উৎপাদন কর্মকাণ্ড ও বিনিয়োগ ছড়িয়ে দিয়ে বাড়তি ব্যয়ের সমস্যা সমাধান করতে চেয়েছে। এর ফলে তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে, পুঁজির ঘাটতির সমস্যা হ্রাস পেয়েছে এবং সেসব দেশ বিশ্ববাজারের সঙ্গে সংহত হয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বায়নের ফলে এক দেশের উদ্বৃত্ত শ্রমশক্তি কাজ ও রোজগারের আকর্ষণে ধনী দেশগুলোতে পাড়ি দিয়েছে। এরা সংশ্লিষ্ট ধনী দেশের স্থানীয় শ্রমিকদের তুলনায় কম মজুরিতে কাজে নিয়োজিত হয়েছে। এর ফলে ধনী দেশের স্থানীয় শ্রমিকরা ভাবতে শুরু করেছে তাদের কাজগুলো পরদেশী শ্রমিকরা দখল করছে। এর ফলে বর্ণবিদ্বেষ ও জাতি বিদ্বেষের মতো ভয়াবহ সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিদেশী শ্রমিকরা স্থানীয়দের কাজ কেড়ে নিচ্ছে এমন বাগাড়ম্বর সৃষ্টি করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো মানুষদের রাজনীতিতে অধিষ্ঠান ঘটছে। ট্রাম্প ঘরানার রাজনীতিবিদরা উন্নয়নশীল দেশে তৈরি পণ্যের ওপর ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে নিজ দেশের অদক্ষ শিল্পগুলোকে বাঁচাতে চাইছে। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া শুল্ক দেয়াল খর্ব করে বিশ্ববাণিজ্যকে যেভাবে সম্প্রসারিত করেছিল এখন তা প্রচণ্ডভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। নতুন দিনের বাণিজ্যযুদ্ধ সূচিত হতে যাচ্ছে। এর ফল হবে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার পশ্চাৎপসরণ। যে পুঁজিবাদ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে (বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ডব্লিউটিও) বিশ্বায়নকে জোরদার করেছিল এবং বিশ্ব বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটিয়েছিল সেই পুঁজিবাদই এখন এগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। অর্থাৎ পুঁজিবাদ একদিকে বিশ্বায়নের পথকে উন্মুক্ত করে দেয়, আবার সময়-সুযোগমতো সেই পথকেই রুদ্ধ করে দেয়। এটাই পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্তর্দ্বন্দ্ব।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠিত হয়েছিল একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। অনেকে এটাকে ইউরোপীয় জাতীয়তাবাদের পরিসমাপ্তি বলে মানতে রাজি হননি। বরং একে আখ্যায়িত করেছিলেন সুপ্রা-ন্যাশনালিজম বলে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছাল ইউরো মুদ্রা প্রচলনের মাধ্যমে। এখন ব্রেক্সিট (BREXIT) বলে অভিধানে একটি নতুন শব্দ যুক্ত হয়েছে। এটি হল সংক্ষিপ্তরূপে বলা, যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ। Britain এবং Exit শব্দ দুটির যোগফল হল BREXIT। একইভাবে গ্রিস যখন ইইউ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, তখন তাকে বলা হয়েছিল গ্রেক্সিট। গত বছর ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল নির্ধারণ করা যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে অথবা থাকবে না। না থাকার বিষয়টি ৫২ শতাংশ ভোটে জয়যুক্ত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে ছিল ৪৮ শতাংশ ভোটার। এই গণভোটে ৭১.৮ শতাংশ ভোটার অংশগ্রহণ করে অর্থাৎ ৩ কোটিরও বেশি সংখ্যক মানুষ ভোট দেয়। ইংল্যান্ড ৪৬.৬ শতাংশের বিপরীতে ৫৩.৪ শতাংশ ভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে অবস্থান নেয়। ওয়েলসে ৫২.৫ শতাংশ ভোটার ব্রেক্সিটের পক্ষে দাঁড়ায়। স্কটল্যান্ডের ভোটাররা ৬২ শতাংশ ভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে। অন্যদিকে উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৫৫.৮ শতাংশ ভোটার ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেয়। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য মারাত্মকভাবে বিভাজিত। ৫২ শতাংশ ও ৪৮ শতাংশের ব্যবধান খুব বড় ব্যবধান নয়। যদি ব্যবধানটি ৭০ ও ৩০ শতাংশের মধ্যে হতো তাহলে এটাকে স্পষ্ট নির্ধারণকারী মতামত হিসেবে ধরে নেয়া যেত। কিন্তু সে রকম কিছু হয়নি। লক্ষণীয় যে, স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের মতো যুক্তরাজ্যের ভিন্নধর্মী দুটি অঞ্চল ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে মত দিয়েছে। এর আগে স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থাকবে কিনা তা নিয়ে গণভোট হয়েছিল। সেই গণভোটে সামান্য ভোটের ব্যবধানে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাপন্থীরা হেরে যায়। যুক্তরাজ্যে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য শক্তিশালী হওয়ায় স্বাধীন হওয়ার মতো বিষয়ও গণভোটে নির্ধারিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছিল। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার প্রশ্নে স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে যে মতভিন্নতা দেখা দিল তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব যুক্তরাজ্যের ভাঙনের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। সে রকম কিছু ঘটলে সেখানকার অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মানে যে পরিবর্তন আসবে তা নিয়েও নানা রকম জল্পনা-কল্পনা চলছে।
থেরেসা মে এখন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ছিলেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ডেভিড ক্যামেরনের অবস্থান গণভোটে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর থেরেসা মে তার স্থলাভিষিক্ত হন। থেরেসা মে এবং ডেভিড ক্যামেরন উভয়ই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার বিরুদ্ধে ছিলেন, তদসত্ত্বেও তিনি ব্রেক্সিটকে ব্রেক্সিট বলেই মেনে নিয়েছেন। এরপরও বড় ধরনের বিতর্ক অব্যাহত আছে। এগুলো হল, কিভাবে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্যবসা করবে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকরা যুক্তরাজ্যে থাকার এবং কাজ করার সুযোগ কতটা পাবে।
ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে একটি ধাক্কা পড়েছিল। এই ধাক্কা যুক্তরাজ্য প্রাথমিকভাবে সামাল দিয়ে উঠেছে। কিন্তু ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম অবস্থায় রয়েছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কিছু সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ ব্রিটিশ ফার্ম মনে করছে পাউন্ড স্টার্লিংয়ের দরপতনের ফলে তাদের খরচ বেড়ে গেছে। ক্রেডিট রেটিংয়ের দিক থেকে ব্রিটেনের অবস্থান ট্রিপল-এ থেকে নিচে নেমে গেছে। ফলে সরকারের ঋণ করার খরচ বৃদ্ধি পাবে। শেয়ারের দাম নাটকীয়ভাবে পতন থেকে উদ্ধার লাভ করেছে। ব্রিটেনভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থান ব্রেক্সিট-পূর্ব অবস্থানের তুলনায় ভালো হয়েছে। ইধহশ ড়ভ England সুদের হার আরও হ্রাস করতে চায়। এর ফলে রিসেশন এড়ানো যাবে এবং বিনিয়োগ জোরদার হবে। এমনটি আশা করছে Bank of England।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্রেক্সিটের প্রভাব কী হবে তা নিয়েও আলোচনা চলছে। পাউন্ড-স্টার্লিংয়ের দাম কমে যাওয়ায় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রফতানি বিশেষ করে তৈরি পোশাকের রফতানি চাপের মুখে পড়তে পারে। অন্যদিকে বাংলাদেশের যুক্তরাজ্য থেকে যন্ত্রপাতি ও পুঁজি দ্রব্য আমদানি ব্যয় হ্রাস পাবে। তবে এসব প্রভাব নির্ভর করে যুক্তরাজ্যের মুদ্রার মান কতদিন এখনকার অবস্থানে থাকবে তার ওপর।
সমগ্র আলোচনা থেকে যে প্রাথমিক উপসংহার টানা যায় তা হল- বর্তমান বিশ্বে পুঁজিবাদকে যতটা সবল ও প্রবল মনে হচ্ছে সমসাময়িক পুঁজিবাদ ততটা সবল বা প্রবল হওয়ার ইঙ্গিত দেয় না। বিশ্ব পুঁজিবাদের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বর্গরাজ্যে বিশৃঙ্খলা নেমে আসার মতো। তবে অতীতে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সংকট কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বেশ সৃজনশীলতা দেখিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, সংকটটি যদি মৌলিক কাঠামোগত রূপ পরিগ্রহ করে এবং এ থেকে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংকটও সংক্রমিত হয়, তাহলে ভিন্ন কোনো সমাজ ব্যবস্থার কথা অবশ্যই ভাবতে হবে। এটা যে সনাতনী সমাজতন্ত্র হবে না, এটাও বলা যায়।
ড. মাহবুব উল্লাহ : অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ
উৎসঃ যুগান্তর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন