|
মাহবুব উল্লাহ
mahbub.ullah@yahoo.com |
|
জাতিসত্তাগুলোর আলাদা হওয়ার আকাঙ্ক্ষার রহস্য কী
10 October 2017, Tuesday
বিশ্ব রাজনীতিতে এমন সব ঘটনা ঘটছে যেগুলো নিয়ে আমরা আগে কখনও গভীরভাবে ভাবিনি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বের হয়ে এসেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন গঠনের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। দীর্ঘ পথপরিক্রমার পর ইউরোপের অধিকাংশ রাষ্ট্র সংঘবদ্ধ হয়ে একটি ইউনিয়নের পতাকা তলে এসেছে। শুধু তাই নয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন একটি অভিন্ন মুদ্রাব্যবস্থাও প্রবর্তন করেছে। যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নিয়ে বিশাল উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছিল, সেই ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার জন্য ব্রিটেনের অধিবাসীরা ভোটের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। মজার ব্যাপার হল, ইউনিয়নে থাকা-না থাকার প্রশ্নে খোদ ব্রিটেনেই অঞ্চল বিশেষে পরস্পরবিরোধী মতামতও ব্যক্ত হয়েছে। এ থেকে অনেকে অনুমান করতে শুরু করেছেন যুক্তরাজ্য নামে পরিচিত দেশটি ভবিষ্যতে আদৌ যুক্ত থাকতে পারবে কিনা। ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রশ্নে স্কটল্যান্ডে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। স্কটল্যান্ডে স্কটিশ জাতীয়তাবাদ বেশ প্রবল। স্কটল্যান্ডের সংস্কৃতি, জীবন-জীবিকা, মনন ও মানসিকতা ইংল্যান্ড থেকে বেশ ভিন্ন। গণভোটের ফলাফলে দেখা গেল খুব কাছাকাছি ব্যবধানে স্কটল্যান্ডের যুক্তরাজ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকার আকাক্সক্ষাটি বিজয়ী হয়েছে। এ গণভোট অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য সরকার কোনো পক্ষ অবলম্বন করেনি। খুবই শান্তিপূর্ণ এবং সৌহার্দ্যময় পরিবেশে এ গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সম্ভাবনা নস্যাৎ করার জন্য লাখ লাখ মানুষকে বুলেট ও বেয়নেট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি পাকিস্তান সরকার পশ্চিম পাকিস্তানি জনগণকে জানতে দেয়নি বাংলাদেশে কী ঘটেছিল। যদি তারা জানতে পারত বাঙালি জাতির ওপর কী ধরনের নৃশংসতা চালানো হচ্ছে, তাহলে সেখানকার জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশ হয়তো এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত। আজ যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ জানতে পারছে পৃথিবীর কোন প্রান্তে কী ঘটছে, সে রকমটি যদি ১৯৭১-এ সম্ভব হতো, তাহলে আমরা পাকিস্তানিদের নিপীড়ন থেকে কিছুটা হলেও নিষ্কৃতি পেতাম। স্কটল্যান্ডে যা সম্ভব হয়েছে, ১৯৭১-এর পাকিস্তানে তা সম্ভব হয়নি। কারণ সভ্যতার মানদণ্ডে দেশ দুটির মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে। যুক্তরাজ্যও একদিনে সভ্যতার এ স্তরে উন্নীত হয়নি। দীর্ঘকাল ধরে গণতন্ত্রের চর্চা তাদের সহিষ্ণু আচরণে অভ্যস্ত করেছে। উন্নত ধনতন্ত্রের সঙ্গে অনুন্নত আধা-সামন্ততান্ত্রিক ও আধা-ঔপনিবেশিক সমাজব্যবস্থার পার্থক্য এখানেই। উন্নত ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিচালকরা বোঝেন এবং জানেন যে, পুরনো শোষণব্যবস্থা রহিত হওয়ার পর কী করে আবার নতুন ভদ্রবেশী শোষণব্যবস্থা বহাল করা যায়। হার্ভার্ডের প্রয়াত অধ্যাপক কেনেথ গলব্রেথকে দিল্লিতে এক সেমিনারে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার তুলনায় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা উন্নততর বলে দাবি করা হলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটল কেন? জবাবে উদারপন্থী অধ্যাপক গলব্রেথ বলেছিলেন, পুঁজিবাদ যেভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা সে রকম কিছু করতে পারে না। এ কারণেই সোভিয়েত ব্যবস্থার পতন ঘটেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সমাজতন্ত্রবাদীরা দুনিয়ার অনেক দেশেই সংখ্যাগত গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, শক্তিশালী সোভিয়েত ব্যবস্থা এমন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল কেন? এ প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনার অন্ত নেই। একটি ক্ষুদ্র নিবন্ধের পরিসরে তা ব্যাখ্যা করাও সম্ভব নয়। তবে অনেকেই একমত হয়েছেন, ভেঙে পড়া সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অনেক ত্রুটি ছিল। তাই ওই ব্যবস্থাটিকে একটি পরিণত ব্যবস্থা বলা যায় না। যে ব্যবস্থাটি ছিল তাকে বড়জোর Pre-existing socialism বলা যায়। অর্থাৎ পূর্বে বিদ্যমান সমাজতন্ত্র।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার সময়েও রক্তপাতের ঘটনা ঘটেনি। বেশকিছু জাতি এ ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। সোভিয়েত ব্যবস্থায় অনেক গলদ থাকলেও মানতে হবে বিশাল পরিবর্তনের মুখেও সোভিয়েত জনগোষ্ঠী সুশীল আচরণ করেছে। এ কারণেই আশা করা যায়, ভবিষ্যতে যদি অন্য ধরনের সমাজতন্ত্রীরা উন্নত পরিবর্তনের কর্মসূচি হাজির করতে পারেন, তাহলে হয়তো শান্তিপূর্ণ উপায়ে অথবা কম রক্তপাতের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনটি আসতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে, সাম্রাজ্যবাদীরা এমন পরিবর্তন মেনে নেবে কেন? আরও প্রশ্ন উঠতে পারে, রাশিয়ায় যে ধরনের মাফিয়া ধনিক গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছে, তারাই বা কেন এ পরিবর্তনকে মেনে নেবে? সোভিয়েত ব্যবস্থার আমলাতান্ত্রিকতায় অনুভূতি ও অভিপ্রায় ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে যেসব বন্ধন ও শৃঙ্খল ছিল এবং অর্থনৈতিক উদ্যোগে প্রণোদনার যে সমস্যা ছিল সেগুলো কাটিয়ে উঠে নতুন পথে চলতে শেখার প্রয়াসেই অক্টোবর বিপ্লববার্ষিকী পালনের যথার্থতা খুঁজে পেতে হবে। এছাড়া পুঁজিবাদী এবং সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে একটি বড় মিল হল শিল্পায়িত সমাজ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে চলা। অধ্যাপক গেরশেংকরণ এ দুই ব্যবস্থার মধ্যে এ বিশাল মিলটির কথা বলেছেন। তার আদর্শিক অবস্থান যাই হোক না কেন, তার এ মন্তব্য অনস্বীকার্য। শিল্পায়িত সমাজ গড়তে গেলে পরিবেশ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আজ চিন্তা করার সময় এসেছে কীভাবে পরিবেশবিপন্নতামুক্ত সমাজতন্ত্র গড়ে তোলা যায়। পণ্ডিত প্রবর অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব গূঢ় প্রশ্ন নিয়ে কতটা ভেবেছেন বলতে পারব না। তবে অক্টোবর বিপ্লববার্ষিকী উপলক্ষে তার লেখা প্রবন্ধটি খুব একটা দিকনির্দেশনামূলক হয়েছে বলে মনে হয় না। ব্যতিক্রমী চিন্তা কোনো লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে যতটা সাহায্য করে, আত্মজিজ্ঞাসাহীন কথামালা সেভাবে সাহায্য করে না।
স্পেনের কাতালোনিয়া প্রদেশে স্বাধীনতার প্রশ্নে রোববার যে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে একটি প্রশ্ন স্পষ্ট হয়েছে এবং তা হল, এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে জাতি-প্রশ্ন গৌণ হয়ে যায়নি। এ গণভোটে ভোটারদের কাছে জিজ্ঞাসা ছিল, আপনি কি চান কাতালোনিয়া হবে একটি স্বাধীন প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র? এ থেকে প্রশ্ন উঠেছে, কেন এমন প্রশ্ন উঠল, এর মধ্যে কী ঝুঁকি রয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে কী হতে পারে? স্বাধীনতাপন্থী কাতালানরা গত তিন শতাব্দীজুড়ে এ প্রশ্ন সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে। ১৭১৪ সালে স্পেনের রাজা পঞ্চম ফিলিপ যখন বার্সেলোনা দখল করেন, তখন থেকেই এ চিন্তার বীজ রোপিত হয়েছিল। তখন থেকেই কাতালোনিয়ার জাতীয়তাবাদীরা স্পেন থেকে স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। ১৯৩২ সালে যখন এ অঞ্চলের নেতারা কাতালান প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করলেন, তখন স্পেন সরকার স্বায়ত্তশাসন দিতে সম্মত হল। ১৯৩৯ সালে একনায়কত্ববাদী ফ্র্যান্সিসকো ফ্রাংকো ক্ষমতায় আসার পর কাতালানদের এ অর্জন বিলীন হয়ে গেল। ফ্রাংকো কাতালান জাতীয়তাবাদীদের ওপর ধারাবাহিকভাবে ফ্রাংকো নির্যাতন চালাতে শুরু করলে স্পেন সরকার কাতালানদের প্রতিষ্ঠানগুলো এবং ভাষা নির্মূল করতে চাইল। হাজার হাজার কাতালানকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হল। এমন কোনো কাতালান পরিবার ছিল না, যারা ফ্রাংকোর অত্যাচারে নিগৃহীত হয়নি। ফ্রাংকোর মৃত্যুর পর স্বাধীনতার সংগ্রাম জোরেশোরে শুরু হল। ২০০৬ সালে স্পেন সরকার কাতালোনিয়াকে জাতীয় মর্যাদা ও কর আরোপের ক্ষমতা প্রদান করল। কিন্তু ২০১০ সালে স্পেনের সাংবিধানিক আদালত এর বিরুদ্ধে রায় প্রদান করল এবং ঘোষণা করল কাতালানরা একটি জাতিসত্তা হতে পারে; কিন্তু জাতি নয়। দশ লাখেরও বেশি কাতালোনীয় এ রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাল; কিন্তু কোনো ফল হল না। বর্তমানে স্পেনের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় কাতালোনিয়া স্থানীয় অর্থায়নের ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ ভোগ করে। তদসত্ত্বেও অনেক কাতালোনিয়াবাসী এটাকে যথেষ্ট মনে করে না। অনেক কাতালানবাসী পরিণত বয়সে পৌঁছেছে এ বিশ্বাস নিয়ে, তারা স্পষ্টতই স্প্যানিশ নয়। আরেকটি ব্যাপার আছে। কাতালোনিয়া স্পেনের সবচেয়ে ধনী অঞ্চল এবং সর্বাধিক শিল্পায়িত। ধাতব শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ওষুধ এবং রসায়ন শিল্প গড়ে উঠেছে কাতালোনিয়ায়। কাতালোনিয়ার পর্যটন শিল্পও বেশ উন্নত। এর রয়েছে বার্সেলোনার মতো আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। কাতালোনিয়ায় স্পেনের ১৬ শতাংশ মানুষের বাস। কিন্তু স্পেনের অর্থনীতিতে ২০ শতাংশ অবদান রাখে কাতালোনিয়া। কাতালানদের একটি বড় অভিযোগ হল স্পেন সরকারকে তারা যে পরিমাণ কর দেয়, সে পরিমাণ অর্থ তারা ফেরত পায় না। ২০১৪ সালে কাতালনরা অতিরিক্ত ১১.৮ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে স্পেনের কর কর্তৃপক্ষকে। তবে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন কর দেয়া এবং কর ফেরত পাওয়ার হিসাবটি বেশ জটিল। কারণ স্পেন সরকার সেখানকার স্কুল ও হাসপাতালের মতো সেবা প্রতিষ্ঠানে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করে।
স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার গণভোটের আয়োজন সহজভাবে মেনে নেয়নি। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মেরিয়ানো রাজয় গণভোট বন্ধ করার জন্য হাজার হাজার সৈন্য পাঠিয়েছেন। তারা কাতালোন উপকূলের অদূরে জাহাজে অবস্থান করছে। স্প্যানিশ পুলিশ লাখ লাখ ব্যালট পেপার জব্দ করেছে এবং ১ ডজনেরও বেশি স্বাধীনতাপন্থী কাতালান কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে। প্রধানমন্ত্রী রাজয়ের সমালোচকরা মনে করেন তার অনমনীয়তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। তিনি সাবেক ডিক্টেটর ফ্রাংকোর পথে হাঁটছেন।
গণভোটটি সুষ্ঠুভাবে হতে পারেনি। বিভিন্ন জরিপ থেকে জানা যায়, কাতালোনিয়ারা স্বাধীনতার প্রশ্নে বিভক্ত। যাদের ওপর জরিপ চালানো হয়েছে তাদের ৪১ শতাংশ স্বাধীনতার পক্ষে এবং ৪৯ শতাংশ স্বাধীনতার বিপক্ষে। আরও কিছু ইঙ্গিত থেকে স্বাধীনতার প্রতি সমর্থনের বিষয়টি বোঝা যায়। ২০১৪ সালে কাতালান নেতৃত্ব স্বাধীনতার প্রশ্নে একটি অনানুষ্ঠানিক গণভোট চালায়। এটাকে তারা বলেছিল, স্থানীয় জনগণের মনোভাব বোঝার একটি মাধ্যম। এ গণভোটে এক-তৃতীয়াংশ নিবন্ধিত ভোটার ভোট দিয়েছিল এবং এদের ৮০ শতাংশ স্বাধীনতার পক্ষে ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। কাতালোনিয়ার বিচ্ছিন্নতাপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো ২০১৫ সালের সংসদীয় নির্বাচনে ৪৮ শতাংশ কাতালানের ভোট পেয়েছিল। স্পেনের প্রতি অনুগত দলগুলো পেয়েছিল ৪০ শতাংশ ভোট।
কাতালোনিয়ার পরিস্থিতি খুবই বিস্ময়কর! স্পেনের সবচেয়ে উন্নত অঞ্চলের জনগণের বেশ একটা উল্লেখযোগ্য অংশ স্পেন থেকে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। দেখা যাচ্ছে, শুধু অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়ে একটি জাতির আকাঙ্ক্ষাকে বোঝা যায় না। অর্থনীতির বাইরে অতীত দিনের নির্যাতন-নিপীড়নের স্মৃতি, ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষার আকুতি এবং আগ্রাসনের ক্ষত একটি জাতিগোষ্ঠীকে জাতিতে পরিণত হওয়ার প্রেরণা জোগায়। মনে করা হয়েছিল, ইউরোপে হ্যাপস্বার্গ সাম্রাজ্যের পতনের মধ্য দিয়ে জাতিরাষ্ট্রের উত্থানের ফলে ইউরোপে জাতি-প্রশ্নের সমাধান হয়ে গেছে। আসলে তা হয়নি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া, স্কটল্যান্ডে স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট, যুগস্লাভিয়ার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া এবং বাসক্ অঞ্চলসহ ইউরোপের বিভিন্ন অংশে জাতি-প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা প্রমাণ করে বিশ্বায়ন সত্ত্বেও পূর্বপুরুষদের প্রতি আনুগত্যের লিগ্যাসি অর্থাৎ জাতি-প্রশ্নটি এখনও বেশ জোরদার। ইউরোপের বাইরে তো বটেই। কুর্দিস্তানে জাতি-প্রশ্ন থেকে সৃষ্ট সংকট ধূমায়িত হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন হল, কতটা সভ্য পথে অথবা বর্বরতার মধ্য দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে।
ড. মাহবুব উল্লাহ : অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ
উৎসঃ যুগান্তর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন