অতিরিক্ত চিন্তা করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই যে কাজগুলো করছেন আপনি!
28 September 2017, Thursday
কিছু মানুষ এটিকে আশীর্বাদ মনে করেন কারণ এতে করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু তাঁরা এটাও মেনে নেন যে অতিরিক্ত চিন্তা করার বদ অভ্যাস ধীরে ধীরে তাদের মানসিক শান্তি কেড়ে নিচ্ছে। মাঝেমধ্যে সামান্য ব্যাপারেই অধিক চিন্তা করে নিজেকে বেশ অপরাধী মনে হয়! সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন মনের অজান্তেই অপ্রয়োজনীয় চিন্তা করে মূল্যবান সময়গুলো নষ্ট করি আমরা। আপনিও কি এমন একজন মানুষ যিনি অতিরিক্ত চিন্তা করেন? তবে মনের অজান্তেই যে কাজগুলো আপনি প্রতিনিয়িত করছেন সেগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে নিন নিচের ইঙ্গিতগুলো-
আপনি সবকিছুর অর্থ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন
ধরুন, আপনি কাউকে একটা মেসেজ দিলেন এবং উত্তরের অপেক্ষা করছেন। এমন করে প্রায় ছয় ঘণ্টা কেটে গেলো কিন্তু আপনি উত্তর পেলেন না। ওমনি আপনি চিন্তা করা শুরু করে দেন। আবার এমনো হয় যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসার সময় কেউ আপনার দিকে তাকিয়েছে একটু। তার পরবর্তী পাঁচ মিনিট আপনি ভাবতে ভাবতেই পার করে দিলেন যে উনি কেন তাকিয়েছেন! আপনি কর্মক্ষেত্রে কারো কাজ নিয়ে হাসাহাসি করেছেন। অতঃপর এটি ভাবতে ভাবতেই আপনার দিন পার হলো যে ব্যাপারটি ঠিক ছিলো কী না। এগুলো কিসের ইঙ্গিত?
আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করছেন এবং সবকিছুর অর্থ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
আপনি কাজের চাইতে চিন্তা বেশি করেন
যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে আপনার অনেকটা সময় লেগে যায়? কখন, কী কাজ করবেন তা ভেবে উঠতে পারেন না? আপনি 'অ্যানালাইসিস প্যারালাইসিস' সমস্যায় ভুগছেন। এ চক্র এতো সময় ধরে চলতে থাকে যে মাঝেমধ্যে আপনি কাজ বন্ধ করে দেন।
যে কাজটা আপনি করতে পারেন সেটি হলো- যেকোন একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন এবং সেটিতে অনড় থাকুন। এ অভ্যাস রপ্ত করতে বেশ সময় লাগবে কিন্তু একদিন ঠিকই শিখে যাবেন।
কোন সমস্যা সমাধান করতে পারলে আপনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন
ধরুন আপনি বেশ কয়েকদিন ধরেই একটি সমস্যায় ভুগছেন এবং সেটি থেকে পুনরুদ্ধারের উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিছুদিন পর সে সমস্যা সমাধান করতে পেরে আপনি বেশ উত্তেজিত হয়ে গেলেন।
খুশি হবেনই না কেন? আপনি যে সমস্যার শুরুতেই অধিক চিন্তা করছিলেন এটি নিয়ে! অতিরিক্ত চিন্তার পর কাজের সুফল পেয়ে আপনি খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন।
আপনি কোন জিনিস সহজেই শেষ করে দিতে পারেন না
আপনি খুব সহজভাবে কোন জিনিস যেতে দেন না কিংবা শেষ করতে পারেন না। কোন ঘটনা ঘটে যাবার পরেও তা বের হয় না আপনার মাথা থেকে। সবকিছুরই কোন না কোন কারণ আছে বলে আপনার মনে হয়। অতঃপর আপনি ব্যর্থ না হওয়া পর্যন্ত সে কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। আপনি যদি কখনো কিছু শেষ করে দেন তবুও আপনার মানসিকতার কারণে বার বার ব্যাপারটি আপনার সম্মুখে এসে ধরা দেয়। আপনি যত বেশি সেটি নিয়ে চিন্তা করেন, তত বেশি সেটি আপনাকে পীড়া দেয়।
আপনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য খোঁজেন
আপনি যখনই কোন ব্যাপারে এক বিন্দু তথ্য পান, সেটি নিয়ে তখন গবেষণা শুরু করে দেন। আপনি পাঠক হিসেবে বেশ চমৎকার এবং নতুন তথ্য আপনার ধারেকাছে আসা মানেই আপনার পড়াশোনা শুরু হওয়া। সেগুলো আপনার মননকে প্রজ্বলিত করে এবং আপনাকে নতুন নতুন কাজে আগ্রহী করে তোলে।
টুকটাক কথা বলা আপনার খুব অপছন্দের
আজকের আবহাওয়া কেমন? দুপুরে কি খেয়েছো? এসব প্রশ্ন আপনার কাছে নিতান্ত তুচ্ছ মনে হয় কারণ এগুলোর উত্তর খুব সংক্ষেপে দেওয়া যায়। আপনি সব সময় চেষ্টায় থাকেন কিভাবে দীর্ঘ ও অর্থপূর্ণ কথা বলা যায়।
কেউ তার সারাদিন কিভাবে কাটালো সে ব্যাপারে আপনার কিছু যায় আসে না কিন্তু কেউ কোন কাজ কেন করলো, সে ব্যাপারে আপনার বেশ আগ্রহ। তাদের জীবনের উদ্দেশ্য কী এটা জানার আকাঙ্ক্ষা কাজ করে আপনার ভেতর। এসব দীর্ঘ কথোপকথন আপনার মনকে সতেজ রাখে।
মানুষকে পরীক্ষা করতে আপনার ভালো লাগে
মানুষের জন্যেই আমাদের জীবন আনন্দময় হয়ে ওঠে। অন্য মানুষের জীবন কিভাবে চলে, তাঁরা কিভাবে অপরের সঙ্গে ব্যবহার করেন এগুলো জানতে আপনার বেশ আগ্রহ।
আপনার মনকে শান্ত করে এমন কাজ আপনার বেশ পছন্দ
সত্য কথা বলতে কী, অতিরিক্ত চিন্তা করা বেশ কষ্টকর ও বটে! ব্যায়াম করা, লেখালিখি করা, হাঁটতে যাওয়া, ধ্যান করা এই কাজগুলো করতে আপনি বেশ আনন্দ বোধ করেন। আপনার ব্যস্ত মন এ কাজগুলো করলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
কেমন মিলছে এ লক্ষণগুলো আপনার সঙ্গে? এখন থেকে অল্প করে হলেও অতিরিক্ত চিন্তা করার অভ্যাস কমিয়ে দিন। মানসিক শান্তিতে থাকবেন আপনি।
সূত্র: Hack Spirit
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন