যে বৈশিষ্ট্যগুলো অবশ্যই থাকে একটি চমৎকার ভালোবাসার সম্পর্কের মাঝে
04 October 2017, Wednesday
ভালোবাসার সম্পর্কে থাকাকালীন সবকিছুই খুব ‘পারফেক্ট’ বলে মনে হতে থাকে। সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা হয়, সঠিকভাবে বুঝে ওঠা যায় না, নিজে যা ভাবছি এবং নিজের ভেতরে যে বোধ কাজ করছে সে সকলই সঠিক কী না! কারণ, ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পরে, সবকিছুই খুব দারুণ আর রঙিন মনে হতে থাকে। সবকিছুকেই সঠিক এবং সুন্দর মনে হয়। আসলেও কী সবসময় সেটা সঠিক হয়? না, হয় না। ভালোবাসার আবেগ অনুভূতি আমাদের সঠিক এবং ভুলের মাঝে পার্থক্য বুঝতে দেয় না। সেক্ষেত্রে নিজের মাঝে সংকোচ বোধ কাজ তৈরি হতেই পারে। অথবা দ্বিধাবোধ আসতেই পারে- নিজেদের ভালোবাসার সম্পর্কটা আসলে কেমন! তবে খুব সাধারণ ও দারুণ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে একটি ভালোবাসার সম্পর্কের মাঝে, যা প্রকাশ করে দুইজন মানুষের মাঝে তৈরি হওয়া সম্পর্কটা কতোখানি দারুণ!
১/ বিপদে একে অন্যকে সাহায্য করেন
বিপদ যখন একজনের কাছে আসে, তখন শুধুমাত্র একজন নয় দুইজন একইসাথে সেই বিপদ মোকাবেলা করতে, সমস্যা দূর করতে কাজ করেন, একে অন্যের পাশে থাকেন। নিজের সকল সমস্যা, অস্থিরতা, খারাপ লাগা ভালোবাসার মানুষের সাথে নির্দ্বিধায় শেয়ার করতে পারেন কোন রকম সংকোচ বোধ ছাড়াই। দুইজন মানুষ একসাথে একটি 'টিম' হয়ে কাজ করেন, পাশে থাকেন সবসময়। যে কারণে কোন সমস্যা, কোন বিপদ কিংবা কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতেও ভয় পান না মোটেও!
২/ অনেকখানি সময় কাটান একসাথে
ভালোবাসার মানুষটির সামনে কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবেন, কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করলে নিজেকে ভালো দেখাবে- এমন ধরণের তুচ্ছ ব্যাপারগুলো যখন মাথার মধ্যে কাজ করে না, তখন সেই ব্যক্তির সাথে খুব দারুণভাবে কিছু ভালো সময় কাটানো যায়, তার সাথে সময় কাটাতে ভালো লাগে, স্বাছন্দ্য বোধ হয়। তার সাথে থাকার সময়ে নিজের মাঝে অন্যরকম প্রশান্তি এবং একই সাথে মানসিক শক্তি অনুভূত হতে থাকে।
৩/ আপনার ভালোবাসার সম্পর্ক আপনাকে আরো ভালো মানুষ হতে সাহায্য করে
আপনার সঙ্গী শুধুমাত্র আপনার ভালো-খারাপ সময়েই পাশে থাকেন না, তিনি আপনাকে আরো পরিণত এবং ভালো মানুষ হতে সাহায্য করে থাকেন। কীভাবে ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে আপনি আরো ভালো করতে পারবেন, কী করলে আপনার পড়ালেখার ক্ষেত্রে উন্নতি হবে, কীভাবে নিজেকে আরো বেশী ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে তৈরি করা যাবে- সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েই আপনার ভালোবাসার মানুষ আপনাকে সাহায্য করবে, সহযোগিতা করবে, উপদেশ দিয়ে পাশে থাকবে। যার ফলে, আপনি আরো একজন পরিণত এবং পরিপূর্ন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারেন।
৪/ সম্পর্কের মাঝে উভয়েই অগ্রাধিকারের ব্যাপারটি বুঝতে পারেন
কোন সময়ে নিজেকে সবকিছুর আগে প্রাধান্য দিতে হবে এবং কোন সময়ে ভালোবাসার সম্পর্কটিকে প্রাধান্য দিতে হবে সেই বিষয়টা উভয়েই খুব ভালোভাবে বুঝতে পারেন। এই একটা জায়গায় দুইজনের মিল ঠিক থাকে- নিজেদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয়তা এবং চাহিদার উর্দ্ধে গিয়ে ভালোবাসার সম্পর্কটাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। সম্পর্কের মাঝে ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং ছন্দ ধরে রাখার জন্য যেকোন মুহূর্তে দুইজন একসাথে এগিয়ে আসেন সবকিছু ফেলে।
৫/ অন্যান্য সম্পর্ক রক্ষা করার ব্যাপারটি খুব ভালোমতো বুঝতে পারেন
অনেক ভালোবাসার সম্পর্কের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, কোন একজন অপর জনের উপর নানানভাবে মানসিক চাপ দিতে থাকেন। কারণ আর অন্য কোন কিছু নয়- ভালোবাসার সম্পর্কের বাইরে অন্য কোন সম্পর্ক থাকা যাবে না, কারোর সাথে যোগাযোগ রাখা যাবে। ছোটবেলার বন্ধু থেকে শুরু করে, কোন ক্লাসমেট, অফিসের কলিগ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মীয় কিংবা কাজিনদের সাথে সম্পর্ক না রাখার ব্যপারে মানসিক চাপ দিতে থাকেন ক্রমাগত! যেটা খুবই অনুচিত এবং ভুল কারণ, শুধুমাত্র ভালোবাসার সম্পর্কটাই একটা মানুষের জীবনের সবকিছু নয়। তার পরিবার, বন্ধু, পরিচিতজনদের সাথেও তার সুসম্পর্ক থাকবে এবং এটাই খুব স্বাভাবিক।
ভালোবাসার সম্পর্কের বাইরে নিজেদের আলাদা একটা জগত থাকবে, পৃথিবী থাকবে, পরিবার থাকবে। এই ব্যাপারটা উভয়েই বুঝতে পারেন বলে, একে অন্যকে আপনারা অনুপ্রাণিত করেন নিজেদের মতো সময় কাটানোর জন্য, নিজেদের পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাবার জন্য এবং একে অন্যকে সমর্থন করেন নিজেদের আরো উন্নত ক্যারিয়ার তৈরি ক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকার জন্য।
৬/ একে অন্যের উপরে রাগ পুষে রাখেন না
সম্পর্কে থাকাকালীন মনোমালিন্য হবে, মতের অমিল হবে, নানান রকম সমস্যা তৈরি হবে এবং ঝগড়াও হবে। তবে কখনোই আপনারা একে অন্যের উপরে রাগ, অভিমান মনের মাঝে পুষে রাখেন না। সঙ্গীর যে ব্যাপারটি পছন্দ হয়নি, সেটা সরাসরি তাকে জানিয়ে দেন, তার সাথে সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সকল ঝামেলা মুখোমুখি বসে মিটমাট করে নিতে পছন্দ করেন এবং এই সকল সমস্যাকে লম্বা সময় ধরে একেবারেই ধরে রাখতে চাননা।
সূত্র: Think aloud
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন