রাত জেগে কাজ যেসব ঝুঁকি বাড়ায়
20 October 2017, Friday
আমাদের শরীরের ভিতরে একটি ঘড়ি আছে, যাতে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে শুতে যাওয়া পর্যন্ত সময় নথিভুক্ত রয়েছে। অর্থাৎ শরীরকে কখন কোন কাজটা করতে হবে, তা মূলত এই বায়োলজিকাল ক্লকই নির্দেশ দিয়ে থাকে। ওই নির্দেশনা মেনে না চলার কারণে প্রতিবছর বাড়ছে অকাল মৃত্যুহার।
সম্প্রতি বায়োলিজকাল ক্লকের উপর গবেষণা চালিয়ে তিন মার্কিন গবেষক নোবেল প্রাইজে ভূষিত হয়েছেন। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, বায়োলজিকাল ক্লককে মন মতো চালালে মারাত্মক বিপদ হয়! এক্ষেত্রে যে যে ঘটনাগুলি ঘটার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, সেগুলি হল…
১. ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টেই একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে দিনের পর দিন রাত জাগলে শরীরের অন্দরে ক্ষয় এত বেড়ে যায় যে সেই ফাঁক গলে ক্যান্সার সেল দেহের অন্দরে বাসা বাঁধার সুযোগ পেয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই এবার থেকে বেশি টাকা ইনকামের লোভে নাইট শিফট করার আগে একবার ভাববেন প্লিজ!
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
গবেষণায় দেখা গেছে রাত জেগে কাজ করলে কর্টিজল হরমোনের মতো স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ মারাত্মক বেড়ে যায়। ফলে সারা রাত কাজ করার ক্ষমতা জন্মালেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমে যায়। ফলে নানাবিধ রোগ ঘাড়ে চেপে বসতে সময়ই লাগে না। প্রসঙ্গত, স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পেলে মানসিক চাপও বাড়তে শুরু করে, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক।
৩. ওজন বাড়তে থাকে
দিনের পর দিন রাতে জেগে থাকলে খাবার ঠিক মতো হজম হতে পারে না। ফলে একদিকে যেমন গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, তেমনি ওজনও বাড়তে শুরু করে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে ওজন বাড়লে ধীরে ধীরে সুগার, প্রেসার এবং কোলেস্টেরলের মতো মারণ রোগ এসে শরীরে বাসা বাঁধে। ফলে আয়ু চোখে পড়ার মতো কমে যায়।
৪. মা হতে সমস্যা হতে পারে
শরীরের নিজস্ব ছন্দ বিগড়ে গেলে দেহের অন্দরে এমন কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন হতে থাকে যে তার সরাসরি প্রভাব পড়ে মা হওয়ার ক্ষেত্রে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে সব মেয়েরা নিয়মিত নাইট শিফট করেন তাদের মিসক্যারেজ এবং প্রিটার্ম ডেলিভারি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে কম ওজনের বাচ্চা জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই মা হওয়ার পরিকল্পনা করলে ভুলেও রাত জেগে কাজ করবেন না যেন!
৫. চোট-আঘাত লাগার প্রবণতা বেড়ে যায়
সারাদিন যতই ঘুমোন না কেন, রাতে ঘুম আসতে বাধ্য। এমন পরিস্থিতিতে মনোযোগ যেমন হ্রাস পায়, তেমনি শরীরের সচলতাও কমতে শুরু করে। ফলে অফিসে চোট-আঘাত লাগার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
৬. ব্রেন পাওয়ার কমে যায়
রাতের বেলা মস্তিষ্কের আরাম নেওয়ার সময়। তাই তো এই সময় দিনের পর দিন কাজ করলে ধীরে ধীরে ব্রেন পাওয়ার কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ডিপ্রেশন, হাইপোলার ডিজঅর্ডার, স্লো কগনিটিভ ফাংশন, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া সহ আরও সব সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন