গোলাম মাওলা রনি
দেশের চলমান নিরুত্তাপ রাজনীতিতে হঠাৎ করেই প্রাণ ফিরে এসেছে বিএনপির ভিশন ২০৩০ ঘোষণার মাধ্যমে। বিএনপি এবং তার সহযোগী রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মীরা প্রায় দুই বছর ধরে নিদারুণ মনোবেদনায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। তারা দেশের চলমান রাজনীতির জন্য যেমন সরকারকে দোষারোপ করছিলেন তেমনি দলের মধ্যে একশ্রেণীর নেতাকর্মী রয়েছেন, যারা আত্ম-সমালোচনা করতে গিয়ে নিজ নিজ দল বা জোটের নিষ্ক্রিয়তাকেও দায়ী করে আসছিলেন। এই অবস্থায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০ ঘোষিত হওয়ার পর বিএনপি জোট তো বটেই, দেশের পুরো রাজনৈতিক অঙ্গনই নড়েচড়ে বসেছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া লক্ষ করার মতো। আওয়ামী জোটের বড় বড় শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে মধ্যম সারির নেতৃবৃন্দ হররোজ বাহারি শব্দমালা এবং রঙ-বেরঙের বাক্যসংবলিত বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে বিএনপি ঘোষিত ভিশন ২০৩০ কে তুলোধুনো করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বিএনপি ঘোষিত ভিশন ২০৩০ নিয়ে নানাভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করতে শুরু করে দিয়েছেন। কেউ কেউ এই তথ্য অনুসন্ধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন যে, হঠাৎ করে বিএনপি কেন এমনটি করল! তারা কি দেশী-বিদেশী কোনো সূত্র থেকে এই মর্মে সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে যে, আগামীর জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি নিরপেক্ষ হবে এবং সেই নির্বাচনে জয়লাভ করে তারা সরকার গঠন করতে পারবে? তা না হলে এতো আত্মবিশ্বাস নিয়ে কেন তারা আশা জাগানিয়া একটি মহাকর্ম পরিকল্পনা তৈরি করল এবং তা জাতির সামনে পেশ করল। বিএনপি ঘোষিত ভিশন ২০৩০-কে অনেকে দলটির আগাম নির্বাচনী ইশতেহার বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছেন। পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন- আগামী সংসদ নির্বাচনের মাঠকে আগের মতো ফাঁকা করে দিয়ে খালি মাঠে গোল করার সুযোগ আওয়ামী লীগকে দেয়া হবে না এমন প্রতিজ্ঞা হৃদয়ে ধারণ করেই বিএনপি কোমরে গামছা বেঁধে মাঠে নেমেছে।
সামাজিক মাধ্যম, পত্রপত্রিকা এবং টেলিভিশনের টকশোগুলোতে ভিশন ২০৩০ নিয়ে হররোজ বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ভিশন ২০৩০-এর লিখিত পুস্তিকা নিয়ে সাধ্যমতো দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ ছুটে চলেছেন তৃণমূলে। অন্য দিকে তৃণমূলের অনেকে ছুটে আসছেন কেন্দ্রে। সারা দেশের বিএনপির অফিসগুলো নতুন করে সরগরম হতে শুরু করেছে। তাদের অনেকেই এটিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ঘোষিত ১৯ দফার সাথে তুলনা করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যারা ঘাঁটাঘাঁটি করেন তারা দেখেছেন, অতীতে যে দল আত্মবিশ্বাস নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করে এগিয়ে যেতে পেরেছে তারাই সফলতার মুখ দেখেছে। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা, জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, আওয়ামী লীগের সংসদীয় গণতন্ত্রের রূপরেখা, এরশাদ জামানায় তিনটি বিরোধী রাজনৈতিক জোটের অভিন্ন রূপরেখা, আওয়ামী লীগ-জামায়াতের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, আওয়ামী লীগের ভিশন ২০২১ ইত্যাদি কর্মপন্থার সবই সফল হয়েছে।
অতীতের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মপরিকল্পনাগুলোর মধ্যে যেগুলো প্রথম দিকে ঝড় তুলতে পেরেছিল সেগুলো শেষ পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখতে পেয়েছিল। অতীতের সেই ধারাবাহিকতার দিকে নজর দিলে বিএনপির ভিশন ২০৩০ অবশ্যই তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছে যথেষ্ট মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। বিএনপি তাদের ঘোষণায় আগামী দিনের সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় কিছু মৌলিক পরিবর্তনের অঙ্গীকার করেছে, যা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এখন পর্যন্ত বলেনি। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ বা সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা, জুডিশিয়াল সার্ভিস, শিক্ষিত যুবকদের বেকারভাতা প্রদান, মানবসম্পদ উন্নয়ন, হেলপ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ এবং অভিনব প্রস্তাবনা দ্বারা বিএনপি আগামীতে একটি অর্থবহ সরকার পরিচালনার ব্যাপারে তাদের অঙ্গীকার দেশবাসীর কাছে দলিল আকারে পেশ করেছে।
বিএনপির ভিশন ২০৩০ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে তার মূলে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া এবং নেতিবাচক প্রচার-প্রপাগান্ডা অনেকাংশে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। বেগম জিয়া যে মুহূর্তে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে দলের আগামী দিনের ভিশন প্রচার করছিলেন ঠিক সেই মুহূর্ত থেকে সরকারি দলের বেশ কিছু নেতা ফেসবুক, টুইটার প্রভৃতি সামাজিক মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্যের একেকটি খণ্ডিত অংশ নিয়ে ঠাট্টা মশকরা শুরু করে দিয়েছিলেন। তাদের পরিবেশিত ঠাট্টা-মশকরার বেশির ভাগ তথ্যই ছিল ভুল এবং বিকৃতভাবে উপস্থাপিত; কিন্তু কৌতূহল উদ্দীপক। ফলে সাধারণ মানুষ নেহাত কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে সামাজিক মাধ্যম ছেড়ে বেগম জিয়ার বক্তব্য টেলিভিশনের পর্দায় দেখা শুরু করেন। পরের দিন পত্রপত্রিকায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেখার পর তারা বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করতে শুরু করেন।
বিএনপির ভিশন ২০৩০ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়ার নেপথ্যের প্রধান কারণ হলো বিএনপির যেকোনো তৎপরতা, তাদের মিশন অর্থাৎ আগামীর সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মিশনকে নড়বড়ে করে দিচ্ছে। বর্তমান সময়ের রূঢ় বাস্তবতা হলো সরকারি দলের অনাহূত সুবিধাভোগী হাইব্রিড, কাউয়া অথবা ফার্মের মুরগির আধিক্য- আশঙ্কাজনকভাবে মহামারী আকারে বেড়ে গিয়েছে। এদের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে এমনভাবে বাড়ছে যার কারণে আদি, আসল এবং ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে রাজনীতি থেকে হাত-পা গুটিয়ে নিয়েছেন। আবার অনেকে মুখ রক্ষার জন্য শুধু দলীয় সভানেত্রীর অনুষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন না। ফলে দলের ত্যাগী শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে পুরো পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ঘিরে পঞ্চরত্নের বিরাট এক রাহুগ্রাস সক্রিয় রয়েছে। গৃহপালিত বিরোধী দল, মহাজোটের মহাতেলবাজ নেতাকর্মী ও হাইব্রিড আওয়ামী লীগার, দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজার লুটেরাচক্র, দলবাজ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিদেশী চক্রের পঞ্চমুখী চাপ ও তাপে দলটির অভ্যন্তরে ত্যাগী নেতাকর্মীদের জন্য এক অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেছে, যা খালি চোখে বাইরে থেকে সহজে বোঝা যায় না। পঞ্চরত্নের চক্রটি সর্বাত্মক চেষ্টা-তদ্বির করে যাচ্ছে বিগত বিনা ভোটের নির্বাচনের চেয়েও একটি সহজ সরল ভাঁওতাবাজির নির্বাচন করার জন্য। এ কাজের জন্য তারা যে মিশন প্রস্তুত করেছে সেখানে বিএনপি নামক দলটির কোনো অস্তিত্বই নেই। তারা ছলে বলে কৌশলে বিএনপিকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন বা খণ্ড-বিখণ্ড করে নিজেদের তাঁবেদার বানিয়ে একটি জাতীয় পার্টি বা জাসদ রব মার্কা গৃহপালিত বিরোধী দল বানানোর স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে। তাদের মিশনের দ্বিতীয় পর্বে তারা আরো নাম না জানা বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীকে ক্ষমতার মধু ও মেওয়ার লোভ দেখিয়ে নির্বাচন নির্বাচন খেলায় নামিয়ে একটি আপাত দৃশ্যমান প্রতিযোগিতামূলক এবং অশংগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
পঞ্চরতেœর উপরিউল্লিখিত মিশনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টি ৫৮টি দল নিয়ে নতুন জোটের ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের গত সাত বছরের সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী সামরিক-বেসামরিক এবং বিচার বিভাগের সদ্য অবসরে যাওয়া অথবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া আমলা, মন্ত্রী-এমপি হওয়ার লালসায় ছোটাছুটি শুরু করেছেন। ফলে অনেক জায়গায় পঞ্চভূতের স্বার্থের দ্বন্দ্বে ক্ষমতালোভী অবসরপ্রাপ্ত আমলারা তৃণমূলে জনসংযোগে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন। আগামী দিনের ক্ষমতা ভাগাভাগিতে পঞ্চরত্নের কার কতটি আসন থাকবে তা নিয়ে সৃষ্টি হওয়া গোপন তৎপরতায় ক্ষণে ক্ষণে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মিশন বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের দফতরগুলো।
দলীয় সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী অবশ্য কয়েকবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আগামীর নির্বাচন অবশ্যই অতীতের মতো হবে না। তিনি একটি তুমুল প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনকে মাথায় রেখে সত্যিকার অর্থে জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য দলীয় নেতৃবৃন্দকে আগামীতে মনোনয়ন দেয়ার জন্য তালিকা তৈরির কথা বলেছেন। অন্য দিকে দলীয় সাধারণ সম্পাদক হররোজ বিভিন্ন বক্তৃতা ও বিবৃতির মাধ্যমে সুবিধাভোগী হাইব্রিডদের বিরুদ্ধে বলে যাচ্ছেন। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও দলীয় অফিসগুলোতে ত্যাগী নেতাকর্মীরা যেমন আসছেন না তেমিন পঞ্চরত্নের তৎপরতা কমার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী কিংবা দলীয় সাধারণ সম্পাদক যতই বলুন না কেনো, আগামীর নির্বাচনটি প্রতিযোগিতামূলক হবে তাতে দলীয় সুবিধাভোগীরা গা করছেন না বা করবেন না। কারণ তারা জানেন, তাদের দেহ-মন-মানসিকতা এবং রাজনৈতিক যোগ্যতা কোনো প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক মাঠে খেলার উপযুক্ত নয়। তারা তাদের উপার্জিত বৈধ-অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির পাহাড় রক্ষা, নিরাপদে সরে পড়ার জানালা-দরজা তৈরির পাশাপাশি আরো একটি বিনা ভোটের সুবিধাবাদী নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার ফন্দিফিকির করে যাচ্ছে। যেহেতু চক্রটির শক্তিশালী পাঁচটি শাখা রয়েছে, তাই তাদের প্রভাব কাটিয়ে উঠে দলকে হঠাৎ করে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের পথে হাঁটানো অত সোজা নয়। যারা একবার ফাঁকিবাজি, ভাঁওতাবাজি, দুর্নীতি, দুরাচার, জুলুম-অত্যাচারের অমানবিক ও অসামাজিক মজা পেয়ে গেছে, তারা আল্লাহর হেদায়েত অথবা পরাজিত হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এমনতরো ক্রীড়াকর্ম থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারে না।
গত তিন-চার বছরে সারা দেশে সুবিধাভোগীদের একটি বিশেষ শ্রেণী এবং স্তর পয়দা হয়ে গেছে। ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী, দালাল, টাউট প্রভৃতি শ্রেণীর লোকেরা জাতীয়, স্থানীয় এবং তৃণমূলপর্যায়ে সুবিধাবাদীদের বেশ কয়েকটি স্তর গড়ে তুলেছে। সাধারণত তাদের বিকটাত্মীয় অরাজনৈতিক ব্যক্তি অথবা অন্য দল করা আত্মীয়কে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগে হাইব্রিড হিসেবে আত্মীকরণ করে যাবতীয় ব্যবসাবাণিজ্য, কাজকর্ম, সুযোগ-সুবিধা, ঘুষ-দুর্নীতি, দখল, চাঁদাবাজি ইত্যাদির সোল এজেন্ট বানিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া সময় ও সুযোগ মতো তারা উচ্চমূল্যে বা অতিরিক্ত কমিশন বা উৎকোচের বিনিময়ে সরকারি কাজকর্ম ভিন্নমতের ঠিকাদারদের কাছে হস্তান্তর করে দিচ্ছে। এ দিয়ে আওয়ামী লীগের সত্যিকার ত্যাগী এবং আদর্শবান নেতাকর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রথমে হতাশায় রূপ নেয় এবং ধীরলয়ে তা তাদেরকে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিষ্ক্রিয় বানিয়ে ফেলে।
তিন বছর ধরে সরকারি আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং রাষ্ট্রীয় মদদে যে বিশাল শ্রেণীটি ফুলে-ফেঁপে বটবৃক্ষের মতো হয়েছে তাদেরকে রাতারাতি হটিয়ে বঞ্চিত, শোষিত, নিষ্পেষিত, হতোদ্যম এবং দুর্ভিক্ষে কৃষকায় হয়ে পড়া জনপ্রিয় এবং ত্যাগী নেতাদেরকে চাইলেই পুনঃপ্রতিষ্ঠিত বা পুনঃস্থাপিত করা যায় না বা যাবে না। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক নম্বর পছন্দের মিশন হলো গত ৫ জানুয়ারির মতো আরো একটি খালি মাঠের একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করা।
সেই লক্ষ্যে তারা তখন মিশন বাস্তবায়নে কঠোর শ্রম, মনন ও মেধার সমাবেশ ঘটিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ করেই বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ নামের একটি রূপকল্প ঘোষণা করে বসলেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারি দলকে এবার অবশ্যই তার মিশন পরিবর্তন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য সারা দেশের জনপ্রিয়, ত্যাগী এবং নির্বাচনে জিতে আসার মতো সামর্থ্যবান নেতাদেরকে ডেকে এনে একের পর এক বৈঠক করে জেলাওয়ারি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা বুলেট আকারে সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে।
যতটুকু মদদ ও রসদ দিয়ে হাইব্রিড পয়দা করা হয়েছে তার চেয়েও দ্বিগুণ শক্তি প্রয়োগ করে এগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা না গেলে আগামী নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলেও কোনো কাজে আসবে না। কারণ হাইব্রিরা শত্রুপক্ষের পুঁতে রাখা মাইন, টর্পেডো বা জীবাণু অস্ত্রের মতো নিজ পক্ষের প্রার্থীদের সর্বনাশ ঘটাতে থাকবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন