গোলাম মাওলা রনি
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সাম্প্রতিক এক বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছে। সরকারের দায়িত্বশীল নেতারা অত্যন্ত সকর্তার সাথে তাদের চাপা ক্ষোভ এবং বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। অন্য দিকে, সাধারণ নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে সামাজিক মাধ্যমে, চায়ের আড্ডা এবং দলীয় কার্যালয়ে ইনু ও তার নেতৃত্বাধীন খণ্ডিত জাসদের একাংশ নিয়ে মুদ্রণের অযোগ্য নানাবিধ কটুবাক্য সংবলিত কথাবার্তা বলে চলেছেন।
সরকারবিরোধীরা দীর্ঘ দিনই ইনুর আচরণ, কর্থাবার্তা, বক্তৃতা-বিবৃতি এবং কর্মকাণ্ড নিয়ে নিদারুণভাবে অসন্তোষ। তারা মনে করেন, ইনু সরকারের মন্ত্রী হিসেবে টিকে থাকার জন্য বিরোধী দল, জামায়াত এবং বিএনপি নেত্রী সম্পর্কে উত্তেজক কথাবার্তা বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী মহলে একটি পাকাপোক্ত জায়গা তৈরির জন্যই দিনরাত ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-গবেষণা ও চেষ্টাতদবির করে থাকেন। এ অবস্থায় শাসক দলের সাথে তার বিরূপ সম্পর্ক দেখে সরকারবিরোধীরা বিরাট, বিশাল ও ব্যাপক বিনোদনের সাগরে আনন্দে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
সরকার ও বিরোধী দল ছাড়াও দেশের সচেতন জনগোষ্ঠী ইনুর বক্তব্যে বেশ আশ্চর্য হয়েছেন এবং তাকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে দেশের রাজনীতিতে নতুন কোনো সমীকরণ হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার আগে ইনুর সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং বক্তব্যের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করলে সম্মানিত পাঠকদের পক্ষে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা সহজতর হবে। আমার মতে, ইনু ত্রিমাত্রিক মানসিক টান, সরকারদলীয় সাধারণ নেতাকর্মীর তুচ্ছতাচ্ছিল্যময় কথাবার্তা এবং শীর্ষ নেতৃত্ব তাকে এবং তার দলকে নানামুখী চাপে রাখার কারণে ইচ্ছে করেই নিজের অবস্থান জানান দেয়ার জন্য কুষ্টিয়া জেলার একটি জনসভায় আলোচ্য বিস্ফোরক মন্তব্যটি করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বলেন- আমাদের ছাড়া হাজার বছর চেষ্টা করেও ক্ষমতায় যেতে পারবেন না। একই বক্তৃতায় তিনি আরো কিছু চৌম্বক বাক্য উচ্চারণ করেন। যথা- আওয়ামী লীগের মূল্য ৮০ পয়সা। আর এরশাদ, ইনু, দিলীপ বড়ুয়া ও রাশেদ খান মেনন প্রমুখ নেতার সম্মিলিত শক্তির মূল্য ২০ পয়সা। ২০ পয়সা যদি ৮০ পয়সার সাথে যুক্ত না হয় তবে যেমন কোনো দিন এক টাকা পূর্ণ হয় না; ঠিক তেমনি ইনুদের ছাড়া আওয়ামী লীগ কোনো দিন ক্ষমতায় যেতে পারবে না। বিষয়টি বোঝানোর জন্য তিনি বলেন, আমাদের ছাড়া রাস্তায় ভ্যা ভ্যা করে ঘুরতে হবে, কিন্তু কোনো কাজ হবে না...।
ইনু তার নিজের দলের শক্তিমত্তা বুঝাবার জন্য আরো বলেন- জাসদের লাঠির সামনে দাঁড়ানোর শক্তি কারো নেই। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমাদের নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবেন না। ইনুর সাম্প্রতিক বক্তব্যের নেপথ্যের প্রধান কারণ হলো সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতা মাহবুবউল আলম হানিফের সাথে তার রাজনৈতিক মতবিরোধ, স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং একজন অপরজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অদম্য বাসনা। মূলত কুষ্টিয়া জেলার আঞ্চলিক রাজনীতি বিশেষত নির্বাচনী এলাকার মনোনয়ন এবং প্রাধান্য বিস্তার কেন্দ্র করে হানিফের সাথে ইনুর বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘ দিন। বিরোধটি রাজনীতিতে প্রবল না হলেও কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর অঞ্চলে রীতিমতো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর্যুপরি উসকানির বিপরীতে নিজস্ব কর্মী বাহিনীর মনোবল চাঙা করার জন্য ইনুর উল্লিখিত বক্তব্য দেয়া ছাড়া হয়তো গত্যন্তর ছিল না।
দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা খুব ভালো করেই জানেন, ইনু, রাশেদ খান মেনন কিংবা দিলীপ বড়–য়া কেউই তাচ্ছিল্য করার মতো ব্যক্তিত্ব নন। হতে পারে, তাদের রাজনৈতিক দলটি প্রচলিত চারটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের মতো দেশব্যাপী বিস্তৃত নয়। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করা অসম্ভব, তাদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক যোগ্যতা, শিক্ষাদীক্ষা পারিবারিক ঐতিহ্যের সাথে তুলনা করা যাবে এমন লোক বৃহত্তর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খুব কমই রয়েছে। ইনু এবং তার দল জাসদের বিরুদ্ধে সরকারি দলের লোকজন অভিযোগ করেন, তারা বঙ্গবন্ধু হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ট্যাঙ্কের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লাস করেছিলেন ইত্যাদি। জাসদ এসব অভিযোগ স্বীকারও করেনি আবার অস্বীকারও করেনি। বরং অত্যন্ত কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে- মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে তারা আওয়ামী লীগের সাথে ঐক্য করেছে।
ইনুদের অব্যক্ত মর্মবেদনা এবং মানসিক চাপের বহুবিধ কারণ রয়েছে। প্রথমত, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে সরকারের অত্যন্ত সংবেদনশীল বলে পরিচিত তথ্য মন্ত্রণালয়টি চালিয়ে আসছেন। স্বাধীনতার পর সব সরকারের তথ্যমন্ত্রী অর্থাৎ ইনুর পূর্বসূরিরা নানা কেলেঙ্কারি অদক্ষতা ও অপেশাদারিত্বের কারণে বারবার সংশ্লিষ্ট সরকারকে বিপদে ফেলেছিলেন। কেউবা আবার পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে ইনুর দায়িত্ব পালন নিঃসন্দেহে সরকারের প্রশংসিত হওয়ার কথা। অধিকন্তু তিনি আওয়ামী মন্ত্রী না হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন ইস্যুতে আগবাড়িয়ে সরকারের পক্ষে যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে কথা বলেন, সেভাবে মহাজোটের অন্য কোনো মন্ত্রী বলেন না। অন্যরা যেখানে দায়িত্ব এড়িয়ে, অথবা বিতর্ক এড়িয়ে নতুবা সরকারবিরোধীদের চোখে ভালো মানুষ হওয়ার মানসে চুপটি মেরে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকেন সেখানে ইনুর সক্রিয় পদচারণা শাসক দলের কাছে নিন্দিত হলে তিনি মন খারাপ করবেন, এটাই স্বাভাবিক।
সরকারি দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা ইনুর কর্মকাণ্ড অথবা শাসক দলে তার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করতে পারেন না। তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ একাই একশো। ইনুদের মতো ব্যক্তি এবং দল যাদের পনেরো, ষোলোটি একত্র করলে যেখানে সাকুল্যে মূল্য দাঁড়ায় মাত্র কুড়ি পয়সা, সেখানে একক দল বা ব্যক্তিবিশেষের মূল্য কত হতে পারে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রীতিমতো মশকরা শুরু করেছেন। তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ একাই সরকার গঠন করতে পারতÑ অযথাই অনেক সংসদীয় আসন এবং মন্ত্রিত্ব দলের বাইরে ছেড়ে দেয়ায় তারা যারপরনাই বিক্ষুব্ধ, হতাশ ও বিরক্ত। তারা তাদের চলনেবলনে, আচার-আচরণে এবং কাজকর্মে নিজেদের বিরক্তি এমনভাবে ফুটিয়ে তোলেন যা ইনুদের মতো শরিকদের নেতা-কর্মীদের জন্য রীতিমতো অবমাননাকর হয়ে ওঠে। ফলে পদ-পদবি, এমপিগিরি এবং মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পরও সামাজিক স্বীকৃতির অভাবে তারা সবসময় একধরনের মর্মবেদনায় ভোগেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব সম্পর্কেও ইনুদের অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে। শরিকদের যথাযথ মূল্যায়ন তো দূরের কথা- তাদের উপস্থিতি এবং অস্তিত্ব সম্মানের সাথে স্বীকার করা হয় এমন দৃশ্য তারা মাঝে মধ্যে কল্পনা করেন। অধিকন্তু তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইংরেজদের মতো ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসির আলোকে তাদের দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব, ফ্যাসাদ এবং কলহ-বিবাদ লাগিয়ে রেখেছেন। ফলে ঘরে এবং বাইরে তারা একমুহূর্ত স্বস্তিতে কাটাতে পারছেন না। দল ভেঙে যাওয়া, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা সরকারের তাঁবেদারে পরিণত হওয়া এবং দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্য ভঙ্গ করার মতো ঘটনা যে কারো কূটচাল ও মদদে হচ্ছে তা ইনুরা না বোঝার মতো পর্যায়ে নেই।
আমি মনে করি, আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী বিশেষ করে তরুণ তুর্কি, যারা ইনু, রাশেদ খান মেনন অথবা সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের প্রয়োজনীয়তা অথবা যোগ্যতা নিয়ে হরহামেশা নানা প্রশ্ন তোলেন তারা হয়তো প্রকৃত ঘটনা জানেন না নতুবা এসব ঘটনা মনে করতে চান না। যারা ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত জাসদের রাজনীতি দেখেছেন অথবা যারা ১৯৮০ সালের পর এরশাদ শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি করেছেন তারা জাসদের লাঠির ওজন ও গুরুত্ব খুব ভালোভাবেই জানেন। তাদের সাহস, শক্তি, সাংগঠনিক ক্ষমতা, ঝুঁকি নেয়ার কৌশল এবং প্রচার-প্রপাগান্ডা চালানোর ব্যতিক্রমী দক্ষতার সাথে বাংলাদেশের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠিত দলের তুলনা চলে না।
বঙ্গবন্ধুর মতো হিমালয়সম ব্যক্তিত্ব এবং কিংবদন্তির জনপ্রিয়তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ইতিহাস কেবল জাসদেরই রয়েছে। একটি স্বাধীন দেশের প্রশাসন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীকে টেক্কা দিয়ে সশস্ত্র আন্দোলন চালানো এবং প্রতিটি বাহিনীর মধ্যে নিজেদের লোক ঢুকিয়ে দিয়ে প্রতিবিপ্লব ঘটানো, কাউন্টার অ্যাটাক করা এবং অ্যামবুশ চালানোর দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সাহস এবং ইতিহাস পুরো পাক-ভারতে একমাত্র জাসদেরই রয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠিত, জনপ্রিয় এবং সার্বভৌম সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশী মদদ লাভ এবং বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ, অস্ত্রপাতি এবং অর্থপ্রাপ্তির সমন্বয় ঘটিয়ে বিপ্লবের কার্যক্রম চালানোর ইতিহাসও তাদের রয়েছে। আমি তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার দুঃসাহসিক বালখিল্য দেখাতে চাই না। কারণ, একবারের সৈনিক সারাটি জীবনের জন্যই সৈনিক হিসেবে বেঁচে থাকে। সাহসীরা কোনো কালে হঠাৎ ভীরু বা কাপুরুষ হয়ে পড়েছিল- এমন ইতিহাস পড়িনি। অথবা কোনো প্রশিক্ষিত অস্ত্রধারীর অস্ত্র কেড়ে নেয়ার পর তার প্রশিক্ষণ কেড়ে নেয়া যায় এমনটিও জানি না।
ইনুর বর্ণিত জাসদের লাঠির ওজন ও নিষ্ঠুরতা অনুধাবন করার জন্য ১৯৭৩-১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিকে একটু নজর দেয়া যাক। সেই সময়ের রক্ষীবাহিনী কিংবা সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পুলিশকর্তাদের দাপটের সাথে বর্তমানের আলোচিত ও সমালোচিত কর্মকর্তাদের পারফরম্যান্স বলতে গেলে নস্যি। বিভিন্ন সময়ে জাসদ দাবি করে আসছে, রক্ষীবাহিনীর হাতে তাদের ৩০ হাজার নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। কাজেই সেই আমলের গুম, খুন, অত্যাচারের কথা কেবল ভুক্তভোগীরাই অনুধাবন করতে পারবেন। বর্তমান রাজনীতির যে হালহকিকত তাতে বিরোধী দলের লোকজন যেভাবে সরকারি বাহিনী ও সরকারদলীয় উগ্র কর্মীদের ভয় পাচ্ছেন, তারা যদি রক্ষীবাহিনী দেখতেন তাহলে পরিস্থিতি কী হতো তা ভাবাই যায় না। অথচ সেই সঙ্কটকালে ইনুরা বুক ফুলিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এবং রক্ষীবাহিনীকে নাস্তানুবাদ করে ছেড়েছেন।
কাজেই আমি মনে করি, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব জাসদের ইতিহাস জেনেই তাদের সাথে ঐক্য করেছেন। অন্য দিকে, জাসদ বেশ ভালোভাবে হিসাব করেই আওয়ামী লীগের সাথে ঐক্য করেছে। মাহবুবউল আলম হানিফের সাথে বিরোধিতা কিংবা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্যের কারণে জাসদ হয়তো বেদনাহত হবে কিংবা হুঙ্কার দিয়ে নিজেদের অতীত শক্তিমত্তার জানান দেবে, কিন্তু শেষমেশ আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়ে বিরোধী শিবিরে যোগ দেবে এমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সরকার বা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে তাদের পতন হবে এমন চিন্তা করে যারা দূরে বসে মুচকি হাসেন তাদের হতাশার জন্যই বলছি- স্বার্থের জন্য যখন চতুর, বুদ্ধিমান এবং সাহসী লোকেরা ঐক্যবদ্ধ হন, তখন সেই ঐক্য কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগেই বিনষ্ট হতে পারে।
আওয়ামী লীগের যেসব সাধারণ নেতাকর্মী ইনু বা জাসদকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন অথবা তাকে দু’আনা বা চার পয়সার নেতা বলে ব্যঙ্গ করেন, তারা হয়তো খেয়াল করেননি যে, আওয়ামী লীগের নৌকার মাস্তুলে জাসদের জ্বলন্ত মশাল শোভা পাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যদি অসতর্ক হয় তবে মশালের আগুনে নৌকার পালে আগুন লাগবে এবং ভাগ্য খারাপ হলে সেই আগুন বিস্তার লাভ করে আরো অনেক কিছু ভস্মীভূত করে ফেলবে। তাদের আরো মনে রাখা উচিত, পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি, সাহস এবং পেশাদারিত্বের কৌশল। এসব গুণসংবলিত মানুষকে বোগলদাবা করে নির্বোধ সাজানো যায় ক্ষণেকের তরে। কিন্তু যারা বোগলদাবার কাজটি করে আত্মতৃপ্তিতে ভোগেন তাদের পরিণতি কতটা ভয়াবহ ও রক্তাক্ত হতে পারে তার নমুনা পৃথিবীর রাজনীতির ইতিহাসে অসংখ্যবার রক্তের হরফে লেখা রয়েছে।
ইনুর ব্যাপারে আরেকটি প্রসঙ্গের অবতারণা করে আজকের লেখা শেষ করব। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইনুই হলেন সেই সব বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে অন্যতম, যিনি শুরু থেকে আজ অবধি তার রাজনৈতিক বিশ্বাসে অবিচল আছেন। কোনো স্বৈরাচারীর দোসর হয়ে গৃহপালিত অথবা কোনো সামরিক সরকারের সুবিধাভোগী হয়ে নীতি ও আদর্শের সাথে বেইমানি করে গণতন্ত্রের বুকে লাথি মারেননি। দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জাতীয় পর্যায়ে তার ভূমিকা ছিল উল্লেখ করার মতো। শত বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও জাসদকে তিনি শক্তিমত্তার সাথে ধরে রেখেছেন এবং নিজস্ব স্বকীয়তাসহকারে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রেখেছেন। আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ হিসেবে ইনু তার নিজস্ব লোকদের কাছে আকর্ষণীয়, গ্রহণীয় এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। অপর পক্ষে, তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে কোনো দিন দুর্বল, অসহায় এবং সস্তা ভাবার সুযোগ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই। কাজেই তাকে দু’আনার মানুষ ভেবে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা লোকজন নিজেদের অজান্তে দলের জন্য কতটা ভুল করছেন তা মূল্যায়ন করা অতি জরুরি।
পাঠক মন্তব্য
inu jashod-derr hatheii..mujib bakshal-derr hottaa hoyeshiilo..inu jashod-derr laathiirr jorr kaake..bole..mujib bakshal-raa dekheshe..oboiidho hasina aowami-derr golaay dorii..inu jashod-raa aabaarr aowami-derr ghore..ghore..dhukiiyaa geshe..aarr kono baasiibaarr upaay naaii..hasina aowami-derr ghorerr baahiire..viitore..inu jashod-derr laathiirr aaghaate..hasina aowami-derr jiibonn dhongsho hoiiyaa jaaiiteshe aaro jaaiibe..shaaraa deshe..deshe.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন