এমন এক ঘটনার জন্য খবরের শিরোনাম হলেন পাবনার বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম যা সত্যিই কাম্য নয়। গতকাল বুধবার ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন না করায় স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর ওপর চটে গিয়েছিলেন ফারজানা খানম। এ সময় ইউএনও উত্তেজিত হয়ে এই সাংবাদিককে বলেন, আপনি কতদিন ধরে সাংবাদিকতা করেন। আপনি জানেন না একজন ইউএনওকে স্যার বা ম্যাডাম বলতে হয়।
প্রিয় ফারজানা খানম আপনার কাছে সবিনয় প্রশ্ন হচ্ছে, প্রশাসনিকভাবে আপনি অবশ্যেই ম্যাডাম বা স্যার বলে সম্ভোপন পাওয়ার যোগ্য এবং সেই অধিকার আপনাকে প্রশাসনিক কাঠামোই দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় আপনি একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে ম্যাডাম সম্বোধিত হতেই পারেন! আমার কথা হলো, জনসাধরণ নিয়ে কাজ করার সময় কেউ যদি আপনাকে ‘আপা’ বলে সম্ভোধন করে সেটা কেন মেনে নিতে পারেন না? কিসের এত অহংকার আপনার? এই দেশে সাংবিধানিকভাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সর্বোচ্চ পদমর্যাদার অধিকারী। সাংবাদিক বান্ধব এই মানুষটিকে অনেকে এখনো ‘ভাই’ বলে সম্ভোধন করেন।
প্রিয় ফারজানা প্রশাসনিকভাবে আপনি সর্বোচ্চ সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় আসতে পারেন। নিজের কর্মদক্ষতা দিয়ে আপনি ভবিষ্যতে এমন আসনে বসবেন এটাও প্রত্যাশা করি। কিন্তু একটা কথা না বললেই নয় যে, বর্তমান সচিবালয়ের অনেক সিনিয়র সচিরাই সাংবাদিকদের ভাই বা আপা বলে সম্ভোধন করলে তারা উত্তেজিত হন না। আপনার কেন উত্তেজনা দেখাতে হবে? আপনার পূর্বসূরীরা যেখানে সাংবাদিকদের এমন সম্ভোধন মেনে নিতে পারেন হাসিমুখে, সেখানে আপনি কেন এত উত্তেজনা দেখাবেন।
তবে কি মেনে নিতে পারি আপনি প্রশাসনের বাইরে কখনো কারো মুখে আপা ডাক শুনেননি। আপনার পরিবারের কেউ কি আপনাকে আপা বলে ডাকে না? সাংবাদিকরা আপনার পরিবারেরই সদস্য। তাই হয়তো আপা বলেন। এটাকে মেনে নিতে শিখুন। ব্যক্তিসম্পর্ক ভালো থাকলেই আপনি প্রশাসনিকভাবেও ভালো থাকবেন। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা। ভবিষ্যতে যেন কেউ আপা বললে রাগ না করেন, সেদিক খেয়াল রাখারও অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে পেশাগত কাজে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও সময় টিভি’র পাবনা প্রতিনিধি সৈকত আফরোজ আসাদ মুঠোফোনে ইউএনও ফারজানা খানমের বক্তব্য জানার জন্যে ফোন করেন। মুঠোফোনে আলাপের মাঝে তাকে আপা বলে সম্মোধন করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ সময় তার সাথে অনেক বাকবিতণ্ডা হয়।
এক পর্যায়ে ওই সংবাদকর্মী সদ্য বিদায়ী পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালোকে আপা বলে সম্মোধন করার বিষয়টি অবহিত করলে ইউএনও ফারজানা খানম বলেন, স্যারের বিষয়টি জানি না। আমাদের চাকরিতে নিয়মকানুন আছে অবশ্যই আমাকে স্যার বা ম্যাডাম বলে সম্মোধন করতে হবে। অন্য কারোর সাথে আমাকে বিবেচনা করা যাবে না।
উৎপল দাস
লেখক: সিনিয়র প্রতিবেদক পূর্বপশ্চিম বিডি ডট নিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন