মিনা ফারাহ
খালেদার হায়াত-মউত নিয়ে ওবায়দুলের বক্তব্যে আবদুল আলীমের বিখ্যাত এই গানটির কথাই মনে পড়ল। জবাবে রিজভী এবং ফখরুলের প্রতিক্রিয়ায় ইঙ্গিত, ম্যাডামের পালকি যেন দুয়ারে চলে এসেছে। মুখে আল্লাহ-রসূল বলার জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হতে হবে (যুগান্তর-নয়া দিগন্ত, ২০ এপ্রিল)। গয়েশ্বর বাবু বলেছেন, নেত্রীর লাশের জন্য জেলগেটে অপেক্ষা করতে হবে। দায়িত্বশীল পদে থেকে কথাগুলো বলায়, মৃত্যুর সব দায় আওয়ামী লীগের মহাসচিবেরই। চিকিৎসা নিয়ে শুধু ছলচাতুরিই নয়, জেলগেট থেকে প্রত্যেককেই ফেরত দেয়ায় যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত।
কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মতো গোপনে এমন কর্মকাণ্ড না চলুক, যা মৃত্যুর নিশ্চয়তা। এত ছলচাতুরি কেন? রহস্যজনকভাবে গৃহপরিচারিকা ফাতেমাও অদৃশ্য!!!
‘তারেককে ফেরত নেবই’-
লন্ডনে এই বক্তব্যে, প্রতিশোধস্পৃহার উচ্চতা স্পষ্ট হলো। মা-পুত্র উভয়কে বিদায় দেয়ার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা। ওই বক্তব্যে, পোকায় খাওয়া ২০ দলের কেউ অবাক না হলেও, উত্তাল সোস্যাল মিডিয়া। মায়ের বিরুদ্ধে মিশন হাতে, পুত্রকে দেশে এনে দণ্ড কার্যকর করতে, লন্ডনে প্রতিহিংসার গোলাবারুদ। এক পরিবার ছাড়া আর কেউই ক্ষমতায় না থাকার ডেসপারেশন বলে এটা জনগণের কাছে মনে হতে পারে। রানীরা আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকলেও, প্যালেস থেকে পার্লামেন্ট কিন্তু আলাদা। আমাদের বেলায় প্যালেস এবং পার্লামেন্ট একাকার। ’৭১-এর সংগ্রামীদের একাংশ আজ কার্যত গণতান্ত্রিক কমিউনিস্ট আগ্রাসনের পক্ষে।
সংবিধানের ওপর বারবার হামলা চালিয়েও, প্রতিরোধের অভাবে, আরো অদম্য হাইকমান্ড। ‘১/১১’ করেও ছাড় পেয়েছেন। ‘৫ জানুয়ারি’ করেও ক্ষমতাচ্যুত হননি। এমনকি হিলারি পর্যন্ত জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন কারা! সামনের নির্বাচনটা আগের চেয়েও বড় আন্তর্জাতিক ট্রেড। ওয়াটারগেট, ক্লিন্টনগেট, রাশিয়াগেট করে পার পাওয়া যায় না। ‘৫ জানুয়ারি’ করে পাওয়া যায়।
বহু বছর রাজনীতিতে থাকায়, রাজনীতির হিসাব-নিকাশ ম্যাডামের জানা। জাতীয় নির্বাচন কার হাতে, ‘১/১১’-এর পরেই জানতেন। তার পরেও নির্বাচনকে ট্রেড বানানোর বিরুদ্ধে নীরব। যেমন- ভারত পাঁচ বিলিয়ন দিলে, সাথে সাথে ৫০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী হাজির। চীন স্টকমার্কেটের আংশিক মালিকানা কিনতে চাইলে, তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠা দিল্লি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সচিব পাঠিয়ে, নীতিনির্ধারকদের হুমকি-ধমকি। শুরু হলো স্টকমার্কেট নিয়ে ট্রেড ওয়্যার। তখন খুশি-বেজারের প্রশ্নে, এমন এক ঝামেলা ঢুকিয়ে দিলেন হাইকমান্ড, উভয়ই হাত গোটাল। রাশিয়া রূপপুর প্রকল্প নিলে, প্রতিযোগিতা দিয়ে ভারত নিলো সুন্দরবনের কয়লা প্রকল্প। চীন থেকে সাবমেরিন ক্রয়ে দারুণ ক্ষুব্ধ আমেরিকার দাবি, সমুদ্র ব্লকের ইজারা চাই। ইজারার মাধ্যমেই চীনকে শায়েস্তা করতে হবে। অস্ত্র বিক্রিতে রাশিয়ার চেয়ে এগিয়ে চীন। ক্ষুব্ধ ভারত প্রস্তাব দিলো, আমাদের অস্ত্রই কিনতে হবে, হোক তা তৃতীয় শ্রেণীর। কাউকেই বেজার রাখা যাবে না। পরাশক্তিগুলো একদলীয় শাসনের পক্ষে বলেই প্রমাণিত। ওই হিসাবেই খালেদাকে মাইনাস করার পথে। সপ্তম সংসদে ক্ষমতায় থেকেও, ভোটচোরদের বিরুদ্ধে কেন সতর্ক হননি ম্যাডাম? এতদিনে খাল ভরে ফেলেছে কুমির।
উন্নতির নামে ৯ বছর ধরে যে প্রচণ্ড ব্লাকমেইল চলছে, একটি প্রতিবাদও করেননি! এই ভুলের ক্ষতিপূরণ দেয়ার মতো প্রতিটি শক্তিকেই বিলুপ্ত করা হলো।
অসম বাণিজ্য এর অন্যতম প্রমাণ। ১০ টাকার পণ্য বিক্রি করে প্রতি বছর ২০ টাকার পণ্য কিনলে, ১০ বছর পরে মূলধন হবে শূন্য। এক ব্যক্তির কর্মকাণ্ডে, তলাবিহীন ঝুড়ির বদলে বাংলাদেশ এখন, তলা আটকানো বিশাল ঋণের গোডাউন।
উদাহরণস্বরূপ, ১৭ এপ্রিল, মানবজমিনে ভয়ানক তথ্য। ‘৮ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ৯৭ হাজার কোটি টাকা।’ ... বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি হয়েছে ২০১০-১১ অর্থবছরে। পরিমাণ ৯৯৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার। চলতি বছরে সাত মাসেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি এক হাজার ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। লিখেছে, ... প্রতি ডলার ৮৩ টাকা হলে ঘাটতির পরিমাণ বেড়েছে ৪৬ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। রফতানির তুলনায় আমদানির পরিমাণ এবং ব্যয় বেশি হলে এটা হয়। এ জন্য পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নাম উল্লেখ করেছে। ঘাটতি মেটানো হয় বিদেশী বিনিয়োগ দিয়ে এবং এই খাতেও চলছে ঘাটতি। ফলে ব্যালেন্স অব পেমেন্টও ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। আলোচিত সময়ে আমদানি বেড়েছে ২৬.২২ শতাংশ হারে। অন্য দিকে, রফতানি বেড়েছে মাত্র ৮.০৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৪৮ কোটি ডলারের মাইনাস ঋণ, যা এখনো অব্যাহত।
এই মাপের দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে বরাবরই চুপ ছিলেন। অর্থ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেও ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করেননি। এত বড় মাপের নেত্রীর কাছ থেকে এসব তো কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য ছিল না!
লাখ লাখ নেতাকর্মীর জীবন হারাম করলেও কিছু বলা হয়নি। শুধু গ্রাম ছাড়াই নয়, দেশ ছাড়া করলেও কার্যকর প্রতিবাদ ছিল না। কারাগার ভরে ফেললেও, নীরব। জেলে বহু রাজবন্দির মৃত্যুর খবরে- প্রতিক্রিয়াহীন। ভুয়া মামলা, গুম-খুন-ক্রসফায়ার... সংখ্যা এখন পুরনো। ব্রিটিশ যখন অবিভক্ত ভারতে ছিল, সেই পরিস্থিতি আর এই পরিস্থিতি এক নয়। এখন সত্যাগ্রহ করতে গেলে মানুষ হাসবে।
ম্যাডামের সবচেয়ে বড় ভুল, ক্যাঙ্গারু কোর্টের বিরুদ্ধে নীরবতা। বিদেশীরা প্রতিবাদ করলেও, জোট নেতাদের ফাঁসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেননি। সেই সুযোগে, কর্তৃত্ববাদীরা তাকেও মৃত্যুর কোলে তুলে দিলো।
অবৈধদের তিনিই যখন বৈধতার ভাষায় সম্বোধন করলেন, দেশী-বিদেশীরা ভুলে গেল, ৫ জানুয়ারির প্রধানমন্ত্রী, প্রকৃত অর্থেই প্রধানমন্ত্রী নন।
যে প্রসঙ্গটি হাতছাড়া করা বিশাল অঙ্কের ভুল, তা হলো- যত দিন না আপিলের মাধ্যমে বৈধ হবে, তত দিন পর্যন্ত ৫ জানুয়ারির অবৈধরা, অবৈধই থাকবে। আপিল এড়াতেই সর্বোচ্চ রায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। এ ছাড়া নিরুপায় হাইকমান্ড। ম্যাডাম এসব জানতেন।
১৬তম সংশোধনীর মামলাটা কিন্তু বৈধ-অবৈধ নিয়ে নয়, বরং পার্লামেন্টের হাতে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা নিয়ে। অথচ রায়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে গেল অন্য কিছু! মহামান্য আদালত বলেছেন, ১৫৪ জন অবৈধ সংসদ সদস্যের হাতে অভিশংসনের ক্ষমতা কিসের? অতএব, সিনহাকে দেশে রাখলে, পার্লামেন্ট থাকবে না। দেশত্যাগে বাধ্য করলে, পথের কাঁটা পরিষ্কার। সেজন্যই বিতাড়িত করার এত মাস পরেও রায়ের ধারেকাছেও নেই। যা প্রধান বিচারপতির পদে বসান, আপিল হলে, আগের সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন অন্যপক্ষ। ম্যাডাম কি জানতেন না, ১১তম সংসদে, ১৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে সেই ক্ষমতাই ফিরিয়ে আনবেন হাইকমান্ড?
পৃথিবীতে এমন গণতন্ত্রের দৃষ্টান্ত নেই। ‘গণতান্ত্রিক কমিউনিজম’ রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। এটা গণতন্ত্র এবং ফ্যাসিতন্ত্রের খিচুড়ি। যখন কোটা আন্দোলন করে দাবি আদায়ের কথা, উল্টা ‘মাদার অব এডুকেশন’ আদায় করে রাজপথ ছাড়তে বাধ্য করা হলো। গণতান্ত্রিক কমিউনিজম এতটাই ডেঞ্জারাস, ৫ জানুয়ারি করে আরো বেশি ডেসপারেট। প্রমাণ, লন্ডনে যারপরনাই ডেসপারেশন।
কমিউনিজম, ফ্যাসিজম, ফিউডালিজম সার্চ দিলে হাজার হাজার ওয়েবসাইট এবং লিংক। কিন্তু ৯ বছর ধরে যে গণতান্ত্রিক কমিউনিজম, সার্চ দিলে, ফলাফল শূন্য। ‘পৈতা’র সাফল্য এটাই। আমার ধারণা, ভবিষ্যতে হার্ভার্ড, কেমব্রিজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোয় ‘ফ্যাসিক্রেসি’র গবেষণা হবে। সেই পর্যন্ত হাইকমান্ডের ফিউডালিজমও উন্মুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হবে। সপ্তম সংসদে প্রধানমন্ত্রী হয়েও, আওয়ামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি আইনি পদক্ষেপও নেয়া হয়নি কেন?
জানুয়ারি ২০১৮, সবচেয়ে ভালো থেকে সবচেয়ে খারাপ গণতন্ত্রের তালিকায়, বাংলাদেশের অবস্থানে ধস। বলছি, ‘গণতন্ত্র যেভাবে কমিউনিজম হলো।’ ১০ নম্বরের মধ্যে জার্মানির ৮.৬১, ইন্ডিয়া ৭.২৩, পাকিস্তান ৪.২৬, বাংলাদেশ ৫.৪৩, যা ২০০৬-এ ৬.১। প্রমাণ, ২০০৬-এর তুলনায় বর্তমান অবস্থান নিচে।
বৈশ্বিক রাজনীতিতে বাংলাদেশকে নিয়ে উভয় ব্লকের হিসাব ৫০-৫০। এটাই গণতান্ত্রিক কমিউনিস্টদের খুঁটির জোর। সাথে দুষ্কৃতকারী লিবারেলিজম তো আছেই। বলছি, ইন্দিরার মতো এরাও ‘একাই রাষ্ট্র, একাই দল’।
অন্য দিকে, বিএনপির অবস্থান এই রকম: চারদলীয় জোট হত্যার পর থেকেই, ওবায়দুল কাদেরদের দয়া-দাক্ষিণ্যের জন্য অপেক্ষার দলে পরিণত হয়েছেন ফখরুলেরা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির আবেদন খারিজের তালিকাই প্রমাণ। তার পরেও গান্ধীসুলভ আচরণের অর্থ বুঝলাম না।
দিল্লির চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে চুপ থাকা কেন? যেন স্বেচ্ছায় ভোটের বাক্সটি প্রণব বাবুদের হাতে সমর্পণ। তাদের মিশন একটাই। জোট সরকারকে বিদায় দিয়ে, ২০২১-৪১ মিশন এগিয়ে নেয়া। এর প্রমাণ হাইকমান্ডের মুখে ভাঙা রেকর্ডের মতো। এই জায়গায় আওয়ামী লীগ থাকলে বিএনপির চামড়া তুলে ফেলত। যেমন তুলেছে- ড. ইউনূস থেকে ড. কামাল প্রমুখ শত শত গুণীজনের চামড়া। ম্যাডাম নীরব!
প্রথম থেকেই ভিশন হওয়া উচিত ছিল, ২০৪১ মিশনের কালো ছায়া বিতাড়িত করতে, কোমরে গামছা বেঁধে জনগণকে সাথে নিয়ে রাস্তার আন্দোলন। ৯২ দিনের পর, আন্দোলনের পরীক্ষায় আর কখনোই না গিয়ে, সক্ষমতার পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেন ম্যাডাম।
বিষয়টি হলো, তোরা যে যা বলিস ভাই, তালগাছটি আওয়ামী লীগেরই। ১৯৮১ সাল থেকেই আওয়ামী হাইকমান্ড জানতেন, ট্রেড এবং মিশন কী! প্রমাণ- দুর্বৃত্ত এরশাদের সাথে অবৈধ সংসদে আওয়ামী লীগ। তিনবারই বিএনপি বাদ। ১০ম সংসদকে কৌশলী খেলোয়াড় ভাবলেও আমি তা মনে করি না। বরং সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার প্রমাণ এগুলো। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের ঘাড়ে অতিরিক্ত ছয় লাখ রোহিঙ্গা চাপিয়ে দিলেও, মিয়ানমার এবং ভারত নাকি বন্ধু? মিয়ানমারের ক্ষেত্রে নিজেদের প্রচণ্ড ব্যর্থতা, বারবার এড়িয়ে যান হাইকমান্ড। এর কারণ বুঝি। যেমন বুঝি, হেভিওয়েটদের বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য। দখলদারেরা এটাকে বিশ্বদরবারে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের সাফল্য বলে প্রচার করলেও বিষয়টি বানোয়াট। বরং উন্নতির নামে একরকম ব্লাকমেইল। দৃশ্যত বাংলাদেশ এখন তলাবিহীন ঝুড়ির বদলে, তলা আটকানো আন্তর্জাতিক দুর্বৃত্তদের বিশাল গোডাউন। ক্ষমতায় থেকেও হুকুমের আসামির বিরুদ্ধে কেন চুপ ছিলেন ম্যাডাম? সেই কুমিরই তাকে খেলো।
কথায় বলে, পেটে আগুন না থাকলে তাকে দিয়ে রাজনীতি হয় না। ওবায়দুল কাদেররা শুধু পেটেই নয়, আপাদমস্তক আগুনের গোলা। যে গোলায় ভস্ম জিয়া পরিবার। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। জাত-ধর্ম-একাদশী-দ্বাদশী বলেও কিছু নেই। একমাত্র সংগ্রামী শরিককে যখন নিঃশ্বাস করলেন প্রণবপন্থীরা, ম্যাডাম জানতেন পরবর্তী ঝড়ের সঙ্কেত! দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে তখনই মুখ খুললে, হায়াৎ-মউতের প্রশ্ন আসত না। বহু লিখেছি, এরা কমিউনিস্টদের মতোই ডেঞ্জারাস। কারণ, এরা ‘গণতান্ত্রিক’ কমিউনিস্ট।
২০১৩ সালে সার্কাস সিং-এর (মনমোহন) পর, ২০১৭-১৮ সালে ফের সুজাতা মিশনে, দিল্লির তৎপরতায় উদ্বিগ্ন নয় বিএনপি? সুজাতা মিশন পরিত্যক্ত ঘোষণার দাবি আজ অবধি একমাত্র আমারই। অবশ্য আমার কথা কেউ শুনবে না।
ওবায়দুলের ঘোষণা, ‘নির্বাচনে ভারত হস্তক্ষেপ করবে না।’ এর পরেই রামমাধবের নিমন্ত্রণে দিল্লিতে। লন্ডনে মোদি-হাসিনা বৈঠক হলো। বোঝা গেল, ক্ষমতায় না থাকলেও, প্রণব মিশন অত্যন্ত সাকসেসফুল। ঢাকার পথে মোদি, যা খালেদাকে ফের মাইনাসের অশনিসঙ্কেত! নির্বাচন নিয়ে দিল্লির উদ্বেগ- ০১। সেনা শাসনের আশঙ্কা। ০২. খালেদা মাইনাস নির্বাচনে ষড়যন্ত্রীদের বিপ্লব। মাথাটা ভাবীর, ব্যথা দেবরের?
তালিকার শেষ কোথায়?
দুষ্কৃতকারীদের হাত থেকে সুন্দরবন রক্ষায় কী করল পোকায় খাওয়া জোট? ট্রানজিট, তেল-গ্যাস পাইপ, গভীর সমুদ্রবন্দর, ব্লকের ইজারা, দায়মুক্তি এসব নিয়ে কী আন্দোলন তাদের? চলছে ব্রিটিশের মতোই লুটপাট কিন্তু ঈদের পর ঈদ এলেও আন্দোলন নিখোঁজ।
ওবায়দুলের বক্তব্যের জবাবে বলতেই হয়, এই জায়গায় আওয়ামী লীগ থাকলে, বিএনপির চামড়াই শুধু নয়, মাংস কেটে লবণও লাগাত। একবার নয়, প্রমাণ বারবার দেখেছে দেশবাসী। পাঁচ বছর অবৈধ ক্ষমতা দূরে থাক, ষষ্ঠ সংসদের প্রথম দিন থেকেই বিএনপির চামড়া পুড়িয়ে দিয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান করতে খালেদাকে বাধ্য করেছিলেন হাইকমান্ড! সব জেনেও এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের জনকের উত্তরাধিকারী খালেদা নীরব ছিলেন!
জেলগেটে লাশের অপেক্ষার বদলে, লাখ লাখ নেতাকর্মীকে নিয়ে মার্চ করার বিকল্প নেই। ২০২১-৪১ মিশন পরিত্যক্ত ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। এ টু জেড, একসাথে রাস্তায় না নামার অজুহাত শেষ। অন্যথায় ওদের হাত থেকে খালেদাকে বাঁচানো একেবারেই অসম্ভব। লন্ডনে হাইকমান্ডের ঘোষণা সেটাই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন