মিনা ফারাহ
মানুষের আয়ু চার ভাগে বিভক্ত এবং করণীয় নিয়ে একটি ধর্মগ্রন্থে যা লেখা : ১০০ বছর আয়ুর প্রথম ২৫ বছর জ্ঞানার্জন। দ্বিতীয় কিস্তিতে কর্মযজ্ঞ ও সংসার। তৃতীয় কিস্তিতে আধ্যাত্মিকতা লাভ। সর্বশেষ কিস্তিতে হয় গৃহ সন্ন্যাস, নয় গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী অবস্থায় জীবনাবসান। বিষয়টি বেশ সঙ্গতই মনে হয়েছে। তবে ডিজিটাল রাজনীতিবিদদের কর্মকাণ্ড দেখে, কেউ কি বিশ্বাস করবে, তাদের একজনও মৃত্যুকে ভয় বা পরকালে বিশ্বাস করে? বরং হাবভাব এমন, যেন যমের দুয়ারে তালা দিয়ে শর্ত দিয়েছে, যতকাল খুশি জীবিত থাকবে এবং নিজের ইচ্ছা মতো মরবে। সেটা সত্য হলে, বর্তমান বিশ্বের লোকসংখ্যা ২২৫ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যেত। পৃথিবীতে যদি একটি বিষয়েও যুক্তি-তর্ক, কোর্টকাচারি কিংবা আবেগ থাকা অবাঞ্ছিত হয়ে থাকে, সেটি মৃত্যু। মহাবিজ্ঞানী নিউটন বলেছেন, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সমান। বাস্তবে যা, জন্মের প্রতিক্রিয়া মৃত্যু। নিউটন, আইনস্টাইন, রকফেলার, চেয়ারম্যান মাও, গৌতম বুদ্ধসহ অসীম ক্ষমতাধরেরাও মৃত্যুর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন। কয়জন মনে রাখে, জীবন কত ছোট! জানার আগেই সময় ফুরিয়ে যায়। বিশেষ করে, রাজনীতিবিদেরা ‘মৃত্যু’ নামক শব্দটি মনে রাখা খুবই প্রয়োজন। কারণ যুগে যুগে তারাই অন্যের মৃত্যুর কারণ ছিলেন, হচ্ছেন, ভবিষ্যতেও হবেন। এ দিকে ৯২ বছর বয়সে পৌঁছে মাহাথির এক কাণ্ড করলেন, কেন?
হঠাৎ আধ্যাত্মিক হয়ে ওঠার কারণ, সীমাহীন অবহেলায় যত্রতত্র অকাল মৃত্যুর খবরে নাকাল। বিশেষ করে অবৈধ সরকারের আমলে অপমৃত্যুর কোনো লাগাম নেই। সড়ক-মহাসড়কজুড়ে ৬০ সাইজের শরীরে পাঁচ সাইজের গেঞ্জি ঢোকানোর অপচেষ্টায় মৃত্যুর মিছিল অবশ্যই অগ্রহণযোগ্য। রাস্তাঘাটের যে ভয়ানক চেহারা, উন্নতির ঢাকনা দিয়ে আর কত? পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নামে, আর কত লাখ রঙিন বাহারি পোস্টার ছাপলে যথেষ্ট?
গাড়ি নামানোর কোনো লাগাম নেই। হিসাব তো নেই-ই। একই সাথে কমছে নিয়ম-শৃঙ্খলা। বাড়ছে বিশৃঙ্খলা। ঢাকার রাস্তাঘাটের একী চেহারা! মাত্র কয়েক বছরে একই অবস্থা মফস্বলেরও। বাট হু কেয়ার্স? সর্বত্রই ৫০ সাইজের শরীরে পাঁচ সাইজের গেঞ্জি ঢোকানোর প্রতিযোগিতা। রাস্তায় যে যার মতো জমিদার। মন্ত্রীরাও যে যার তালুক খুলে বসেছেন। ফলে প্রতিদিনই মানুষ মরছে কুকুর-বেড়ালের মতো। এত অপমৃত্যুর দায় কতটুকু মন্ত্রণালয়ের আর কতটুকু গরু-ছাগলের চিহ্ন দেখে লাইসেন্স পাওয়া ড্রাইভারদের? দায় ড্রাইভারের হলে, মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজন কতটা? মন্ত্রণালয় থাকলে, বেপরোয়া যানবাহনের দায়িত্ব কেন ড্রাইভারের? এসব প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। দরিদ্র পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে যা হয়, সবাই জানে। কোনোকোনো পরিবার চিরদিনের মতো নিঃস্ব হয়ে যায়। অনির্বাচিত সড়কমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টাই ‘মুই কী হনুরে’!
দৃশ্যত অস্কারের সাথে দাপুটে মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেছিলেন, গরু-ছাগলের চিহ্ন চিনলেই লাইসেন্স। এই বক্তব্য যে, কতটা দায়িত্বহীন এবং অন্যায়, নির্বাচিত জনপ্রিতিনিধি হলে সেটা বলতেন না। প্রতিটি সরকারের বেলায়ই সড়কে মৃত্যুর মিছিল; কিন্তু গত ৯ বছরে অবনতি সীমাহীন। ঘটনার সাথে সাথে হাত ঝেরে ফেলে হয়, যেন বিষ্ঠা। দুর্ঘটনার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ ঘোষণা যেন লাশেরও টাকার লোভ এবং সেইজন্যই যেন মানুষ লাশ হয়। লাশের পিস ২০ হাজার টাকা। অঙ্গহানির ক্ষতিপূরণ ১০ হাজার। এটাই কী জীবনের মূল্য? এমনকি ক্ষতিপূরণের অর্থ পৌঁছে দেয়াকেও উন্নয়নের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত করে ক্ষমতা দখলদারেরা।
কোরবানির মওসুমে একটি মাঝারি সাইজের ভালো গরুর মূল্য ৪৫ হাজার টাকা কম নয়। দুবলা-পাতলা হলে ৩০ হাজার। কোরবানির বাজারে উত্তাপ এত বেশি যে, অনেকেই ঢোকার সাহসও করে না। মিডিয়ায় দেখি, চাহিদা থাকায়, পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের গরু একলাফে সাত লাখ টাকা। এর মানে কি, পশুর জীবনের চেয়ে গরিব মানুষের মূল্য কম? আশঙ্কা হচ্ছে সেটাই।
২০১৭ সালের আগস্টে লিখেছিলাম, ১৮০ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে ১২ ঘণ্টা লাগার কথা। চৌরাস্তার মোড়জুড়ে, ৭০ সাইজের শরীরে মাত্র দুই সাইজের শার্ট ঢোকাতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নরক ভোগ। এমনিতেই ব্রিটিশের রাস্তা ৪৭ বছরেও দৈর্ঘ্য-েপ্রস্থে এক ইঞ্চিও বাড়ল না। বরং ঠেলার চোটে, যা-তা। এর মধ্যেই চতুর্দিক থেকেই গাড়ির গোডাউন আসতেই থাকে। ২০১৮ সালের অবস্থা আরো খারাপ। জানি না, কোন ধরনের পাগলে পেয়েছে উন্নতির ফেরিওয়ালাদের। উন্নতি করেই যে ক্ষমতায় থাকতে হবে এমন কথা পলিটিক্যাল সায়েন্সের কোথায় লেখা? ২০১৭-এর নাইটমেয়ার এড়াতে এবার রওনা দিলাম যেন রাত ১২টায় চৌরাস্তা অতিক্রম করতে পারি। যে লাউ সেই কদু। আবারো নিষ্ক্রিয় যানবাহনের কাফেলায় যোগ দিয়ে ৩ ঘণ্টা বেকার বসে থেকে অবস্থা খারাপ। এবার ছয় ঘণ্টার রাস্তা ৯ ঘণ্টায়। দিনের বেলায় হলে কয় ঘণ্টা লাগত ভাবতেও চাই না। কোন মিলেনিয়ামে চৌরাস্তার গতি হবে, কেউ কি জানে?
চৌরাস্তায় দেখলাম, কিছু শ্রমিক এবং কিছু হেভি ডিউটি মেশিন দিয়ে মধ্যরাতে খোঁড়াখুঁড়ি। এমন কাজে আমেরিকাতে যে ধরনের কর্মকাণ্ড দেখার অভিজ্ঞতা, সমপরিমাণ না হলেও প্রায় একই থাকার কথা। অর্থাৎ পর্যাপ্ত আলো এবং দক্ষতার সাথে খোঁড়াখুঁড়ি। এখানে আমেরিকা কিংবা বাংলাদেশ বলে পার্থক্য করা চলবে না। মধ্যরাতে যাদেরকে দেখলাম, যা দেখলাম, অবশ্যই উদ্বেগজনক। জানি না, কোনো দিন আদৌ এ কাজ শেষ হবে কি না!
মূল বেনিফিশিয়ারি কারা? উন্নয়ন বলতে আসলেই কী বোঝাতে চায়? সাধারণ মানুষের পক্ষে ধান্ধাবাজি বোঝা অসম্ভব। তবে কিছুটা নমুনা মিলবে ঘাটতি বাজেটে। এ মন্ত্রী থাকলে ভবিষ্যতে এর দৈর্ঘ্য-প্রস্থ দীর্ঘ হতেই থাকবে। কারণ, মুহিত বোধ হয় একমাত্র অর্থমন্ত্রী, যিনি নিজের ফর্মুলায় অর্থনীতি চালান। ব্যাংক ফেল করার পরেও আরো নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দিলেন। তার ‘রাবিশ’ এখন বিশ্বকুখ্যাত। বোকা লোকে, পাগলের কথা বিশ্বাস করে। বলছি, ‘প্রতি বছরই লাখ-লাখ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট বাড়িয়ে না রক্ষা হবে ব্যাংক, না হবে সড়ক।’ অর্থনীতির এই সোজাসাপ্টা হিসাব বুঝি না বলেই, পোস্টার ছাপিয়ে যা বোঝানো হয় সেটাই বুঝি।
২
প্রসঙ্গ সড়ক মন্ত্রীর মহাসচিবত্ত্ব লাভ বনাম রাজীবের ছেঁড়া হাত। এত ক্ষমতা যাদের হাতে, মৃত্যুর মিছিল থামানোর সময় তাদের কোথায়? কারণই বা কী? প্রয়োজনই বা কেন? একই সাথে মহাসচিব এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী। হাইকমান্ডের আস্থাভাজনদের একনম্বরেও। ক্ষমতাশীন দলের মহাসচিব কী চাট্টিখানি? তার ওপর, আওয়ামী লীগ বলে কথা। দলবাজদের কাছে দল আগে, দেশ পরে। সবার ওপরে শীর্ষ নেতৃত্ব। তাকে খুশি রাখতেই কাঁঠালের আঠার মতো লেগে থাকা ধামাধরা মন্ত্রীদের কাজ।
অর্থনীতিতে একটি কথা আছে, ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাই। সড়কের পরিমাণ, স্বাস্থ্য, রোগ, বিপর্যয়, বয়স বনাম যানবাহনের পরিমাণ ও চাহিদা। প্রশ্ন, প্রয়োজনীয় এনফোর্সমেন্ট, ট্রাফিক নীতি এবং ঘুষবাণিজ্য। দেখা যায়, ঘুষ নেয়ার জন্যই গাড়ি ধরে আর ছাড়ে। এর কোনো প্রমাণের প্রয়োজন আছে কি?
বাংলাদেশ একটি অসম্ভব জনবহুল দেশ। এখানে প্রয়োজনের তুলনায় রাস্তার পরিমাণ খুব কম। বড় মাপের যাত্রীবাহী বাস বা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ধারণের ক্ষমতা সড়ক-মহাসড়কের নেই। তবে প্রয়োজনের তুলনায় যানবাহনের পরিমাণ মোটের ওপর কম নয়। সমস্যা রাস্তার পরিমাণ ও পরিসর নিয়ে। ফেরিঘাটের কথা বাদই দিলাম। এমন দিন নেই যখন প্রতিযোগিতা দিয়ে ওভারটেকে উল্টে যাচ্ছে না গাড়ি, মরছে না মানুষ। রাস্তা ব্লক করে ড্রাইভার পেটানো হয় মাঝে মধ্যে। এই দফায় কয়েকটি দুর্ঘটনায় মহাসড়কে একাধিক মৃত্যু নিজ চোখে দেখলাম। ভাবলাম, এই দেশেও কোটি কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের সিস্টেম থাকলে, মালিকেরা অবশ্যই সাবধান হতো। লাশের পিস ২০ হাজারের বদলে দায়িত্ববোধহীন মন্ত্রণালয়কে গুণতে হতো ২০ লাখের বেশি।
মূল সমস্যা, প্রফিট। পণ্য চলাচলে অন্য কিছুই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় না। ফলে ৩৫ কিলোমিটার গতিপথে ৮৫ কিলোমিটার কোনো ব্যাপারই নয়। এই ধ্বংসযজ্ঞ যাদেরকে পিষে ফেলছে, বেশির ভাগ অধরা। অপরাধগুলো যেন সেখানেই শেষ। তার ওপর প্রভাবশালী মন্ত্রী আবার পরিবহন সংগঠনেরও নেতা। ইনি ‘গরু-ছাগলের চিহ্ন চিনলেই লাইসেন্স’ দেয়ার কথা বলে চালকদেরকে আরো বেশি বেপরোয়া বানিয়ে ছাড়লেন। একাই তিনি গোদের উপর ১০০ টনের বিষফোঁড়া। তার কথা সঠিক হলে, বলতে হবে কেবল দ্রুত পণ্য পৌঁছানোই আসল। পণ্যের সাথে আসে প্রফিট। এটাই রাজীবদের দুর্ভাগ্য। এমন ঘটনা থামার কারণ নেই। কারণ, ‘মহাসড়ক মানেই প্রফিট।’
তদারকির জন্য মহাসচিবের সময় কোথায়? ঠিকানাই বা কী? আছে। তাকে প্রায়ই মিডিয়ায় দেখা যায় সিনেমার শুটিংয়ের মতো পুরো ইউনিট নিয়ে রাস্তায়। মানুষ কী ভাবল, সোস্যাল মিডিয়া দেখলে ঠিকই টের পেতেন।
একদা দেখে মনে হয়েছিল, তিনি যেন পাশের বাড়ির একজন ‘কাদের ভাই’। বরং সুরঞ্জিতদাকে দেখে সে দিন কিছুটা রাজনীতিবিদ বলে মনে হয়েছিল। ওবায়দুল কাদেরের বেশভূষাও ছিল অতিসাধারণ। আজকের সড়কমন্ত্রীর মধ্যে এর কি সলিল সমাধি হয়ে গেছে? হবে না কেন? এত ক্ষমতা রাখার জায়গা কোথায়?
এবার আসি প্রাক্তন মহাসচিবের কথায়। তার কর্মকাণ্ডে নিঃসন্দেহে হতাশ ছিলেন হাইকমান্ড। গালিগালাজে কাঁচা মহাসচিবকে বিদায় করতে আদাজল খাওয়া হয়েছিল। নিতান্তই ভদ্র এবং ঐতিহ্যবাহী পরিবারের হওয়ায় কপাল পুড়েছে বলেই অনেকে মনে করে। ‘সাদা স্যান্ডউইচ আর বিলাতি মদের’ চেয়ে বেশি বলাতে পারেনি হাইকমান্ড। এমন ব্যক্তিত্বদের মেরুদণ্ডের হাড়গুলো দলের পছন্দের তুলনায় একটু বেশিই খাঁড়া। তার ওপর তিনি ‘সৎ।’ দলে আজ সৎ মানুষের জায়গা নেই। ক্যামেরার সামনেও বারবার বেদম খেতে দেখেছি। ভালগারিজম ডেলিভারির সময়ে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন থেকেছেন। মনে হতো, নোংরামিতে কী ভীষণ অরুচি! হয়তো ওয়ার্নিংয়ের পরেও ‘শোধরাননি’। তাই সান্ত্বনামূলক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে কার্যত অদৃশ্য করা। প্রাক্তন মহাসচিবকে যারা চেনেন, জানেন, তিনি পদে থাকার জন্য কখনোই লালায়িত হবেন না। ৯ বছরে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। আমরাও দেখলাম, কোন ধরনের মহাসচিব পছন্দ।
ভুলে গেলে চলবে না, কে হাইকমান্ডের ঘুষ খাওয়ার ধারাবিবরণী দিয়েছিলেন ১/১১-এর রিমান্ডে, যা এখনো নেটে। বাচনভঙ্গি এবং মুখভঙ্গি বরাবরই কৌতুকময়, তাকে নিয়ে দারুণ রসিক সোস্যাল মিডিয়া। বিষয়টি হয়তো তিনি জানেন কিংবা জানলেও ড্যামকেয়ার। ক্ষমতাই জাদু।
৩
এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশেও এ উদাহরণ নেই। অমিত শাহ্ প্রধানমন্ত্রী নন। মোদিও দলের প্রধান নন।
অবৈধ সরকারের প্রতিটি মন্ত্রীরই পদত্যাগ চাই; কিন্তু করবেন না জানি। কারণ তাদের চোখে ক্ষমতা হচ্ছে জোকের মতো লেগে থাকার বস্তু। যখন লিখছি এ কলাম, তখনো পা ছিঁড়ে যাওয়া এবং রাস্তায় লাশের খবর। সারসংক্ষেপে, ‘ওবায়দুল কাদেরের উচিত অন্তত একটি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে মানুষ বাঁচানো।’ কারণ সবাই জানে, সড়ক মন্ত্রণালয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নয় এ দেশে। আর তিনিই যখন মহাসচিবের মহাদায়িত্বে, তার পক্ষে কি সম্ভব সড়কে মনোযোগ দেয়া?
তুচ্ছ কারণে পদত্যাগ করেন বিদেশের মন্ত্রীরা। এমন উদাহরণ ভূরিভূরি। অথচ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হয়েও মন্ত্রিত্বের পায়ে কামড় দিয়ে পড়ে থাকার দৃষ্টান্ত আজকের বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথায়? এই দৃষ্টান্তের অবসান হোক। ক্ষমতার খায়েশের সাথে অন্যের মৃত্যুর শর্তজুড়ে দেয়ার বিরুদ্ধে আমরা। সাগর-রুনি প্রমাণ করেছেন, ক্ষমতাসীনদের কাছে দল আগে, দেশ পরে। সাগর-রুনি আন্দোলনের নেতা যা করেছেন, সেসব মনে করাও লজ্জা।
রাজনীতিবিদদের এত বেসামাল ক্ষমতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হবে। প্রতিটি জীবনই সমান মূল্যবান। মৃত্যুর কাছে ধনী-গরিব বলে কোনো বৈষম্য কখনোই ছিল না, এখনো নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না। সবাই জানে, কফিন ও কাফনের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এবং মূল্য।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন