বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে সংবর্ধনা জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে তাদের দল। কিন্তু তারা বিমানবন্দরে ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন।বুধবার বিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের প্রবেশপথে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসনকে সংবর্ধনা দিতে আমরা বিমানবন্দরে এসেছি। কিন্তু আমাদেরকে বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে দেশে ফিরলে তাকে বিমানবন্দরে বিনা বাধায় সংবর্ধনা দেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু আমরা আজ বিমানবন্দরে ঢুকতে পারছি না।’খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানায় দল শঙ্কিত নয় বলে উল্লেখ করেন মীর্জা আব্বাস। তার ভাষ্য, ‘আমাদের দলের চেয়ারপারসন তার চিকিৎসা পুরোপুরি শেষ না হতেই দেশে ফিরছেন। সরকার দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই ম্যাডাম চিকিৎসা অসম্পন্ন রেখে দেশে আসছেন।’
সরেজমিন দেখা গেছে, ভিআইপি টার্মিনালের কাছে মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তাদের মধ্যে আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, দলের ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ আরো অনেকে।
আরো পড়ুন >> খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষায় নেতাকর্মীরা
৯৫ দিন পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানাতে ইতোমধ্যে নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর আশপাশ এলাকায় জড়ো হচ্ছেন। বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকাড, ব্যানার, ফেস্টুন হাতে স্লোগানে স্নোগানে নেতাকর্মীরা মাতিয়ে তুলছেন। এদিকে বিমানবন্দর এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিমানবন্দর এলাকায় নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
বুধবার বিকেল ৫টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন খালেদা জিয়া। এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে লন্ডনের বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন তিনি। দুবাইয়ে আড়াই ঘণ্টা যাত্রা বিরতি শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন বিএনপি প্রধান।
খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানাতে প্রস্তুত বিএনপির ও অঙ্গ দলের নেতাকর্মীরা। বিমানবন্দর থেকে গুলশানে নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’ যাবেন খালেদা জিয়া। কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি না থাকলেও দুপুরের পর থেকেই বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত হন। খালেদা জিয়ার নামে চারটি মামলায় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সেই গ্রেফতারে পরোয়ানা মাথায় নিয়ে তিনি দেশে ফিরছেন।
শারিরীক চিকিৎসার জন্য গত ১৫ জুলাই লন্ডনে যান খালেদা জিয়া, সেখানে বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন। তারেক রহমান স্ত্রী-কন্যা এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী-কন্যাদের সঙ্গে নিয়ে ঈদ উদযাপন করেন খালেদা জিয়া। তবে লন্ডন কোনো দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেননি তিনি।
গত ৮ সেপ্টেম্বর লন্ডনে মুরফিল্ড হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চোখের সফর অস্ত্রোপচার হয়। এছাড়া তিনি পায়েরও চিকিৎসা নেন। তারেক রহমান মঙ্গলবার রাতে তার পূর্ব লন্ডনের বাসা থেকে নিজেই গাড়ি চালিয়ে তার মা খালেদা জিয়াকে হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। তারেকের স্ত্রী জোবাইদা রহমানসহ পরিবারের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া লন্ডন শাখা বিএনপির নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে বিদায় জানতে উপস্থিত হন বলে জানান যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম মালেক।
purboposhchim
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন