অধিবেশন থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতিনিধিদলকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য কড়া ভাষায় ধমক দিয়েছেন কুয়েতের স্পিকার মারজুক আল-গানিম। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠানরত আন্তঃসংসদীয় ইউনিয়নের অধিবেশনে এ ঘটনা ঘটে।
ইসরাইলি প্রতিনিধিদের দেয়া বক্তৃতায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের যদি সামান্যতম লজ্জা থাকে তাহলে এই মুহূর্তে এখান থেকে আপনাদের বেরিয়ে যাওয়া উচিত।’
তিনি ইসরাইলি সংসদকে ‘ধর্ষক সংসদ’ বলেও অভিহিত করেন।
ইসরাইলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি সংসদ সদস্যদের বিষয়ে ইসরাইলি প্রতিনিধিদের দেয়া বক্তৃতায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মারজুক বলেন, ‘আপনাদের বক্তৃতার পর প্রত্যেক সম্মানিত সংসদ সদস্যের মধ্যে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছে তা দেখতে পেয়েছেন। এখন আপনাদের উচিত তল্পিতল্পা নিয়ে এই সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়া।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের যদি সামান্যতম মর্যাদাবোধ থাকে তাহলে এই মুহূর্তে এই সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। আপনারা হচ্ছেন দখলদার, আপনারা শিশুদের খুনী।’
কুয়েতের সংসদ স্পিকারের মন্তব্যের পর ইসরাইলি প্রতিনিধিদল সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায় এবং এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যরা তুমুল হাততালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।
এ ঘটনার পর ফিলিস্তিনি জাতীয় পরিষদের প্রধান আজ্জম আল-আহমাদ বলেন, গানিমের বক্তব্যে সব আরব দেশের চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বলেন, ইসরাইলি প্রতিনিধিদলের সামনে গানিমের বক্তব্য দীর্ঘদিন ক্ষত বয়ে বেড়ানো ফিলিস্তিনিদের জন্য আশার আলো দেখিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের সব সংকটের মূলে রয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইল : ইরান
ফিলিস্তিনি ভূমির ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্বকে মধ্যপ্রাচ্যের সব সংকটের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে ইরান। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত গোলামআলী খোশরো বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি ভূমি জবরদখল করে ইসরাইলের ইতিহাস শুরু হয়েছে এবং অন্যান্য দেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে এটি টিকে রয়েছে। তেল আবিব এখন পর্যন্ত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৬৮টি প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এই অপরাধী ও আগ্রাসী সরকারের প্রতি ওয়াশিংটনের সর্বাত্মক সমর্থনের প্রতি ইঙ্গিত করে ইরানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল আমেরিকার পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে ফিলিস্তিনি জাতির ওপর ভয়াবহ পাশবিকতা চালিয়েছে এবং বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ ট্রাজেডি সৃষ্টি করে রেখেছে। তিনি ইসরাইলের রাসায়নিক, পারমাণবিক ও জীবাণু অস্ত্রকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মধ্যপ্রাচ্যে তৎপর উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোকে সৃষ্টির জন্য আমেরিকা, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তাদের মিত্র দেশগুলোকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, উগ্রবাদী গোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মতো এত বেশি যুদ্ধ আর কোনো দেশ করেনি।
খোশরো তার বক্তব্যের অন্য অংশে তার দেশের পরমাণু সমঝোতার বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, এই সমঝোতা অকার্যকর করে দেয়ার জন্য ওয়াশিংটন যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তার বিরোধিতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সমাজে মতৈক্য তৈরি হয়েছে। ইরানের বিরোধিতা করতে গিয়ে আমেরিকা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি একঘরে হয়ে পড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আমেরিকাকে একঘরে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে: ইরান
ইরান সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মাদ বাকের নওবাখ্ত বলেছেন, আমেরিকাকে আরও বেশি একঘরে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন।
মোহাম্মাদ নওবাখ্ত আরও বলেছেন, ইরানের জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ ও আমেরিকাকে আরও বেশি একঘরে করার লক্ষ্যে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইরানের যৌক্তিক নীতির কারণে ট্রাম্প একঘরে হয়ে পড়েছে।
ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতির পার্থক্য রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন