চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকা থেকে এনায়েত বাজার মহিলা কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের এক ছাত্রীকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে একদল যুবক। পরে আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং পথচারীদের সহায়তায় ওই তরুণী আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আইনজীবী ভবন এনেক্স-২ এর সামনে এ ঘটনা ঘটে।
.
জানা গেছে, রাউজান উপজেলার ওই কলেজছাত্রী গত ১২ নভেম্বর ভালোবেসে বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম কধুরখীল গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলামকে (২৮) বিয়ে করেন।
এরপর অপহরণ করা হয়েছে মর্মে ওই ছাত্রীর বাবার এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোতোয়ালী থানা পুলিশ সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে তারেকের বড়ভাই নুরুল আমিনকে কধুরখীলের গ্রামের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ সংক্রান্ত একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ বুধবার বিকেল ৪টার দিকে নুরুল আমিনকে আদালতে প্রেরণ করে।
এদিকে ভাসুরকে আদালতে তোলার খবর পেয়ে বুধবার সকাল থেকেই ওই ছাত্রী আদালত ভবনে গিয়ে অবস্থান নেন। আদালতে এ ব্যাপারে তার জবানবন্দি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বামীর বড়ভাইকে বিলম্বে আদালতে প্রেরণ করায় চেষ্টা করেও তার পক্ষে আর জবানবন্দি দেয়া সম্ভব হয়নি।
পরে ওই কলেজছাত্রী গন্তব্যে ফিরতে এনেক্স ভবন-২ এর সামনে অপেক্ষমান গাড়িতে উঠতে চাইলে লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে ১৫-২০ জনের একদল যুবক তার উপর হামলে পড়ে। একপর্যায়ে টেনে-হিঁচড়ে তাকে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করে তারা।
এতে ওই ছাত্রীর স্বামীর পক্ষের লোকজন বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
পরে আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রতন কুমার রায়, ফাইট ফর উইমেন রাইটস-এর প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানুসহ কয়েকজন আইনজীবীর হস্তক্ষেপে ওই ছাত্রী আত্মরক্ষা করে আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে আশ্রয় নেন।
এসময় যুবকদের সঙ্গে কলেজছাত্রীর বাবা ও মামাকেও দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রতন রায় পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘মেয়েটাকে নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল। আমাদের হস্তক্ষেপে তা আর সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘উভয়পক্ষের কথা আমরা শুনেছি। মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক। স্বেচ্ছায় সে বিয়ে করেছে। বাবা-মার সঙ্গে সে যাবেই না। ছেলেটির সঙ্গেই থাকার সিদ্ধান্তে অনড়। এ অবস্থায় আমরা কোনো পক্ষকে না দিয়ে আইনগত প্রয়োজনে আদালতে হাজির করানোর শর্তে তাকে ফাইট ফর উইমেনস রাইটস এর প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানুর জিম্মায় দিয়েছি।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন