মনিটর ডেস্ক
ভারতের ছত্তিশগড়ে এক সেনার গুলিতে নিহত হয়েছেন তার চারজন সহযোদ্ধা। এছাড়া অন্য এক সেনা এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, সহযোদ্ধাদের সাথে কোনো বিষয় নিয়ে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে নিজের হাতে থাকা একে-৪৭ রাইফেল থেকে গুলি ছুঁড়েন ৩৫ বছর বয়সী সনথ কুমার। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যন।
অন্য একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে ভারতের আধা সামরিক বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা সুন্দর রাজ বলেছেন, সিআরপিএফ সদস্য সনথ কী পরিস্থিতিতে এবং কেন এমন ঘটনা ঘটালেন সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
মাওবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে সিআরপিএফ সদস্যদের জড়ো করা হয়েছে। এর মধ্যেই এই ঘটনা ঘটলো।
চীন-মালদ্বীপ বাণিজ্য চুক্তি ভারতকে অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলেছে
ভারতের রাজনৈতিক মহলের নজর যখন বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত নেপালের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের দিকে নিবদ্ধ ছিল, তখন চীন ব্যস্ত ছিল মালদ্বীপের সাথে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে। এই চুক্তির ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় বেইজিংয়ের প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় নয়া দিল্লির জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক বিপর্যয় বয়ে এনেছে।
ভারতীয় মিডিয়ার ভাষ্যে বলা হয়, মালদ্বীপ যেভাবে ২৯ নভেম্বর চুক্তিটি অনুমোদন করে, তাতে ভারত সরকার অত্যন্ত মর্মাহত। মালদ্বীপের রাজধানী মালের ভারতীয় দূতবাস বিষয়টি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। তাতে দিল্লির অনেকে বিস্মিত হয়েছে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় বলা হয়েছে। দি কুইন্টের আরেক বিশ্লেষক একটি অনলাইন প্রকাশনায় আরো সোজাসাপ্টা বলেছেন, মালদ্বীপে হেরে যাচ্ছে ভারত। চীন অবশেষে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে তার আসল শক্তি প্রকাশ করল।
অবশ্য মালের অভ্যন্তরীণ পর্যায়েও অনেকের ভ্রু কুঞ্চিত হয়েছে। সর্বোপরি এফটিএ মজলিশ তথা পার্লামেন্টে খুবই তাড়াহুড়া করে পাস করা হয়েছে। পুরো বিষয়টিই অন্ধকারে রেখে এবং প্রয়োজনীয় এমপির সমর্থন না নিয়েই অনুমোদন করা হয়েছে। এক হাজারের বেশি পৃষ্ঠার চুক্তিটি পাস করা হয় ১০ মিনিটেরও কম সময়ে। আবার ৮৫ সদস্যের মজলিশে এ ধরনের চুক্তি পাস হতে ৪৫ জনের সম্মতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের ক্ষমতাসীন দল প্রগ্রেসিভ পার্টি অব মালদিভসের রয়েছে মাত্র ৩০ জন সদস্য। তারা এতে সই করতে নিয়েছেন এক ঘণ্টারও কম সময়।
নেপালের ভোটাররা যখন ভারতপন্থী একটি জোট এবং বেইজিংয়ের আশীর্বাদপুষ্ট বাম-ধারার একটি জোটের কোনো একটিকে বেছে নেওয়ার জন্য ভোট দিচ্ছিল, তখন ইয়ামিন বেইজিংয়ে গিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে কাঁধে কাঁধ মেলাচ্ছিলেন, চুক্তিটি চূড়ান্ত করছিলেন।
ঋণের ফাঁদ
২০১৪ সালে এফটিএ আলোচনা শুরুর আগে চীন ও মালদ্বীপের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল আনুমানিক ১০৪ মিলিয়ন ডলার। এফটিএ নিয়ে দুই বছর ধরে আলোচনা হয়েছে। এতে দুই দেশের মধ্যকার ৯৫ ভাগ পণ্যের শূন্য শুল্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মালদ্বীপ আশা করছে, এর মাধ্যমে তারা চীনে মাছ রফতানির ব্যাপক সুযোগ পাবে।
ভারত মহাসাগরে অনেক দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ ২০১৬ সালে মাছ বিক্রি করে ১৪০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। দেশটির মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে মৎস খাতের অবদান ৫ ভাগ। দ্বিতীয় বৃহত্তম আয় আসে পর্যটন খাত থেকে।
প্রায় ৩.৬ বিলিয়ন ডলারের মালদ্বীপের অর্থনীতিতে নিয়মিত বাণিজ্য ঘাটতি থাকে। গত বছর আমদানি ছিল ২.১২ বিলিয়ন ডলারের, আর রফতানি ১৩৭ মিলিয়ন ডলার।
চীন থেকেই মালদ্বীপ সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে। ২০১৬ সালে চীন থেকে আমদানি ছিল ৩২০ মিলিয়ন ডলার। অবশ্য মালদ্বীপের বিলাসবহুল রিসোর্টগুলোতে সবচেয়ে বেশি পর্যটক পাঠায় চীনই।
মালদ্বীপের নিজস্ব অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণেও তারা এফটিএর দিকে অগ্রসর হয়েছে। ২০১৩ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তাদের স্বল্প উন্নয়ন দেশের তালিকা থেকে মালদ্বীপকে বাদ দেয়। এর ফলে জিএসপি সুবিধা হারায় দেশটি। ওই সময় মালদ্বীপের মাছের ৪০ ভাগ যেত ইউরোপে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন