প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,আওয়ামী লীগকে হারানোর মতো দল হয়ত বিদেশে আছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল একথা বলেন। কমরেড মো. তোয়াহার ৩০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল। আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইদ আহমেদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, জাগপার প্রধান রেহেনা প্রধান প্রমুখ।
সোমবার আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবেই। আওয়ামী লীগকে হারানোর মতো রাজনৈতিক দল দেশে নেই।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ সরকারি দলের বড় বড় ব্যক্তিত্ব, যারা বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকেন, তারা একেক সময় এসে একেক কথা বলেন। খেয়াল করবেন ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তারা এসে বলেছিলেন, আমার কাছে তথ্য আছে আওয়ামী লীগ জিতবে। মনে আছে নিশ্চয়ই আপনাদের। আজ আবার বলছেন, তথ্য এসে গেছে, আওয়ামী লীগ জিতবেই, আরও বেশি ভোটে জিতবে এবং বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারে এমন কোনও পার্টি নেই। আমি জানি না, হয়তো দেশের বাইরে থাকতে পারে তাদের হারানোর মতো দল থাকতে পারে।
মির্জা আলমগীর বলেন, আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, কোন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আপনার এ কথা? একটা নির্বাচন দিয়ে দেখান, এরপর প্রমাণ হয়ে যাবে। যে নির্বাচনে আপনারা সরকারে থাকবেন না, নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ, জনগণ তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, যার ভোট সেই দেবে। তাহলেই প্রমাণ হয়ে যাবে কে জয়লাভ করবে। আমরা তো একথা বলি না যে বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটই জয়লাভ করবে।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটু দেয়ালের লিখনটা পড়ুন। আজ খবরের কাগজে দেখবেন নেপালে নির্বাচনে বামপন্থীরা জয়লাভ করেছে। নেপালে প্রথম সংবিধানের পরে বিরোধী দল বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে। জনগণ যখন তার মতামত প্রকাশ করার সুযোগ পাবে তারা সঠিকভাবে প্রকাশ করবে। জনগণ হচ্ছে একমাত্র শক্তি। বিএনপি অন্য কোনও ষড়যন্ত্র কিংবা চক্রান্তের ওপর নির্ভর করে না। আমাদের বাইরে থেকে ঘুরে এসে বলতে হয় না আমরা জিতবো। আমরা দেশের মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে ভাষা বুঝে বলতে পারি, তোমরা (আওয়ামী লীগ) পরাজিত হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন দেওয়া যাবে না। এদেশের মানুষ এখন একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষ আগামী দিনের সরকারকে ক্ষমতায় বসাবে। ধানাই-পানাই করে সংবিধানের দোহাই দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া যাবে না। কারণ সংবিধান পরিবর্তন করছেন আপনারাই। সংবিধান পরিবর্তনের আগে গণভোট কিংবা জনগণের মতামত নেন নাই। যে সংসদের ১৫৪ জন নির্বাচিত নয়, শতকরা ৫ জন ভোট দিয়েছিল যে নির্বাচনে, সেই সংসদ কখনও জনগণের সংসদ হতে পারে না। সেই সংসদে পাস করা কোনও সংবিধান জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
পূর্বপশ্চিমবিডিডটকম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন