কানাডা থেকে লণ্ডনে যাওয়ার কথা ছিল সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার। লণ্ডনে তারেক জিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় এবং যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল,’মুখ খুললেই ইনাম।’ কিন্ত বিচারপতি সিনহা যাননি। কোনো ভয়ে বা কোনো চাপে না, লণ্ডনে যাননি তদন্ত এড়াতে। লণ্ডনে দুটি গোয়েন্দা সংস্থা বিচারপতি সিনহার অর্থ নিয়ে তদন্ত করছে। তাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংককেও চিঠি দিয়েছে। লন্ডন গেলে তদন্তকারীদের জেরার মুখে পড়তে হতে পারে এই আশঙ্কা থেকেই লন্ডন যাত্রায় ক্ষ্যান্ত দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। বিচারপতি সিনহা ক্ষ্যান্ত দিলে কি হবে, তারেক জিয়া ক্ষ্যান্ত দেননি। তারেক চায় বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার জবানবন্দি। এজন্য লোক পাঠিয়েছেন কানাডায়। গণমাধ্যমও ভাড়া করেছেন। সঙ্গে দিয়েছেন লোভনীয় টোপ।
তারেক জিয়া এখন সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করার কৌশল নিয়েছে। কিছুদিন আগে লণ্ডনে ব্রিটিশ এমপি এবং শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকীর পেছনে লাগান চ্যানেল ফোর এর সাংবাদিক এলেক্স থম্পসনকে, যিনি টিউলিপকে অযাচিতভাবে হয়রানি করেছেন। চ্যানেল ফোর নিজস্ব তদন্তে বলেছে সাংবাদিক এলেক্স থম্পসন সাংবাদিকতার রীতি ও সীমা লঙ্ঘন করেছিলেন। একই প্রশ্ন বারবার করাটাও ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পরে জানা গেছে, এরকম অনেক গণমাধ্যম এবং সংবাদকর্মীকে তারেক নিয়োজিত করেছেন। কানাডাতেও কয়েকজন সংবাদ কর্মী সিনহার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য চেষ্টা করছেন। ব্যাক্তিগতভাবে লণ্ডন থেকে অন্তত দুজন বিএনপি নেতা কানাডায় গেছেন। উদ্দেশ্য একটাই সিনহার কাছ থেকে কিছু শোনা। সিনহা কিছু বললে তাঁর দাম কোটি টাকা বলছেন বিএনপি নেতারা। কিন্ত পদত্যাগের পর তাঁর কাছ থেকে কোনো বক্তব্য নিতে পারেননি কেউ। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে,তারা বিচারপতি সিনহার ইস্যু নিয়ে কিছু করতে পারছেন না শুধুমাত্র তাঁর বক্তব্যের অভাবে। গত ১১ নভেম্বর বিচারপতি সিনহা সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠান। বেগম জিয়া এই পদত্যাগের পর সোহরাওয়ার্দীর জনসভায় দাবি করেছেন, এজেন্সির লোকেরা প্রধান বিচারপতিকে ভয় দেখিয়ে জোর করে পদত্যাগ করিয়েছে।’ কিন্তু বেগম জিয়া ও বিএনপির বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা পায়নি সিনহার জবানবন্দির অভাবে। এজন্যই তারেকের মিশন হলো সিনহার কিছু কথা। সামনে বেগম জিয়ার দুটি দুর্নীতির মামলার রায়। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচারও শেষ পর্যায়ে। এ সময় বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারলে, আন্তর্জাতিক মহলে একটা চাপ তৈরি করা যাবে। এমনটা আশা করেছেন তারেকপন্থীরা। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ‘সিনহা এখন ডেড ইস্যু। বিএনপি মরিচিকার পেছনে ছুটছে।’
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন