অভ্যন্তরীন দলীয় কোন্দলই যে আওয়ামী লীগের প্রধান সমস্যা নারায়নগঞ্জের ঘটনায় তা প্রমান হয়ে গেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এটাই দলের সবচেয়ে বড় মাথা ব্যাথা। একারনেই আওয়ামী লীগকে সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কোন্দলের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এবারে তিনি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘দলের চেয়ে কেউ বড় হতে পারে না, যেই দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে, দলের জন্য ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এখবর জানা গেছে।
শুধু নারায়নগঞ্জ নয় সারাদেশেই কোন্দলে জর্জরিত আওয়ামী লীগ। হাতে গোনা কয়েকটি নির্বাচনী এলাকা ছাড়া সব গুলো আসনেই কোন্দল। নারায়নগঞ্জের ঘটনা প্রকাশ্য হয়েছে, শামীম ওসমান থাকার কারণে ঘটনাটি সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু সারাদেশের যেকোন স্থানে যেকোন সময়ে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের দুপক্ষ মুখোমুখি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর এখন চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন পন্থীরা অস্তীত্বের প্রয়োজনে বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য হতে পারে যে কোন সময়।
খুলনার খবরও ভালো নয়। আসন্ন সিটি নির্বাচন উপলক্ষ্যে, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে বিরোধে জড়িয়েছে। কোন্দল আছে সিলেট এবং রাজশাহীতেও। দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন,‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এতে কোন্দল থাকবেই। কিন্তু নির্বাচনের আগে এসব কোন্দল যেন মাথাচাড়া না দেয় সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কঠোর হয়েছেন।’ তিনি বলেন,‘কেন্দ্র থেকে সব জেলা এবং উপজেলায় বার্তা দেয়া হয়েছে, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলেই বহিস্কার করা হবে’।
তবে, অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আশীর্বাদে বা মদদেই দুপক্ষই অনঢ় অবস্থানে থাকছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কেউ এক গ্রুপের পক্ষে তো আরেকজন অন্য গ্রপের পক্ষে। যার ফলে কোন্দল মেটানো সহজ নয়। এই বক্তব্য স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ। তবে তিনি মনে করেন ‘দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সব কিছুর উর্ধ্বে। তিনি এসব কোন্দল প্রশ্রয় দেন না। তাই তিনি হস্তক্ষেপ করলেই এসব কোন্দল প্রশ্রয় পাবে না।’
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব শিগগিরই বেশী কোন্দলে জর্জরিত এলাকার নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করবেন। কোন্দল বন্ধের জন্য শেষবারের মতো সতর্ক করা হবে। এরপরও যদি কেউ কোন্দল করে তাহলে তার বিরুদ্ধে বহিস্কারের মতো কঠোর খড়গ নেমে আসতে পারে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র গুলো বলছে, নারায়নগঞ্জের ঘটনায় এখনই শামীম ওসমান বা আইভির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বরং দলের সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, দুজনকেই শেষবারের মতো মিলে মিশে চলার এবং ভবিষ্যতে এসব না করার নির্দেশ দেয়া হবে। আর শামীম ওসমানের জন্য এটা হবে শেষ সুযোগ। তাকে মেয়রের কাজে নাক না গলানোর পরামর্শ দেয়া হবে।
তবে হুশিয়ারী, সতর্ক, কিংবা তিরস্কার করে এসব কোন্দল শেষ পর্যন্ত মিটবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন