রাজধানীর গুলশানে লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিক খালেদ হোসেন মতিনকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বিকেলে স্কুলের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় গুলশান থানায় জিডি করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন মিয়া।
গুলশান-১ নম্বরের ১৩৫ নম্বর সড়কের ছয় নম্বর ভবনে লেকহেড গ্রামার স্কুল। গত বছর স্কুলটির বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ উঠেছিল।
জিডিতে বলা হয়, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে খালেদ হোসেন স্কুল থেকে বের হলে এক ব্যক্তি তাকে সালাম দিয়ে একটু সামনে ডাকেন। এরপরই অপেক্ষমাণ একটি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। মাইক্রোবাসের মধ্যে আরও ৩-৪ জন ছিলেন।
পরে তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আরএম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি জিডি করেন।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন মিয়া সমকালকে বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
লেকহেড স্কুলে করতে হবে নতুন পরিচালনা পর্ষদ: আপিল বিভাগ
রাজধানীর লেকহেড গ্রামার স্কুলে সাতদিনের মধ্যে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে গঠিত ওই পর্ষদের সভাপতি হবেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার। সেনাবাহিনীর শিক্ষা কোরের কর্মকর্তাদেরও ওই কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছে। লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দিতে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের শুনানি করে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন।
স্কুল মালিক ও অভিভাবকদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও রাশনা ইমাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা, ধর্মীয় উগ্রবাদে উৎসাহ দেয়াসহ কয়েকটি অভিযোগে গত ৬ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকায় লেকহেড গ্রামার স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেয়। ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ওই স্কুলে গিয়ে তা সিলগালা করে দেন। পরে স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিন ও ১২ শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন। তাদের দুটি রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৯ নভেম্বর রুল জারি করে আদেশ দেন। লেকহেড গ্রামার স্কুলের গুলশান ও ধানমন্ডি শাখা বন্ধের আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, কেন স্কুলের মালিককে স্কুল খোলা ও পরিচালনা করতে দেয়ার জন্য বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হবে না এবং কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না— রুলে তা জানতে চান আদালত।
গত ১৪ নভেম্বর ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্কুলটি খুলে দেয়ার রায় দেন হাইকোর্ট। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট আদালত হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে আদেশ দেন। বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এলে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো ১০ দিন বাড়িয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলেন আপিল আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ শুনানি নিয়ে গতকাল এ আদেশ দেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন