গোলরিজ গাহরামান: ইরানের কৃষি বিষয়ক একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে নিউজিল্যান্ড সফর করছেন। প্রতিনিধি দলটি বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ড পার্লামেন্টের সদস্য জো লুক্সটনের সঙ্গে ‘হ্যান্ডশেক’ বা হাত মেলাতে অস্বীকৃতি জানান। অনেকেই এটিকে অসম্মানের একটি চিহ্ন বলে অভিহিত করলেও আসলে তা নয়।
অতীতে আমি ইরানি শাসকদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় কথা বলেছি- বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘুদের উপর তাদের ‘নৃশংস অত্যাচারে এবং শাসকদের আরোপিত ‘নৈতিক’ মানদণ্ড পালন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এসব নারীদের নির্যাতন চেম্বারে গুম হয়ে যাওয়া নিয়ে আমি সমালোচনা করেছি।
কিন্তু ওই শাসনব্যবস্থায় জোরপূর্বক আরোপিত ইসলামিক আইনের আচরণ শান্তিপূর্ণ পর্যবেক্ষণকারী মুসলিমদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
একটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে, মুসলিম পুরুষরা পরিবারের সদস্য নয়-এমন অপরিচিত নারীদেরকে স্পর্শ করে না। কিছু ক্ষেত্রে, তারা কেবল নারীদের সঙ্গে সরাসরি দেখায় কথা বলেন।
প্রকৃতপক্ষে, এটি মুসলিম নারীদের জন্য হিজাব শাসনের একটি উল্টো দিক।
এর মানে হচ্ছে কোরআন নারীদেরকে নম্রভাবে তাদের পোশাক পরিধানের জন্য আহ্বান জানায়। অন্যদিকে, মুসলিম পুরুষদের উপর এর বিপরীত বাধ্যবাধকতা আরোপিত হয়েছে। এটি নারীদের দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে চাহনিকে নিষিদ্ধ করেছে এবং রক্তের সর্ম্পক কিংবা বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া তাদের স্পর্শ করাকে হারাম করেছে।
পুরুষদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা ও সম্মান প্রদান করতেই এটি করা হয়েছে।
সংস্কৃতির এই নিয়মগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য আমাদের সংস্কৃতির বাইরে এটি উন্মুক্ত নয়।
পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে হ্যান্ডশেক করতে অস্বীকৃতি জানানোকে অপমানের একটি বিশাল চিহ্ন হিসেবে দেখা হয়। অন্যদিকে, মুসলিম বিশ্বে বিপরীত লিঙ্গের অপরিচিতদের স্পর্শ করাকে অতিশয় অসম্মানজনক এবং ইসলামি আইনের লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হয়।
এই নিয়মটি সত্যিই বিভিন্ন উপায়ে মিশ্রিত করা যায় না। পরিশেষে আবারো বলছি, পার্লামেন্ট সদস্য জো লুক্সটনের সঙ্গে হাত মেলাতে তাদের অস্বীকৃতি অপমানজনক নয়, বরং অতিরিক্ত সম্মানপ্রদর্শন করা হয়েছে।
লেখক গোলরিজ গাহরামান। তিনি নিউজিল্যান্ডের গ্রিন পার্টির একজন এমপি। তার ৯ বছর বয়সে তার পরিবার ইরান ছেড়ে চলে যায় এবং নিউজিল্যান্ডে রাজনৈতিক শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়।
নিউজ হাব অবলম্বনে
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন