শীর্ষনিউজ২৪ ডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের। নারায়ণগঞ্জে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্য কোচিং সেন্টার খুলে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা করে নেয়ার তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে। রোববার ওই কোচিং বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে ‘পুলিশ নিয়োগে কোচিং সেন্টার, ভর্তি ফি ৪ লাখ!’ শিরোনামে শনিবার রাতে শীর্ষনিউজে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষনিজের সংবাদের পর রোববার স্থানীয় কিছু সংবাদপত্রেও ওই খবরটি ছাপা হয়। এর পর রোববার সকালে দুপুর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানাতে রাজি হননি পুলিশের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি শাহীন মন্ডল জানান, ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এর বিস্তারিত আমি জানি না।
পুলিশ সুপার মঈনুল হক শীর্ষনিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে কাজ করছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাইতুল্লাহ মসজিদের পূর্বপাশে গালাক্সি স্কুলের ভেতরে প্রতাশা নামে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রদানের বিষয়ে একটি কোচিং সেন্টার খুলেন পুলিশের ঢাকার বিশেষ শাখার (এসবি) সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) শাহাবুদ্দিন এবং বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাপা নেতা দেলোয়ার প্রধান। এখানে ২০ থেকে ২৫ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। সকলকে পুলিশে চাকরি দেয়া হবে বলে, পুলিশে যোগদানের ব্যাপারে ট্রেনিং করানো হয় এখানে। তাদেরকে চাকরি দেয়ার লোভ দেখিয়ে কোচিংয়ের ভর্তি ফি বাবদ ৪ লাখ টাকা করে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ভর্তি হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন মলি আক্তার, বিজয়, মোঃ গিয়াস, মোস্তাকিম, সোহাগ, রোবেল, মনির, স্বদেশ, সোহাদ হাসানসহ ২০ থেকে ২৫ জন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলায় এ বছর পুলিশের পুরুষ কনস্টেবল পদে ১৭৪ জন ও নারী কনস্টেবল পদে ৩১ জন নিয়োগ পাবে। সে লক্ষ্যে ইতিপূর্বে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। যাতে শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি ও সমমান হতে হবে। এছাড়া যুবক-যুবতীদের বয়স ১৮-২০ এর মধ্যে হতে হবে। শারীরিক উচ্চতা যুবকদের ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ও যুবতীদের ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী কোটায় শারীরিক উচ্চতা কিছুটা শিথিল রয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল অবধি ফতুল্লার পুলিশ লাইন্সের মাঠে প্রথম ধাপে শারীরিক ফিটনেসের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষায় পুরুষ কনস্টেবল পদে সহস্রাধিক যুবক ও নারী কনস্টেবল পদে শতাধিক প্রার্থী অংশ নেন। বিকেল ৩টা পর্যন্ত শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষায় সর্বমোট ৫৯৫ জন উত্তীর্ণ হন। যার মধ্যে ৫৬২ জন যুবক ও ৩৩ জন যুবতী। তবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আরো কয়েকজন উত্তীর্ণ হন।
জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘আমি চাই যারা নারায়ণগঞ্জের সন্তান তারা পুলিশের চাকরিতে আসুক। আমার কাছে কোনও রাজনৈতিক তদবির নেই। কোনও ধরনের দালাল বা কোনও ধরনের চাপ আমি অনুভব করছি না। কারণ সম্মানীত ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশনাগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করার জন্য চেষ্টা করছি। ইন্সপেক্টর জেনারেল বলেছেন- এটা স্বচ্ছতার মাধ্যমে যেন হয়। আমরা সেই স্বচ্ছতার বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। এখানে আমরা শুধু একা করছি না। দুই জেলা থেকে দুইজন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার এখানে আছেন। একজন গাজীপুর থেকে একজন ঢাকা থেকে এসেছেন। আরো দুইজন সিভিল সার্জনের ডাক্তার আছেন। অন্য জেলার হলে ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই হবে। যদি দেখা যায় তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা মানুষ না, তখন এমনিতেই তারা বাদ পরে যাবে। এখানে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই।’
‘পুলিশ নিয়োগে কোচিং সেন্টার, ভর্তি ফি ৪ লাখ!’ শিরোনামে শনিবার প্রকাশিত সংবাদটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন-click here
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন