১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট। প্রথম বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে পাকিস্তান। মোট ২২৩ রানের টার্গেট দিয়ে বল হাতে পাকিস্তানকে মাত্র ১৬১ রানে অল আউট করে দিল টাইগাররা। সেই থেকে জয়ের শুরু। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার গত ম্যাচে সব কিছুই ছিল; ছিল টান টান উত্তেজনা, নাটকীয়তা, ঠিক ভুল অনেক সিদ্ধান্ত ও প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে ওঠা মাহমুদুল্লাহর ছক্কা হাঁকানো জয়। আজ চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশের এরকমই সেরা কিছু জয় সম্পর্কে।
প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ
২০০০ সালে প্রথমবারের মতো সাদা জার্সিতে মাঠে নামে বাংলাদেশ। তবে ২০০৫ সালে টেস্টে প্রথম জয় পায় বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটায় ২২৬ রানে জিতে টাইগাররা। পরের ম্যাচটি ড্র হয়।
ভারতকে দিয়েই শুরু
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে ফেলে দেওয়ার দুঃখ আজও ভারত ভুলতে পারে নি। আর এই কাজটি এক রকম বলে কয়ে সাধন করেছিল বাংলাদেশের টাইগারেরা। ওই ম্যাচের মাধ্যমেই তামিম, সাকিব ও মুশফিকের স্বরুপ চিনতে পেরেছিল ক্রিকেট বিশ্ব।
আশরাফুলে ক্যারিবিয়া বধ
২০০৭ সালের টি২০ বিশ্ব কাঁপে বাংলাদেশের বিপরীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওই ম্যাচে আশরাফুলে ২৭ বলে ৬১ রানের তুলনা মেলা ভার। এই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিয়ে পরের রাউন্ডের টিকিট পেয়েছিল বাংলাদেশ।
বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট ও সিরিজ জয়
টেস্ট ক্রিকেটে পরের জয়টা পেতে দীর্ঘ ৪ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। অবশ্য সেই বার সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হারায় টাইগাররা। একটিতে ৯৫ রানে, আরেকটিতে ৪ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ।
প্রথম তিনশ তাড়া করে জয়
২০০৯ সালের বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের ম্যাচ। চার্লস কভেন্ট্রির ১৯৪ রানের জবাবে কথা বলেছিল তামিমের ব্যাট। এত চাপের মধ্যেও ১৫৪ রান! জিম্বাবুয়ের ৩১২ রান তাড়া করে জিতে যায় বাংলাদেশ। সেই বারে প্রথম তিনশ রানের বেশি টার্গেট তাড়া করে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল।
নিউজিল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ
২০১০ সালের বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড সিরিজের এক দিনের শেষ ম্যাচ। বাংলাদেশ অবশ্য সিরিজে ৩-০ তে এগিয়ে ছিল। নিউজিল্যন্ডের জিততে দরকার ৫ বলে ৪ রান। উইকেট বাকি ১! রুবেলের দুর্দান্ত বোলিং এ উপড়ে গেল উইকেট। সেই সঙ্গে নিউজিল্যান্ডকে ধবল ধোলাই করলো বাংলাদেশ।
এশিয়া কাপে লঙ্কা বধ
২০১২ এশিয়া কাপের বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি আমাদের কাছে ছিল স্বপ্নের মত। শ্রীলঙ্কা ২৩২ রানের টার্গেট দিয়েছিল। বৃষ্টি বিঘ্নিত ওই ম্যাচটি ৫ উইকেটে জিতে যায় বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে যায়। ওই দিনের টাইগারদের উৎযাপন আজও মনে রেখেছে বাংলাদেশের লাখো জনতা।
বিশ্বকাপে ইংলিশদের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় জয়
২০১৫ বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশর মুখোমুখি ইংল্যান্ড। ম্যাচটি জিতলেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের দায়িত্বশীল ১০৩ ও ৮৯ রানের ইনিংসের পর দলীয় রান দাঁড়ালো ৭ উইকেটে ২৭৫। মাশরাফি ও রুবেলের দুর্দান্ত বোলিং এ ব্রিটিশ শিবেরে তখন শোকের মাতম। কোন ব্যাটসম্যানই বাংলাদেশের বোলিং এর সামনে দাড়াতেই পারলেন না। বাটলার আর ওকস ৬৫ ও ৪২ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জয়কে কেবল দীর্ঘায়িত করছিলেন। ওই ম্যাচে ২৬০ রানে অল আউট হল ইংল্যান্ড। আর বাংলাদেশ কোয়ালিফাই করলো বহুল কাঙ্ক্ষিত কোয়ার্টার ফাইনাল।
ঘরের মাঠে ইংলিশ-অজি বধ
২০১৬ সালে ইংল্যান্ড আসে বাংলাদেশে। প্রথম টেস্টটা জয়ের কাছে গিয়েও হেরে যায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। টেস্টে ইংল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো ১০৮ রানের বড় ব্যবধানে হারায় মুশফিক বাহিনী। ২০১৭ তে অস্ট্রেলিয়াকেও টেস্টে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেবার বাংলাদেশে খেলতে আসতে চাচ্ছিল না অস্ট্রেলিয়া। অনেক তাচ্চছিল্যপূর্ণ মন্তব্য করেছিল তারা। বাংলাদেশের টাইগাররা বরাবরের মতই ব্যাটে বলে জবাব দিয়েছিল।
লঙ্কায় বাঘের গর্জন
চলতি বছরের টি ২০ আসরের নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কাকে রীতিমত বধ করেছে বাংলাদেশ। দেশটির বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচেই বাংলাদেশ জিতেছে। প্রথম ম্যাচে ২১৪ রানের বিশাল টার্গেটে পড়েও ৫ উইকেটে বাংলাদেশের টাইগাররা জয়লাভ করে। এর পরের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেসহের টাইগাররা লঙ্কানদের বিদ্রূপ ও আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের যথার্থ প্রতিশোধ নিয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন