রাজধানীসহ দেশের খুচরো বাজারে ঢুকে গেছে, চীনে তৈরি প্লাস্টিকের চাল। মিনিকেট, নাজিরশাইল, কাটারিভোগ আর বাঁশমতির মতো চেনা-পরিচিত নামেই তা বিক্রি বিক্রি হচ্ছে খোলা বাজারে। প্লাস্টিকের এই চাল হাঁড়িতে ফুটে ভাতও হবে। কিন্তু জানতেও পারবেন না, আপনি যে চালের ভাত খেলেন সেটা কৃত্রিম চাল, আসলে প্লাস্টিক ছাড়া কিছু নয়। ভারত, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের পর বাংলাদেশের বাজারেও চীনে তৈরি প্লাস্টিকে চাল ঢুকে পড়েছে। সম্প্রতি খোলবাজার থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে কাটারিভোগ নামে প্লাস্টিক চাল কিনে আনার অভিজ্ঞতা ফেসবুক পোস্টে ভিডিও’র মাধ্যমে তুলে ধরেছেন লায়লা ফারজানা নামের এক গৃহিনী।
রাজধানীর শান্তিনগর বাজার থেকে কাটারিভোগ নামে কিনে আনা চাল সম্পর্কে ভিডিওতে তিনি বলেন, দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি কৃত্রিম চাল। প্লাস্টিকের এই কৃত্রিম চাল হাঁড়িতে ফুটালে যে ভাত হয়ে সেগুলোও দেখতে হুবহু স্বাভাবিক ভাতের মতোই। চুলোর পাশে শুকনো ভাতের মাড় দেখে তা হাতে নেওয়ার পর লায়লা ফারজানা বুঝতে পারেন, তার হাতে প্লাস্টিকের চাল ধরিয়ে দিয়েছে দোকানি। কারণ ভাতের মার শুকিয়ে তা পলিথিনে রূপান্তরিত হয়েছে।
এর আগে ভারত ও ভিয়েতনামের বাজারে প্লাস্টিকের চাল খুজেঁ পাওয়া গেলেও ঢাকার বাজারেও যে প্লাস্টিকের চাল ঢুকে গেছে, এই প্রথম তার প্রমাণ পাওয়া গেলো। তবে কোন প্রক্রিয়ায় চীন থেকে প্লাস্টিকের চাল বাংলাদেশের বাজারে ঢুকছে, তা নিশি
এমনকি যারা চালের কারবারি, দিনরাত চাল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন, তারাও ধরতে পারছেন না এ চালাকি। আর পাঁচটা চায়নিজ জিনিস যেমন সস্তায় মেলে, তেমনি সস্তায় চাল কিনে ব্যাপক মুনাফা করতে সেই নকল চালই বিক্রির দিকে ঝুঁকছেন ব্যবসায়ীরা।
এর আগে নকল ডিম বানিয়েও প্রচুর পয়সা কামিয়ে নিয়েছিল চীন। বাইরে থেকে দেখে, এমনকি ডিম ফাটিয়েও কারও ধরার ক্ষমতা হয়নি, সে ডিমও নকল। না হাঁসের, না মুরগির। সেই ভেজালের তালিকায় এবার নব্য সংযোজন প্লাস্টিকের চাল। বর্তমানে ভারতের বাজারে ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে এই সস্তার চাল। সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামেও যাচ্ছে। নজর আছে বাংলাদেশের দিকেও। সস্তায় দিচ্ছে আর মুনাফা বেশি বলে নকল চালেও চালের বাজার গ্রাস করে নিচ্ছে চীন।
প্লাস্টিকের চাল সম্পর্ক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সাবধান করে জানিয়েছেন, এই চাল স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূণ। প্লাস্টিকে আছে ফিলেইটস নামক উপাদান, যা হরমোন এবং প্রজনন ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে থাকে।প্লাস্টিকের চাল থেলে পাকস্থলিতে তৈরি হতে পারে ক্ষত ও ক্যানসার। ধ্বংশ করে দিতে পারে দেহের স্বাভাবিক পরিপাক প্রণালি।
চাল প্লাস্টিকের কিনা তা যাচাই করার কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্লাসটিকের চাল চেনার জন্য নিচের সতর্কতাগুলো অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন।
১. একমুঠো চাল নিয়ে তাতে দেশলাই বা গ্যাসলাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিন। যদি প্লাস্টিকের চাল হয়, তবে প্লাস্টিক পোড়া গন্ধ বের হবে।
২. চাল সেদ্ধ করে একটি বোতলে ভরে দু-তিন দিন রেখে দিন। প্লাস্টিকের হলে ওই সেদ্ধ চালে ফাঙ্গাস আক্রমণ করবে না।
৩. কিছু চালের মধ্যে গরম তেল ঢালুন। প্লাস্টিকের হলে ওই চাল গলে যাবে।
৪. পানি ভর্তি একটি বোতলের মধ্যে এক টেবিল চামচ চাল দিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। যদি চাল পানির ওপর ভাসতে দেখা যায়, তবে সেটি প্লাস্টিকের চাল। আসল চাল পানিতে ভাসে না।
৫. সেদ্ধ করার সময়ও ভুয়া চাল শনাক্ত করা যায়। চাল যদি প্লাস্টিকের তৈরি হয়, তবে সেদ্ধ করার সময় পাত্রের মধ্যে মোটা স্তর পড়ে যাবে।
ক্ষতিকর হতে পারে। এটা ক্যানসার বা জন্মগত ত্রুটির কারণ হতে পারে। নিয়মিত খেলে প্রাণসংশয় হতে পারে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন