আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময়ে দেশে দুর্ভিক্ষ হলেও সবাই তা ভুলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে দেশে ১৯৭৬ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। এই কথা আজকে কেউ বলে না। সবাই তা ভুলে গিয়েছে। কেউ বলে না, সেদিন রাস্তায় কত মানুষ মরে পড়ে ছিল। আমরা দেখেছি কীভাবে মানুষ আর কুকুর ডাস্টবিনে পড়ে থাকা রুটি নিয়ে কাড়াকাড়ি করেছে। অমর্ত্য সেন বলেছেন, এই দুর্ভিক্ষ ছিল মানবসৃষ্ট, অর্থাৎ তৎকালীন সরকারের সৃষ্ট।’
বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ক্যারেক্টার এটা। তারা প্রত্যেকবার ইলেকশন করেই এসেছে। ১৯৭৩ সালে ক্ষমতায় এসেছে। ব্যর্থ হয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। শুধু আমরা বলছি না, বিশ্ব বলেছে— এই সরকার স্বৈরাচার। লোভ, লালসা, লুট ছাড়া তারা কিছু চেনে না— এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সেদিন সিপিডি বলেছে, এ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। একটি বিকলাঙ্গ ব্যাংকিং ব্যবস্থা তৈরি হয়ে গেছে। মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। তাহলে তারা কিসের রোল মডেল? তারা মিথ্যা কথা বলার রোল মডেল, মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করার রোল মডেল।’
কোটা সংস্কার আন্দোলন সফল হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সংসদে রাগ করে বলে দিয়েছেন, যাও কোটা বাতিল করে দিলাম। তিনি কীভাবে বাতিল করেন? এটা তিনি পারেন না। এটা আদালতে গেলে আবার আটকানো হবে। যার কারণে এখন পর্যন্ত গেজেট হয়নি। অন্য কোনও ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। বরং যারা আন্দোলন করেছে, তাদের নামে অজ্ঞাতনামা মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে চোখ বেঁধে গোয়েন্দা তুলে নিয়ে গেছে। ছাত্রদের প্রতিবাদের মুখে তাদেরকে আবার ফেরত দিতে হয়েছে।’
সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও সাজানো মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে নীলনকশা, তার মাধ্যমেই তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একজন সাধারণ মানুষও যে বিচারটা পান, তা খালেদা জিয়া পাননি। কারও পাঁচ বছরের সাজা হলে আপিল করার সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে যান। কিন্তু খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বোধহয় সিদ্ধান্তই ছিল, তাকে জামিন দেওয়া যাবে না। শুধু হাইকোর্ট নয়, সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বসে তারা জামিন প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করলেন।’
২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেখানেও আওয়ামী লীগের নীলনকশা ছিল। তারাই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি করেছিল। শুধু বিএনপি না, সব বিরোধী দলই নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে সরে আসে। এরশাদ সাহেবও তো নির্বাচনে যেতে চাননি। পরে তাকে গানপয়েন্টের মুখে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করানো হয়েছে। ওই সময় সব বিরোধী দলই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তুলে দেওয়ার কারণে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন