বরগুনার আমতলীতে ওরস মাহফিলে চেয়ারম্যানকে প্রধান অতিথি না করায় মাহফিল কমিটির সভাপতিকে কুপিয়েছে চেয়ারম্যানের বাহিনী। এ সময় তারা ওই সভাপতিকে পিটিয়ে দুই পা ও মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।পরে স্থানীয়রা আহত যুবককে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি প্রেরণ করেছেন।
আহত রিয়াজ মৃধা (৩০) তক্তাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও গত ১৬ এপ্রিল কাদেরিয়া তরিকার ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত ওরস মাহফিলের সভাপতি।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামে ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দফাদার ব্রিজসংলগ্ন দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে গত ১৬ এপ্রিল কাদেরিয়া তরিকার ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ওই ওরস মাহফিলে হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলামকে প্রধান অতিথি না করে তার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিককে প্রধান অতিথি করা হয়।এতে ক্ষিপ্ত হয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধা ও তার লোকজন।
এ ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুরে উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের বিশ্বাস বাড়ির সামনে ওরস মাহফিল কমিটির পরিচালক মো. রিয়াজ মৃধার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে।
পরে চেয়ারম্যানের বাহিনীর তুহিন মৃধা, সালাউদ্দিন মৃধা, রিন্টু মৃধা, সফিউল মোল্লা, ইব্রাহিম মৃধা, শামীম মৃধা, বাবু হাওলাদার ও মোকলেস মৃধাসহ ১০-১৫ জন তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা টাকা ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রিয়াজ মৃধাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সংকটাবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থন পরিদর্শন করে এবং মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিঠুন সরকার বলেন, আহত রিয়াজ মৃধার বাম পায়ের হাঁটুর বাটি, ডান পায়ের হাঁটুর নিচে (নলা) ও মেরুদণ্ড ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ভেঙে দেয়া।
তিনি আরও বলেন, তার সারা শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সেকান্দার খান, আল আমিন খান, নান্নু হাওলাদার ও মহসীন মিয়া বলেন, রিয়াজ মৃধার মোটর সাইকেল থামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। পরে মোটরসাইকেল ও তার সঙ্গে থাকা সবকিছু নিয়ে গেছে। আমরা তাকে (রিয়াজ মৃধা) রক্ষায় এগিয়ে গেলে আমাদেরকেও মারধর করেছে।
আহত রিয়াজ মৃধার স্ত্রী শাহানাজ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম মৃধাকে ওরস মাহফিলে প্রধান অতিথি না করায় আমার স্বামীকে তার (চেয়ারম্যান) লোকজন কুপিয়ে ও পিটিয়ে দুই পা ও মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম মৃধার সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
আমতলী থানার এসআই শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মো. সহিদ উল্যাহ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন