গত এক সপ্তাহে সরব হয়েছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারা। অন্যদিকে, বিএনপির সিনিয়র নেতারা যেন ডুব দিয়েছেন। বিএনপিতে কথা বলেছেন মাত্র দুইজন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সিনিয়র মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুধু কথা বলছেন। এতদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রচার সম্পাদক হাসান মাহমুদ কিংবা যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের বিপরীতে এই দুই নেতা ‘চলন সই’ ছিলেন, কিন্তু আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদের মতো জাতীয় নেতাদের কাছে তারা লিলিপুট বটেই। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইদানীং চুপসে গেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তাঁর বক্তব্য শুধু নির্বাচনের ব্যাপারেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার যেন বোবা হয়ে আছেন। ফলে, রাজনীতির মাঠে এক অসম প্রতিযোগিতায় বিএনপি আরও কোণঠাসা। বিএনপির মহাসচিবও দলের সিনিয়র নেতাদের নির্লিপ্ততায় উদ্বিগ্ন। তিনি সিনিয়র নেতাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের মেসি, রোনালদো তো মাঠে, আপনারা কি নামবেন নাকি আমরা ওয়াকওভার দেবো?
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য এবং শিল্পমন্ত্রী তাঁর মৌনব্রত ভেঙেছেন। মৌনব্রত ভেঙেই তিনি তার পরিচয় চিনিয়েছেন। আওয়ামী লীগে তিনিই প্রথম বলেছেন যে, ‘বিএনপি পালাবার পথ খুঁজছে। নির্বাচনে হারার ভয়ে তারা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছে।’
প্রবীণ এই নেতার বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেওয়ার মতো প্রজ্ঞাবান কেউ বিএনপিতে পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আমুর মতো নেতার জবাব রিজভীর দেওয়া শুধু বেমানান নয় হাস্যকরও।
এই সপ্তাহে রাজনীতির মাঠে দ্যুতি ছড়িয়েছেন, ৬৯ এর তুখোড় ছাত্র নেতা তোফায়েল আহমেদ। তিনিই খুলনার নির্বাচনের পর বিএনপির বিরুদ্ধে প্রথম মুখ খোলেন। বিএনপিকে মিথ্যেবাদী দল হিসবে আখ্যায়িত করেন।
বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা মনে করেন, ‘নির্বাচনের আগে এসব নেতারা যখন মাঠে, তখন বুঝতে হবে, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ।’ আওয়ামী লীগের কর্মীরাও মনে করেন, ‘এই দুই জাতীয় নেতা মাঠে নামলে কর্মীরাও উজ্জীবিত হয়, তারা সাহস পায়।’ আওয়ামী লীগের একজন মাঠকর্মী বলছিলেন, ‘হাইব্রিডদের বক্তৃতা শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম, এখন লিডারদের বক্তব্যে চাঙ্গা হচ্ছি।’
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনার আহ্বানেই দলের এই সিনিয়র নেতারা মাঠে নেমেছেন। প্রধানমন্ত্রীও তাদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় আলাপ করছেন। হঠাৎই রাজনীতির দৃশ্যপট পাল্টে গেছে, আওয়ামী লীগ যেন এক সুখী পরিবার। অন্যদিকে বিএনপিতে যেন অবিশ্বাস, দ্বন্দ্ব।
আওয়ামী লীগের গালিভারদের পাশে বিএনপির ক্রিয়াশীল নেতারা যেন সত্যিই লিলিপুট। অক্টোবর থেকে নির্বাচন, তার আগে আওয়ামী লীগের মেসি রোনালদোদের সঙ্গে লড়ার জন্য বিএনপির সেরকম স্ট্রাইকার কই?
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন