নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের ৩৬ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই আওয়ামী লীগ নেতা চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে গোপনে মজুদ করে রেখেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৬ জুন) ঈদের দিন রাতে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার আবুল বাশার টুকুর কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে এ চাল উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে গরিব ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল ঈদের আগেই বিতরণ করে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মজুদ করা রাখা হয়েছিল। পরে তা জানাজানি হয়ে গেলে এলাকাবাসী ক্ষুব্দ হয়ে ওই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি ঘেরাও করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ৩৬ বস্তা চাল উদ্ধার করে তা কায়েতপাড়া ইউনিয়ন সচিব রিয়াজ উদ্দিনের জিম্মায় ইউনিয়ন পরিষদে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল জানান, ভিজিএফের চাল ইউনিয়ন পরিষদ হতে মেম্বারদের মাধ্যমে প্রতিটা ওয়ার্ডে বিতরণ করা হয়। কিন্তু আমার ওয়ার্ডের চাউল আমি না পেয়ে কিভাবে আবুল বাশার টুকু পেল তা আমার জানা নেই। চাল উদ্ধার হওয়ার পর আমি বিষয়টি জানতে পারি।
এদিকে এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা বলেন, গরিবদের মাঝে চাল বিতরণ না করে তা মজুদ করে রাখা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এর সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যতই প্রভাবশালী নেতা হোক না কেনো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান চাল উদ্ধারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় চনপাড়া পুলিশ ফাড়িতে একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, চাউল উদ্ধারের ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সচিব ও ট্রাক অফিসারকে শোকজ করা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাশার টুকু বলেন, কায়েতপাড়ার ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলেক আমাকে জানায় স্থানীয় মেম্বার আবুলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না । তাই তিনি আমাকে চাউলগুলো বিতরণ করার জন্য আমার কাছে পাঠান। আমি নিজেও আবুল মেম্বারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। উদ্ধারকৃত চাউল আমার কাছেই ছিলো। এখন আমি বেকায়দায় পড়ে গেছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন