সমতা-ন্যায্যতা-মানবাধিকারের প্রশ্নে আমরা পাকিস্তানিদর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি। যুদ্ধ করে এ দেশকে পাকিস্তানের দাসত্বমূলক নীতি থেকে মুক্ত করেছিলাম। প্রত্যাশা ছিল সব নাগরিক তার মর্যাদা নিয়ে নিরাপত্তার মধ্যেই ন্যায্য অধিকার নিয়ে বাঁচবে। এখানে ধর্ম-বর্ণের মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ থাকবে না, সব এক হয়ে, মানবাধিকার নিয়েই বসবাস করব। কিন্তু স্বাধীনতার প্রায় পঞ্চাশ বছর হতে চললেও মানুষ তার কতটুকু স্বাধীনতা নিয়ে চলতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। প্রশ্ন হচ্ছে সব মানুষ নিরাপদে নিশ্চিতে বসবাস করতে পারে কিনা। লজ্জাজনক হলেও বলতে হচ্ছে, আজকে আমার দেশে নারী নির্যাতন হচ্ছে, শিশু নির্যাতন হয়। সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে। এমনটি তো মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল না। এমন মন্তব্য করেছেন বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনাপ্রধান লে. জে. (অব.) এম. হারুন-অর-রশিদ।
আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখন কি পাকিস্তানিরা অত্যাচার করেন? নাকি ভারত এসেছে আমাদের এখানে মানুষকে অত্যাচার করতে? কিংবা ব্রিটিশরা? আমার ছেলে বা মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন যদি মানুষের উপর অত্যাচার-নির্যাতন করে সেখানে স্বাধীনতার মূল্য কোথায়? আমাদের বিচার ব্যবস্থা বা প্রশাসন মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘণের এসব ঘটনা বন্ধ করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, পচাত্তরে জাতির জনককে হত্যার পর যে প্রশাসন ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল তা ছিল আমাদের আদর্শবিমুখ। সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী একটি আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু হয়েছিল, যারা স্বীকৃত অপরাধী তাদেরকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করা হয়েছিল। মন্ত্রীও বানানো হলো। গাড়িতে স্বাধীন দেশের পতাকা উড়তে দেওয়া হলো। জামায়াত, নেজামে ইসলামী, মুসলিম লীগ যে সমস্ত ধর্মীয় সংগঠন ছিল তাদের প্রতিষ্ঠিত করা হলো। ফলে কোনো অপরাধী যখন ক্ষমতায় থাকে তখন অপরাধীর বিচার হয় না। এ যে বিচারহীনতার একটা সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল, সেটা তো এখনো চলমান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন