প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় এবং এর পেছনে যদি প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বুধবার (২০ জুন) গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই নির্বাচনে সমন্বয় কমিটির বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
গত ১৫ মে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রশাসনের ভূমিকা ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ছিল- সাংবাদিকদের এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন সিইসি।
ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী আজম সভার সভাপতিত্ব করেন। এতে সিইসি ছাড়াও অংশ নেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। সভায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য সংস্থা অংশ নেয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার আশ্বাস দিয়ে সিইসি বলেন, আইন শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ মত প্রকাশ করেছেন সভায়। তারা ২৬ জুন সুষ্ঠু ভোটের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
সম্পতি খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল- সাংবাদিকদের এমন মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সিইসি বলেন, ‘প্রশাসন নির্বাচন “স্টাফিং” (ভোট জালিয়াতি) করেছে- এই বক্তব্য আমি প্রত্যাখ্যান করি। প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে, নির্বাচন (গাজীপুর সিটি) সুষ্ঠু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কোনো কারণে নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বা প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নির্বাচনের দিন ভোটাররা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত-এমন উদ্বেগ নাকচ করে দিয়ে সিইসি বলেন, ‘গাজীপুর এত বড় সিটি। তফসিল ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত এখানে (গাজীপুর) কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আশা করছি, নির্বাচনের দিনও পরিবেশ ভালো থাকবে, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৬ জুন। গত সোমবার (১৮ জুন) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থীরা।
গত ১৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণের কথা ছিল। হাইকোর্টের আদেশে প্রথমে ভোট আটকে যাওয়া। পরে আপিল বিভাগ সেটি প্রত্যাহার করে নেন। ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন এবং ৫৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন, ১৯টি সংরক্ষিত আসনে ৮৪ জন নারী কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬।
গাজীপুর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারে ব্যয় করতে পারবেন ৩০ লাখ ও কাউন্সিলররা এলাকা ও ভোটারের পার্থক্য অনুসারে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করতে পারবেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোট আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গ কিলোমিটার। ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও নারী ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২৫। ভোটকক্ষ ২ হাজার ৭৬১টি।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন