আগামী অক্টোবরেই গঠিত হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগত প্রস্তুতির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়েও কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই, প্রধানমন্ত্রী বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেবেন এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি ছোট নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবেন।
একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বিগত ৫ বছরে মন্ত্রীদের পারফরম্যান্সকে প্রধান বিবেচনায় নেবেন। একাধিক সূত্র বলছে, জাতীয় সংসদে নেই এমন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রী হবার সম্ভাবনা খুবই কম।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার হবে সংবিধান অনুযায়ী, এখানে সংসদের বাইরে রাজনৈতিক দলের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা খুবই কম।’ তবে, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেছেন, ‘যারা সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় নির্বাচন করবে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাঁরা সংসদের বাইরে থাকলেও নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় তাদের দু/এক জনকে রাখা যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারটা হবে অনেকটা সর্বদলীয় আদলে। এটাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাবনা।’
নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপি থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. গওহর রিজভী বলেন, নির্বাচন যদি বিএনপির অংশ গ্রহণ করে, তাহলে এটা বিবেচনায় আসতেও পারে।’ প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ’২০ সদস্যের মন্ত্রিসভায় দুজন অনির্বাচিত প্রতিনিধি থাকতে পারেন।’ ড. গওহর রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী এটা তাঁর নিজস্ব চিন্তা ভাবনার ভিত্তিতে করবেন।’ তবে, গওহর রিজভীর সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের ধারণা ‘তাঁর ব্যক্তিগত মত’ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, নির্বাচনকালীন সরকার হবে আকারে ছোট। ২০ সদস্যের বেশি নয়। এই সরকারে আওয়ামী লীগের চার শীর্ষ নেতা যে থাকবেন তা নিশ্চিত। এরা হলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন এবং জাসদের হাসানুল হক ইনু নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন। জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান মন্ত্রীদের মধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন। এছাড়াও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু অথবা রুহুল আমিন হাওলাদার নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন। একটি সূত্র বলছে, নির্বাচনে থাকতে সংসদের বাইরে দলগুলো থেকে দু-একজনকে নির্বাচনী সরকারে রাখা হতে পারে। এটাই হতে পারে নির্বাচনকালীন সরকারের বড় চমক। হয়তো দেখা যাবে, অলি আহমেদ, কিংবা মির্জা ফখরুলের মতো বিরোধী দলের কেউ মন্ত্রিসভা অলংকৃত করলেন। সেটিই হয়তো হবে নির্বাচনের বড় চমক।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন