ব্যাংক খাতে নৈরাজ্য নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির একজন সংসদ সদস্য। জানতে চেয়েছেন, অর্থমন্ত্রী ব্যাংখ আর পুঁজিবাজারের ‘চোরদেরকে’ পাহারা দিয়ে যাবেন কি না।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় সুনামগঞ্জে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান অর্থমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজারে ধসের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় ক্ষোভ ঝাড়েন পীর ফজলুর। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কি একাই বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে যাবেন? আর অর্থমন্ত্রী ব্যাংক চোর, শেয়ার বাজার চোরদের পাহারা দিয়ে যাবেন?’
রিজার্ভ চুরির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি করে জাপা সংসদ সদস্য বলেন, ‘এই পবিত্র সংসদে দাঁড়িয়ে (অর্থমন্ত্রী) ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করবেন। তিনি সেটা করেন নাই। সংসদে কথা দিয়ে তিনি কথা রাখেননি। বাক্স ঢেকে রাখেন কেন? কাদের নাম আছে জাতি জানতে চায়।’
২০১০ সালে পুঁজিবাবাজে ধসের পর ইব্রাহিম খালেদের করা তদন্ত প্রতিবেদনও প্রকাশের দাবি জানান ফজলুর। বলেন, ‘সেই রিপোর্ট প্রকাশ করলেন না। কাদের স্বার্থে করেন না? কাদের স্বার্থে অর্থমন্ত্রী নিশ্চুপ হয়ে যান।’
ব্যাংক খাত নিয়ে প্রতিশ্রুত কমিশন না করায়ও সমালোচনায় মুখর হন জাতীয় পার্টির নেতা। বলেন, ‘বাজেট পেশের আগে তিনি বলেছিলেন, ব্যাংক খাতের জন্য কমিশন গঠন করবেন। পরদিন বললেন, তিনি করবেন না। কেন করবেন না? কমিশন করলে বের হয়ে আসত কারা ব্যাংক লুটপাটে জড়িত।’
‘ব্যাংকের টাকা যারা নিয়ে যায় তাদের নাম প্রকাশ হয় না। তাদের নাম বলতে লজ্জা কোথায়? কৃষক ঋণ নিলে মামলা হয় আর ব্যাংক লুটেরাদের নাম প্রকাশ হয় না।’
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের জন্য বিশেষ রাখারও সমালোচনা করেন ফজলুর। বলেন, ‘খেলাপি ঋণের নামে যে লুটপাট, সেই ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠন করতে বরাদ্দ রাখতেন। এ বছর কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। এই বছর অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব বাজেট থেকে ইক্যুইটি রি-ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড নামে ১৫০০ কোটি টাকা রেখেছেন। বাজেটে সরাসরি না এনে কৌশলে করেছেন।এটি হতে পারে না।’
‘কিছু মানুষ ঋণের নামে টাকা লুট করবে আর জনগণের করের টাকায় মূলধন সরবরাহ করা হবে, এটা হতে পারে না।’
আরও দুই সাংসদের সমালোচনা
জাতীয় পার্টির সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ না করার সমালোচনা করেন। বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী শুধু নীতিমালার কথা বলে পাঁচ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এমপিওভুক্ত করেননি।’
বিদ্যুৎ সংকট পুরোপুরি দূর না করতে না পারায়ও সরকারের সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির নেতা।
আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টির (জেপি) রুহুল আমিন বলেন, ‘শিক্ষকেরা আন্দোলন করেছেন এবং সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাজেট বরাদ্দের অভাবে এমপিওভুক্তি হয়নি।’
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন