যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারাতে হাত মিলিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন।
এর আগে বহুবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কোনোটা ধোপে টেকেনি। গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের তদন্তও ছিল নড়বড়ে। এবার মার্কিন বিচার বিভাগ হিলারির প্রচার শিবিরের তথ্য চুরির ঘটনায় ১২ রুশ গোয়েন্দাকে অভিযুক্ত করেছেন।
এতে ফাঁস হয়ে গেল ট্রাম্প ও পুতিনের আসল কুকীর্তি। তবুও সব লাজলজ্জা ভুলে বৈঠকে মুখোমুখি হচ্ছেন দুই নেতা। সোমবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
বিবিসি জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারির প্রচার শিবিরের কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের ঘটনায় ১২ রুশ গোয়েন্দাকে শুক্রবার অভিযুক্ত করেছে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রোসেনস্টেইন বলেন, অভিযুক্তরা তথ্য হাতিয়ে নিতে ই-মেইল ও ম্যালওয়্যার ব্যবহার করেন। হ্যাকাররা একটি স্টেট ইলেকশন বোর্ড ওয়েবসাইট থেকে ৫ লাখ ভোটারের তথ্য হাতিয়ে নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের এ পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই ১২ জনের বিরুদ্ধে সামরিক গোয়েন্দাগিরি বা হ্যাকিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ নেই। একে ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তারা।
২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারিকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। তাকে জেতাতে নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল বলে অভিযোগ ওঠার পর তার তদন্ত করছে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট।
রুশ গোয়েন্দাদের অভিযুক্ত করার ঘটনায় মূলত ট্রাম্প ও পুতিনের সব কারসাজি ধরা পড়ল। জানাজানি হয়ে গেল তাদের কুকীর্তি। তবুও নির্ধারিত দিনে তাদের বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। ক্রেমলিনও ওই বৈঠকের ব্যাপারে আশাবাদী।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপে মস্কো অভিযুক্ত হলেও পূর্বনির্ধারিত সময়েই দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক আয়োজনের সব প্রক্রিয়া গতিশীল রয়েছে।’
রাশিয়া বলছে, দু’নেতার বৈঠকে সদূরপ্রসারী ফল আশা করছে মস্কো। ক্রেমলিন মুখপাত্র ইউরি ইশাকভ বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে আলোচনার অংশীদার মনে করি। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খুবই খারাপ। আমরা এটাকে ভালো অবস্থানে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।’
রুশ গোয়েন্দাদের অভিযুক্ত করা ঘটনায় মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাকযুদ্ধ বেধে যেতে পারে। নির্বাচন নিয়ে রাশিয়ার খেলাকে আমেরিকার বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন অনেকে।
শুক্রবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসার মের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন ট্রাম্প বলেন, নির্বাচনে যোগসাজশের বিষয়ে আমি পুতিনের কাছে অবশ্যই জিজ্ঞাসা করব।
এদিকে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ই-মেইল হ্যাক করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ হ্যাকারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া, তোমরা কি শুনতে পাচ্ছ? আমি আশা করছি, হিলারি হারিয়ে যাওয়া ৩০ হাজার ব্যক্তিগত ই-মেইল খুঁজে পাবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এ কাজে তোমরা তোমাদের গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত হবে।’ খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন