মালিবাগ আবু জর গিফারী কলেজের পাশের জমিতে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ৪৫৬টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। জমিটির একপাশে রয়েছে এক যুগ পুরানো মালিবাগ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, যেখানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার মানুষ নামাজ পড়েন।
২০১৫ সালে প্রকল্পটির জন্য স্থাপত্য অধিদপ্তরের করা প্রাথমিক নকশায়ও মসজিদটির অস্তিত্ব ছিল। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকল্পটির জন্য যে নতুন নকশা তৈরি করা হয় তাতে মসজিদ সরিয়ে সেখানে রাস্তা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি হাজী নাসির উদ্দিন পরিবর্তন ডট কমকে বলেন, ‘সরকারি এ প্রকল্পের পরিকল্পনার অনেক আগে ২০০৬ সালে এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পের প্রাথমিক নকশায়ও এই মসজিদ রাখা হয়েছিল। কিন্তু নতুন নকশায় মসজিদ সরিয়ে রাস্তা বসানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এ সিদ্ধান্ত থেকে কর্তৃপক্ষকে সরে আসতে হবে।’
কমিটির সভাপতির ছেলে ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় ৪টি মসজিদ থাকার পরও আমরা মুসল্লিদের জায়গার সংকুলান করতে পারিনা। প্রায় একযুগ ধরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এখানে নামাজ পড়ছেন। হঠাৎ এখানে মসজিদ সরিয়ে রাস্তা বানানোর যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে এটা সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত। আমরা এ বিষয়ে সরকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করছি।’
এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা যোগাযোগ করেছিলাম। তারা দাবি করেছে নতুন নকশা থেকে মসজিদ বাদে দেওয়া হয়নি। পরে নকশার কোন জায়গায় মসজিদ রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তারা আমাদের তা দেখাতে পারেননি। তারা বলেছেন হয়তো কোন ভুল হয়েছে, আপনারা মানববন্ধন করেন, আমরা দেখছি কি করা যায়।’
কমিটির সহকারী ট্রেজারার মো. শামীম হোসেন পরিবর্তন ডট কমকে বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য এখানে আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে সে খুব ভাল সিদ্ধান্ত। কিন্তু এতগুলো বড় বড় বিল্ডিং, প্রায় ৪৫৬টা ফ্ল্যাট, সেখানে যারা বাস করবেন তাদেরও তো নামাজ পড়তে হবে। আমরা এখনই এই মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা দিতে পারিনা, সেখানে এইসব ফ্ল্যাটের লোকজনের নামাজ পড়ার জন্যও তো মসজিদ দরকার। তাই আমরা চাই যে আবাসনের পাশাপাশি এই মসজিদটাও অক্ষুণ্ন থাকুক।’
নকশা থেকে মসজিদ বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে মসজিদ প্রাঙ্গণে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। স্থানীয় হাজার হাজার মুসল্লি ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন। নামাজ শেষে পুরো প্রকল্পের জমির চারপাশ ঘিরে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন তারা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন