রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা শাখার পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সাধারণ সম্পাদক রমেল চাকমার মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা। তিনি বলেন, ‘রমেল যদি অপরাধী হয়ে থাকে আইনের মাধ্যমে তার বিচার হোক। কিন্তু তা করা হয়নি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা এর বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি ‘
শুক্রবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে রমেল চাকমার শেষকৃত্য সম্পন্নের সময় উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে নানিয়ারচরের বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্বহাতিমারা গ্রামে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রমেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমোদ খীসা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রমেল মারা যায়। পরে পুলিশ হেফাজতে লাশটি বুড়িঘাটে রাত ৮টায় পৌঁছায়। তখন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। পরে লাশটি বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার বাবুলের দোকানে লাশ রাখা হয়। পরে শুক্রবার সকালে লাশটি রমেলের গ্রামের বাড়ি পূর্বহাতিমারা নিয়ে দুপুরে দাহ করা হয়। সেখানে তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিল।
৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে বৃষ্টি থাকার কারণে লাশটি আর গ্রামে আনা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকালে তার তার গ্রামের বাড়ি পূর্বহাতিমারা নিয়ে দুপুরে পরিবারের কিছু সদস্য নিয়ে দাহ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।’
নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমরা ময়নাতদন্ত শেষে রমেল চাকমা লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার জন্য বুড়িঘাট পর্যন্ত নিয়ে যাই। কিন্তু প্রচুর বৃষ্টি থাকার কারণে আমরা তার গ্রামের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারিনি। তবে রমেল চাকমা লাশ যারা চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসে তাদের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে আমরা চলে আসি।’
এদিকে রমেল চাকমার মৃত্যুতে রাঙামাটি ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে আগামী রবিবার (২৩ এপ্রিল) রাঙামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ, মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে অবস্থান ধর্মঘট ও বুধবার (২৬ এপ্রিল) নানিয়ারচর বাজার বয়কটের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দুটি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল নানিয়ারচর বাজার থেকে রমেল চাকমাকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রমেল নিজেকে ট্রাকে অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করে। এদিকে আটকের পর নানিয়ারচর থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় রমেল চাকমা বুকে ব্যথা অনুভবের কথা জানান পুডলিশকে। ৬ এপ্রিল পুলিশ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বুধবার ১৯ এপ্রিল তিনি মারা যান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন