পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এক গৃহবধূকে তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় মামলা দায়েরের ৩ মাস পার হলেও আসামিদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করায় ওই গৃহবধূর পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) উপজেলার দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামের গৃহবধূ খাদিজা বেগমের স্বামী শাহাদাৎ হাওলাদারসহ তার পরিবার ওই গৃহবধূর কাছে যৌতুক দাবি করে। গৃহবধূর অসহায় পরিবার যৌতুক দিতে না পারায় স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন তার উপর শারীরিক নির্যাতন করে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়। মেয়ের উপর অত্যাচারের খবর শুনে গৃহবধূর বাবা হাবিবুর রহমান মীর, ভাই ইব্রাহিম মীর ও মা জয়নব বিবি ওই বাড়িতে গেলে তাদেরকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
এ ঘটনায় গৃহবধূ খাদিজা বেগমের মা জয়নব বিবি বাদী হয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি ইন্দুরকানী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জামাই শাহাদাৎ, তার বাবা আরব আলী, ভাই শাহজাহান হাওলাদার ও মা সেতারা বেগমকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা পরবর্তী ইন্দুরকানী থানা পুলিশ একজন আসামিকে গ্রেফতার করলেও (বর্তমানে জামিনে রয়েছে) প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেফতার করছে পারছে না।
আহত গৃহবধূ খাদিজা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, যৌতুক দিতে না পারায় টাকার জন্য মেরে আমার হাত-পা ভেঙে দেয়। টাকার অভাবে ঠিকমত চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমার একমাত্র সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছে।
আসামিরা রাস্তাঘাটে ঘুরছে, মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের হুমকি দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ইন্দুরকানী থানার এসআই মোহাইমিনুল বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। গত দিনও (বুধবার) ওই এলাকায় গিয়েছিলাম। তাদের পাওয়া যায়নি। আমরা মোবাইলের মাধ্যমে অবস্থান জানার চেষ্টা করছি। তারা চট্টগ্রাম এলাকা গিয়েছে বলে শুনেছি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো বলেন, এ বিষয়ে ছেলে পক্ষ কোর্টে একটি মামলা করেছে। শুনেছি মেয়ের ভাই ছেলের (শাহাদাৎ) বাবার উপর হামলা করেছে। তার মায়ের সাথেও খারাপ আচরণ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি মামলার সাক্ষী দিয়ে অন্য জেলায় অবস্থান করছেন বলে থানা সূত্র জানিয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন