সিরাজগঞ্জে গর্ভবতী মায়েদের ভাতা প্রদান নিয়ে চলছে হরিলুট। স্থানীয় পৌরসভার কাউন্সিলররা প্রাথমিকভাবে এই গর্ভবতী মায়েদের তালিকা তৈরি করেন। আর সেখানেই হয়েছে ব্যাপক অনিয়ম।
তাদের তালিকায় দেখা যায়, কাউন্সিলরদের স্বজনসহ নাম রয়েছে স্বামী পরিত্যাক্তা, স্বামী মারা গেছেন অনেক আগে এমন অনেক নারী রয়েছেন চার সন্তানের মা।
এ নিয়ে ভাতা না পাওয়া মা আমলাপাড়া নদীর পাড়ের শরীফের স্ত্রী মলি আক্তার জানান, এই তালিকায় গর্ভবতী মায়েদের নাম বাদ দিয়ে কাউন্সিলররা নিজেদের পছন্দ মতো তাদের স্বজনদের নাম দিয়েছেন। যারা প্রকৃত গর্ভবতী তাদের নাম এই তালিকায় অধিকাংশই বাদ দেয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী সজীবের স্ত্রী মমতা খাতুন বলেন, আমরা অসচ্ছল পরিবার হলেও আমাদের নাম এই তালিকায় নেই। কিন্তু যাদের অর্থকরী আছে তাদের নাম রয়েছে এই তালিকায়।
জানতে চাইলে রিকশাচালক সাব্বিরের স্ত্রী নাদিরা বলেন, এই কার্ড নিতে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। আমারদের টাকাও নেই, তাই কার্ডও নেই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কার্ডের সিরয়াল অনুযায়ী ৫৬৭ নম্বরের গোশালার বাসিন্দা কৃষ্ণা রানীর স্বামী মারা গেছেন দেড় বছর আগে। কিন্তু তার নামেও কার্ড ইস্যু করেছেন এই এলাকার কাউন্সিলর আব্দুল আলীম। ফোনে তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
জানতে চাইলে মহিলা কাউন্সিলর মমতা বেগম বলেন, কার্ডগুলো গরীব দুস্থ গর্ভবতী মায়েদের বিতরণের জন্য বলা হয়েছে। তবে নিজেদের পরিবারেও তো দুস্থ অনেক মানুষই আছে। তাই তাদেরকেও কিছু কার্ড দেয়া হয়েছে। তবে আগামীতে এমন আর হবে না বলেও তিনি জানান।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কাউন্সিলর জানান, ২৭টি করে কার্ড পেয়েছেন প্রতি কাউন্সিলর। দুস্থ গর্ভবতী মায়েদের এই কার্ড দেয়ার কথা থাকলেও কেউ কেউ টাকা নিয়ে কার্ড দিয়েছেন বিভিন্ন মানুষকে।
তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা মহিলা অধিদফতরের কর্মকর্তা লায়লা আনজুমান জানান, সরজমিনে কার্ডধারীদের খোঁজ-খবর নেয়ার কথা। তবে জনবল কম থাকায় তা হয়ে উঠেনি। তবে নিয়মের কোথাও ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন