নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার কুঞ্জছায়া আবাসিক এলাকায় দুই পোশাক কর্মীকে নিজ বাসায় আটকে ১১ বখাটে মিলে রাতভর ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের কথা প্রচার করবে বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বখাটেরা ধর্ষিতাদের কাছ থেকে চাঁদাও আদায় করেছে।
শনিবার (২০ মে) দুই বখাটে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আল ইমরান খানের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দি দেয়া দুজন হল, তারেক ও বাছির।
বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বাংলানিউজকে বলেন, গণধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ১১ জনের সবাই বখাটে মাদকসেবী সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে বায়েজিদ থানায় একাধিক মামলা আছে।
ভাড়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিল-মিটিংয়েও তারা অংশ নেয় বলে স্বীকার করেন ওসি।
গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্ত করছেন বায়েজিদ বোস্তামি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ মঈন উদ্দীন।গ্রেফতার হওয়া তারেক ও বাছির
জিজ্ঞাসাবাদে এবং জবানবন্দিতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঈন উদ্দীন বাংলানিউজকে জানান, গত ১০ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুঞ্জছায়া আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কের একটি বাসায় গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার দুজনের একজনের বয়স ২০ বছর। আরেকজন তার দূরসম্পর্কের খালা। তিনিও পোশাক কর্মী এবং বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। তিনি ওই বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন।
ঘটনার রাতে বখাটে করম আলীর নেতৃত্বে একদল তরুণ ওই বাসায় হামলা চালায়। তারা বাসার মধ্যে অবৈধ কার্যকলাপ চলছে বলে অভিযোগ তুলে সেখানে ঢুকে পড়ে। এরপর ১১ জন মিলে পালাক্রমে রাতভর দুজনকে ধর্ষণ করে। এরপর তাদের অবৈধ কার্যকলাপ ও ধর্ষিত হওয়ার কথা বাইরে প্রচার করে দেবে বলে চাঁদা দাবি করে। তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় বখাটেরা। এরপর তারা চলে যায়।
পুলিশ পরিদর্শক মঈন জানান, ভোর রাতের দিকে ১১ বখাটে আবারও ওই বাসায় যায়। এসময় তারা আবারও পালাক্রমে দুজনকে ধর্ষণ করে। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
এই ঘটনার পর ১১ মে পোশাক কর্মী তরুণী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ প্রথমে মেহেদি ও রুবেল নামে দুজনকে আটক করে। এর মধ্যে মেহেদিকে প্রথম দফায় চারদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপর রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ শুক্রবার রাতে বাছির ও তারেককে আটক করে। শনিবার বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
সূত্রমতে, জবানবন্দিতে তারেক ও বাছির ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে। ধর্ষিতাদের বাসায় অবৈধ কার্যকলাপ চলছে বলে করম আলী তাদের ডেকে নেয় বলে জবানবন্দিতে তারা জানিয়েছে।
পরিদর্শক মঈন উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, তারা ১১ জন মিলে স্বেচ্ছায় এই পাশবিক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এজাহারভুক্ত দুজন এবং এজাহার বর্হিভূত দুজনসহ ১১ জনের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিল। বাকি সাতজনকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন