দিনমজুর বাবার সাথে কৃষি শ্রমিকের কাজ করে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে কামরুল ইসলাম। হাওরের প্রত্যন্ত গ্রাম ইটনার সড়কহাটি গ্রামের কামরুলের এ কৃতিত্ব আঁধার ঘরে আলোর রোশনাই ছড়িয়ে দিলেও তার উচ্চ শিক্ষায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় দারিদ্র।
ফল প্রকাশের পর কামরুলের ভবিষ্যৎ পড়ালেখা নিয়ে সংশয়ে পড়ে তার পরিবার। দু’বেলা দু’মুঠো আহারেরই যেখানে নিশ্চয়তা নেই, সেখানে কামরুলের কলেজে ভর্তি হয়ে দাঁড়ায় বিলাসিতার ব্যাপার। অর্থাভাবে হয়তো এখানেই থেমে যাবে তার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন, এমন আশঙ্কা পেয়ে বসে কামরুলকেও। কামরুলের ফিকে হয়ে যাওয়া উচ্চ শিক্ষার স্বপ্নটা এবার আর কোনো দুঃস্বপ্ন নয়।
কামরুলের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-সচিব তরফদার মো. আক্তার জামীল। কামরুলের কলেজে ভর্তি এবং বইপত্র কিনে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন মানবিক এই মানুষটি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার সকালে তরফদার মো. আক্তার জামীল কলেজে ভর্তির জন্য কামরুলের হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন। এছাড়া কামরুলের বইপত্র ও আবাসনের ব্যাপারেও তিনি আশ্বস্ত করেছেন। ফলে নতুন উদ্যমে লেখাপড়া শুরু করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কামরুল।
কলেজে ভর্তির টাকা পেয়ে দারুণ খুশি কামরুল ইসলাম। সে জানায়, কিশোরগঞ্জের সরকারি গুরুদয়াল কলেজে সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সেখানে ভর্তি শুরু হবে। ভর্তির টাকা হাতে পাওয়ায় মঙ্গলবারই সে কলেজে ভর্তি হবে।
এজন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-সচিব তরফদার মো. আক্তার জামীলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কামরুল বলেন, ‘ভালো রেজাল্ট করলেও কলেজে ভর্তি করার মতো সামর্থ্য ছিল না আমার পরিবারের। ভেবেছিলাম, আমার হয়তো আর লেখাপড়া করা হবে না। কিন্তু জামীল স্যারের উৎসাহ ও সহায়তায় আমি এখন আবার নতুন করে লেখাপড়া করার স্বপ্ন দেখছি। দোয়া করবেন, লেখাপড়া করে যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারি।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-সচিব তরফদার মো. আক্তার জামীল বলেন, ‘কামরুলের মতো মেধাবী ছাত্ররা যেন টাকার অভাবে ঝরে না পড়ে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার জন্য কিছু করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন